স্পোর্টস ডেস্ক।। দৃষ্টিনন্দন কাভার ড্রাইভে ধনাঞ্জয়াকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে স্বপ্নের তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ। নাজমুল হোসেন শান্তর প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি। হেলমেট খুলে ব্যাট তুললেন বাঁ-হাতি। ড্রেসিংরুমে সবাই দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানালেন তাকে। তামিম ইকবালের হাতছাড়া করা সেঞ্চুরি নাজমুলের মুঠোয়। ৭৮-এ পৌঁছার সঙ্গে সঙ্গে টেস্টে নিজের সর্বোচ্চ স্কোর করেছিলেন। সেটিতেই তৃপ্ত থেকে থেমে যাননি তিনে ব্যাট করতে নামা নাজমুল। প্রথমদিন শেষে তিনি অপরাজিত ১২৬ রানে। বাংলাদেশ ৩২০/২। সন্দেহাতীতভাবে পাল্লেকেলেতে প্রথম টেস্টের প্রথমদিনটা বাংলাদেশের। টস জিতে সবুজ উইকেটে ব্যাট করার জন্য যথেষ্ট সাহসের প্রয়োজন হয়। সেই সাহস দেখিয়েছেন মুমিনুল হক। অকুতোভয় অধিনায়কের অবদানও অনস্বীকার্য প্রথমদিনটা মনোহর করে তোলার জন্য। দিনশেষে মুমিনুলও অপরাজিত ৬৪ রানে। নাজমুলের সঙ্গে তার অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের জুটিই প্রথমদিনে বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ আধিপত্যের ভিত গড়ে দেয়। এমন সুখস্নাত দিনে আক্ষেপ শুধু তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি মিসের। নড়বড়ে নব্বইয়ের শিকার হওয়ার জন্য শুধু নিজেকেই দায়ী করতে পারেন তিনি।
এ বছরের শুরুতে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে রান না পাওয়া নাজমুল প্রচণ্ড চাপে ছিলেন। কাল পাল্লেকেলেতে তার পাল্লা খানিকটা ভারি হল দ্বিতীয় উইকেটে তামিমের সঙ্গে ১৪৪ এবং অধিনায়কের সঙ্গে তৃতীয় উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের পার্টনারশিপের সৌজন্যে। ২৮৮ বলে নাজমুলের অপরাজিত ১২৬ রানের শোভা বাড়ায় ১৪টি চার ও একটি ছয়। মুমিনুল ১৫০ বলে হার না-মানা ৬৪ রান করেন ছয়টি চারের সহায়তায়। ২৮ রানে নিরোশান ডিকভেলার পিচ্ছিল হাতে জীবন পাওয়া নাজমুল ৯০ থেকে ১০০-তে পৌঁছতে খেলেন ৩৮ বল। এখানেই পিছিয়ে পড়েন তামিম। ৯০ রানে তিনি ফেরেন স্লিপে ক্যাচ দিয়ে।
শ্রীলংকার সারাদিন কেটেছে ঘাম ঝরিয়ে। প্রথমদিন মাত্র দুটি উইকেট জমা পড়েছে তাদের ঝুলিতে। প্রথমটি দিনের দ্বিতীয় ওভারেই শূন্য রানে ফেরা ওপেনার সাইফ হাসানের। দ্বিতীয়টি তামিমের। প্রথমদিনের প্রথম ও দ্বিতীয় সেশনে যথাক্রমে ১০৬ ও ৯৪ রান তোলা বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ঘাম ঝরিয়ে ছেড়েছেন স্বাগতিক বোলারদের। সারাদিনে পাওয়া মাত্র দুটি উইকেট গেছে বাঁ-হাতি লংকান পেসার বিশ্ব ফার্নান্ডোর ঝুলিতে।
প্রথমদিনের নায়ক নাজমুলের ধারণা, আজ ও কাল ব্যাটিং করা আরও সহজ হবে। যথার্থই বলেছেন তিনি, ‘আমাদের কাজটা এখনও শেষ হয়নি।’ অসম্পূর্ণ কাজ বলতে তিনি বোঝাতে চাইছেন, স্কোর বোর্ডে রানের স্তূপ জমা করতে হবে। কেননা, চতুর্থ ও পঞ্চমদিন টার্ন পাওয়া যেতে পারে উইকেট থেকে। ২০০৩ সালে পেশোয়ার টেস্টে গোটাদিন ক্রিজে কাটিয়ে দিয়েছিলেন জাভেদ ওমর ও হাবিবুল বাশার। পাল্লেকেলেতে আজ দ্বিতীয়দিন দুই সেট ব্যাটসম্যান নাজমুল ও মুমিনুলও সারাদিন কাটিয়ে দিলে কী মনোহরই না দেখাবে স্কোর বোর্ড।