দুর্জয় ডেস্ক: খালেদা জিয়াকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা ও তারেক রহমানকে শিশু মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিএনপির বিজয় শোভাযাত্রার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ দাবি করেন।
দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে এ শোভাযাত্রা শুরু হয়। কাকরাইল হয়ে শান্তিনগর মোড় ঘুরে দলীয় কার্যালয়ে সামনে গিয়ে তা শেষ হয়।
বিএনপির শোভাযাত্রার ব্যানারে লেখা ছিলো, প্রতিহিংসার বিচারে বন্দি গণতন্ত্র, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও জনগণের আস্থার প্রতীক গণতন্ত্রের মা ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি চাই’। এর পাশে লেখা ছিলো, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় র্যালি।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা এই বিজয় র্যালিতে অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে অংশ নিচ্ছি। ৫০ বছর পরে যখন আমাদের সবর্ণজয়ন্তী পালন করা হচ্ছে, সেই সময়ে যখন আমাদের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম মহিলা মুক্তিযোদ্ধা এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপসহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি আজীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি আজকে এই সরকারের ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটক থাকা অবস্থায়, অত্যন্ত অসুস্থ অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে- সেই সময়ে আমরা এই বিজয় র্যালি করছি।
আজকের এই র্যালি বাংলাদেশের জনগণের নতুন করে জেগে ওঠার র্যালি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজকের এই র্যালি বাংলাদেশের মানুষের নতুন করে সংগ্রাম শুরু করবার র্যালি। আজকের এই র্যালি বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনবার র্যালি। তাই আসুন, আজকে র্যালির মধ্যে দিয়ে আমরা সেই শুভ সূচনা করি।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, যে সূচনার মধ্য দিয়ে আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারবো এবং তাকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারবো। একই সাথে আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। যিনি ১৯৭১ সালে একজন শিশু মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাকে নির্বাসিত অবস্থা থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে আমরা এখানে আমাদের নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারবো।
র্যালিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আহমদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের হাজার হাজার নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে র্যালিকে কেন্দ্র করে বেলা সাড়ে ১১টা থেকেই ব্যানার, ফেস্টুন ও জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী শোভাযাত্রাস্থলে উপস্থিত হয়। এসময় খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগানে রাজপথ মুখরিত করে তোলেন।
অন্যদিকে বিএনপির র্যালিকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয় দলটির নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আশেপাশের এলাকায়। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে র্যালির আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের জন্য ট্রাক দিয়ে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। এই মঞ্চেই ব্যানার টানানো হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, র্যালি ঘিরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে কঠোর অবস্থানে ছিলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যরা। কার্যালয়ের আশপাশে সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন করেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনসমাগম ঘটিয়ে যাতে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে, সে জন্য সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়।।
এছাড়া নয়াপল্টনে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ ও ডিবি পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে।