চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।। লকডাউনে দর্শনার্থীশূন্য চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় রাজত্ব করে বেড়াচ্ছে বাঘের শাবক জো বাইডেন। দিনভর চিড়িয়াখানায় এ প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটোছুটি করছে মা বাঘের পরিবর্তে মানুষের কাছে বেড়ে ওঠা সাড়ে পাঁচ মাস বয়সী এই বাঘ শাবক।
ঘড়ির কাঁটা তখন বিকেল ৩টা ছুঁই ছুঁই। সময় হয়েছে জো বাইডেনের বৈকালিক ভ্রমণের। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার অফিস কক্ষ থেকে রাজকীয় ভঙ্গিতে বের হয়ে আসে বাঘ্র শাবক। শুরু হয় তার মজার সব কাণ্ডকারখানা। কখনো দৌড়ে আবার কখনো গুটি গুটি পায়ে পুরো চিড়িয়াখানাজুড়ে তার ঘুরে বেড়ানো।চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, বাঘ শাবকটি আমাদের সঙ্গে থাকতে চাই। সে জন্য আমরা বাধ্য হয়ে কিছু সময়ের বের করে নিয়ে আসি।
দুষ্টুমিতেও কম যায় না এই বাঘের বাচ্চা। অন্যান্য পশুর খাঁচার সামনে গিয়ে তাদের ভয়ও দেখায়। তখন খাঁচায় আবদ্ধ পশুগুলোর ছুটোছুটি শুরু হয়। এভাবে এক খাঁচা থেকে আরেক খাঁচার সামনে গিয়ে চলে তার ভয় দেখানোর খেলা।চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বাঘের বাচ্চা পালনে সহায়তাকারী মাসুম হোসেন জানান, একে গোসল করানো, খাওয়াদাওয়া সবকিছু কাছের মানুষের মতো করে করছেন তিনি। জন্মের পরদিন থেকেই মা বাঘ পরী’র পরিবর্তে জো বাইডেন বেড়ে উঠছে চিড়িয়াখানার কিউরেটরের কাছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে কিনে আনা বাঘ দম্পতি রাজ-পরীর সংসারে গত বছরের ১৪ নভেম্বর ৩টি শাবক জন্ম নেয়। নিজের বাচ্চাদের দুধ পান করানো বন্ধ করে দেয় এই বাঘিনী। মারা যায় দুটি শাবকও। এরপরই তৃতীয় শাবক ‘জো বাইডেনকে’ বাঁচিয়ে রাখার সংগ্রাম শুরু করে চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ।প্রথম দিকে বাঘের বাচ্চাটিকে শুধু দুধ খেতে দেওয়া হলেও এখন প্রতিদিন দেড় কেজি করে মাংস দেওয়া হচ্ছে। তবে এ মাসেই শেষ হচ্ছে তার বাইরে ঘুরে বেড়ানো। ছয় মাস অতিক্রান্ত হলেই তাকে রেখে দেয়া হবে নির্ধারিত খাঁচায়।চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, এটাই তার লাস্ট মাস। এরপর তার দুধ খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। মানুষের সঙ্গে মেলামেশা এটাও আমরা বন্ধ করে দেব। ছয় মাস পরই তার মায়ের সঙ্গে থাকবে ‘জো বাইডেন’। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় বর্তমানে এই শাবকসহ মোট ৬টি বাঘ রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৮ সালে রাজ-পরী দম্পতির সংসারে জন্ম নিয়েছিল একটি বিরল প্রজাতির সাদা বাঘও।