আল মুবিন, কেশবপুর প্রতিনিধি।। উৎসব মুখর পরিবেশে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচন ১৪ জুলাই স¤পন্ন হয়েছে। বে-সরকারিভাবে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী শাহীন চাকলাদার ১ লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দি বিএনপির প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ২ হাজার ১২ ও জাতীয় পর্টি প্রার্থী হাবিবুর রহমান পেয়েছেন ১ হাজার ৬ শত ৭৮ ভোট। জানাগেছে, ১৪ জুলাই ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। করোনা ভাইরাসের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ও মুখে মাস্ক পরে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। প্রতিটি ভোট কেন্দ্র উৎসবে পরিণত হয়। উল্লেখ্য, যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের এমপি সাবেক জনপ্রশাস প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক গত ২১ জানুয়ারি মৃত্যুবরণ করায় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। ১৬ ফেব্রæয়ারী উপ-নির্বাচনের তফশীল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনছিল ২৭ ফেব্রæয়ারী এবং ২৯ মার্চ উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়নপত্র জমাদেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়নপত্র জমাদেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেন আজান ও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়ে মনোনয়নপত্র জমাদেন কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান।নির্বাচন কমিশনের তফশীল অনুযায়ী প্রার্থীরা গণংযোগ চালাতে থাকেন। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী শাহীন চাকলাদার দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে উপজেলাব্যাপী ব্যাপক গণসংযোগ করেন। বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ও জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান ধীর গতিতে গণসংযোগ করেন। এরই মাঝে করোনা ভাইরাসের কারণে ২২ মার্চ উপ-নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন।করোনা ভাইরাস মহামারীতে কেশবপুর উপজেলা বাসীর পাশে দাঁড়ান যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার। তিনি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাস্ক, সাবান, সেনিটাইজার প্রদান করেন। তিনি কর্মহীন ২২ হাজার পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেন। যা অন্য দু’প্রার্থী করেননি।পরবর্তীতে ৪ জুলাই নির্বাচন কমিশন যশোর-৬ কেশবপুর সংসদীয় আসনের স্থগিত হওয়া উপ-নির্বাচন ১৪ জুলাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন। ৫ জুলাই থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে বেশ জোরেসোরে উপজেলা ব্যাপী গণসংযোগ ও পথসভা করেন। যার ফলে উপজেলাব্যাপী শাহীন চাকলাদের গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। উপজেলা ব্যাপী ভোটাররা শাহীন চাকলাদারকে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষায় রায়েছ। যে সকল ভোটাররা আজ শাহীন চাকলাদারকে আজ নৌকা প্রতীকে ভোটে দিয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এদিকে জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি ইতিমধ্যে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হাবিবুর রহমান গণসংযোগ করলেও কোন অবস্থান তৈরী করতে পারেনি। কেশবপুর উপজেলায় ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মোট ভোটার হচ্ছে ২ লাখ ৩ হাজার ১৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২ হাজার ১শত ২২ জন ও মহিলা ভোটার ১লাখ ৮শত ৯৬ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ৭৯টি। ৩৭৪টি বুথ, দায়িত্ব পালন করবে ৭৯ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৩৭৪ জন সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার ও ৭৪৮ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করছেন।ভোট কেন্দ্রের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় ১৮জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার ব্যাটালিয়ন দায়িত্ব পালন করেছেন।কেশবপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বজলুর রশীদ জানান, কেশবপুর আসনে মোট দুই লাখ ৩ হাজার ১৮ জন ভোটারের মধ্যে এক লাখ ২৯ হাজার ৬৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে এক হাজার ৩৭৪ ভোট। আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহীন চাকলাদার নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন এক লাখ ২৪ হাজার ৩ ভোট, বিএনপি প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন দুই হাজার ১২ ও জাতীয় পার্টির হাবিবুর রহমান লাঙল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন এক হাজার ৬৭৮। নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ।