আশিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি- তিন উপজেলার প্রায় ১৫ গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা বাঁশের সাঁকো। বিকল্প কোনো পথ না থাকায় এই সাঁকো দিয়েই যাতায়াত করতে হয় গ্রামবাসীদের। দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকার মানুষ এই বাশের সাকো দিয়ে চলাচল করছে। স্থানীয়দের উদ্যোগে নির্মিত সাঁকোটি প্রতি বছর মেরামত করেন নিজেরাই। তবে এর একটি স্থায়ী সমাধান চান এলাকার বাসিন্দারা। বিশেষ করে ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ ও কোটচাদপুর উপজেলার শেষ সীমানায় চিত্রা নদীর উপর ফাজিলপুর- কাদিরকোল নামক স্থানে স্থায়ী কোনো সেতু না থাকায় নিজেদের নির্মিত বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন স্থানীয়রা।
এক-দুই দিনের নয়, বছরের পর বছর এমন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তিন উপজেলার মানুষকে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সাঁকো পার হতে গিয়ে অনেকবার দুর্ঘটনায় পড়তে হয়েছে।
বর্ষায় এ দুর্ভোগ পৌঁছায় আরও চরমে। সাঁকো মেরামতে সরকারি কোনো অনুদানও পাওয়া যায় না। প্রতি বছর দুই পারের বাসিন্দারা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন। চাঁদা তুলে কেনেন বাঁশ-খুটি। জনপ্রতিনিধিরা দাবি পূরণের আশ্বাস দিলেও পরে আর তা বাস্তবায়ন হয় না। তাই অবিলম্বে একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
তিন উপজেলার সুন্দরপুর দুর্গাপুর, এলাঙ্গি ও মহারাজপুর ইউনিয়নের চিত্রা নদীর উপর মানুষের চলাচলে ভরসা একটি মাত্র বাঁশের সাঁকো। কিন্তু সেই সাঁকোটিও নিয়মিত সংস্কার করতে না পারায় চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। ঝিনাইদহ সদর,কালীগঞ্জ ও কোটচাদপুরউপজেলারউপজেলাকাদিরকোল,ফাদিলপুর,ইকড়া,কালুখালি,সিংদহ,আলাইপুর,রামনগর,কুল্লাগাছাসহ অন্তত ১৫ গ্রামের মানুষ এই সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয়দের অর্থায়নে মোটা অংকের টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকোর কয়েক বছর ভালো গেলেও এখন অর্থের অভাবে বাঁশের সাঁকোটিও নিয়মিত সংস্কার করা যাচ্ছে না। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়েই প্রতিদিন পারপার করছেন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এছাড়া পণ্য পরিবহনসহ যাতায়াত সমস্যার কারণে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান।
ফাদিলপুর সকলের কাছ থেকে চাঁদা তুলে এলাকার যুবকদের নিয়ে বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করি। রামনগর গ্রামের মহিদুল উসলাম বলেন, এই বাশের সাকোর কারনে এলাকার মানুষ জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করে থাকে। এখানে একটি স্থায়ী ব্রীজ হওয়া একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন।
ফাদিলপুর,কাদিরকোল নামক স্থানে চিত্রা নদীর উপর বাশের সাকো দিয়ে ৩ উপজেলার মানুষ ও এএন্ডজে কলেজ, কেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়,কাদিরকোল দাখিল মাদ্রাসা, কালুখালি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কালুখালি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষার্থীরা প্রতিনিয়ত চলাচল করে থাকে। আবার যশোর, ঝিনাইদহ,কালীগঞ্জ,কোটচাদপুর উপজেলায় যেতে হয় এই সাকো দিয়ে। অপর দিকে রয়েছে বাঘমারা বাজার, কালুখালি বাজার, কাদিরকোল বাজার, আলাইপুর ও সিংদহসহ বিভিন্ন বাজারে যাবার একমাত্র ভরসা ফাদিলপুর চিত্রা নদীর উপর বাশের সাকো। সাকোটি প্রায় ১০০ ফুট লম্বা। দেশ স্বাধীনের পর থেকে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা ভোটের আগে সবাই প্রতিশ্রুতি দয়ে থাকে ভোটে পাশ করলে এই এখানে স্থায়ী ব্রিজ করা হবে। কিন্তু অদ্যবধি কোন জনপ্রতিনিধিই তাদের কথা রাখেনি। এলাকার কৃষকরা ও তাদের জমির ফসল অনা নেওয়া করে থাকে এই সাকো দিয়ে। এলাকার মানুষের প্রশ্ন একটাই আদেও কখন ও এখানে ব্রিজ হবে কিনা সেটা নিয়ে রয়েছে নানা শংশয়।