যশোর প্রতিনিধি।। যশোরে পেট্রোল পুড়ে শিরিনা বেগম (২৮) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে যশোর সদর উপজেলার আরবপুর মাঠপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে নিহতের স্বামী জুয়েল সরদার পলাতক রয়েছেন।
পুলিশ বলছে, গৃহবধূ মৃত্যুর ঘটনায় দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে, এটি স্পর্শকাতর ঘটনা, সে কারণে পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখছে।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানিয়েছেন, আরবপুর মাঠপাড়া এলাকার বাসিন্দা জুয়েল সরদার প্রথম স্ত্রী পলি খাতুনের মৃত্যুর পর (আড়াই বছর আগে) পলির ফুফাতো বোন শিরিনকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে সাংসারিক বিষয়াদি নিয়ে প্রায়ই বিবাদ হতো।
শিরিনের বাবা ও ভাইদের অভিযোগ, পারিবারিক বিবাদের জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে নিজ ঘরে শিরিনের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেয় তার স্বামী জুয়েল সরদার। এরপর তার চিৎকারে পাশের লোকজন ছুটে এলে জুয়েল ও প্রতিবেশীরা শিরিনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হলে দুপুরেই তাকে খুলনায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে বুধবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
শিরিনের বাবা খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে গা ঢাকা দিয়েছে জুয়েল। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।’
অবশ্য হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জুয়েলের পরিবারের লোকজন। জুয়েলের মা আমেনা বেগম বলেন, ‘শিরিন নিজেই ঘরে থাকা মোটরসাইকেলের পেট্রোল গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। আমরা খবর পেয়ে ছুটে আসি। এরপর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’
জুয়েলের প্রথম পক্ষের ছেলে সিয়াম সরদার বলেন, ‘দুপুরে আব্বু-আম্মু ঝগড়া করে। এরপর আম্মু ঘরে থাকা মোটরসাইকেলের পেট্রোল গায়ে দিয়ে গ্যাসলাইট দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।’
প্রতিবেশীরা বলেন,’ আগুন লাগার পর চিৎকার শুনে আমরা ঘর থেকে বের হই। এ সময় শিরিন বলে, আমি এ কী ভুল করলাম। আমার ঘাড়ে শয়তান লেগেছিল। আমার ছেলের কী হবে!
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানান, পুলিশ লাশ উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। দুই পরিবার পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত জুয়েল পলাতক রয়েছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।