স্টাফ রিপোর্টার।। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের বিশেষ নির্দেশে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন সেই নিপুণ বিশ্বাস। যথাসময়ে উপস্থিত হতেও না পারলেও মানবিক দিক ও নিপুনের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে উপাচার্যের উপর অর্পিত ক্ষমতাবলে তাকে ভর্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি কমিটি নিয়ম মেনেই ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। কিন্তু আরেকটু অপেক্ষা করলে, এ ধরনের অবস্থা সৃষ্টি হতো না। নিপুন বিশ্বাস সমাজের একটি অনগ্রসর পরিবারের সদস্য, আমি এটা জানতে পেরে ডিনস কমিটির জরুরি সভার নির্দেশ দিই। স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের ভর্তি কার্যক্রম শেষ হলেও বুধবার সে ভর্তি হতে পারবে। যবিপ্রবি প্রশাসন সবসময় শিক্ষার্থীদের প্রতি সহনাভূতিশীল। যবিপ্রবির শিক্ষার্থীসহ যারা এ ঘটনা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচরে আনতে সহায়তা করেছেন, তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এদিকে ভর্তির সুযোগ পেয়ে আনন্দে আত্মহারা নিপুণ বিশ্বাস। তিনি বলেন, ভর্তিসুযোগ বঞ্চিত হলেও গত দু’দিন ধরে আশা নিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন তিনি। গণমাধ্যম তার পাশে দাঁড়ানোয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মানবিকতায় তার সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির স্বপ্ন পূরণ হলো। পড়াশুনায় ভালো ফলাফলের মাধ্যমে তার প্রতি মানুষের এমন ভালবাসা প্রদর্শনের প্রতিদান দিতে চান তিনি।
সোমবার (৩১ জানুয়ারি) নির্ধারিত সময়ের ৮ মিনিট দেরিতে ক্যাম্পাসে পৌঁছানোয় ভর্তির সুযোগ বঞ্চিত হন নিপুণ। মঙ্গলবার বিকেলে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির জরুরি সভায় নিপুন বিশ্বাসের ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় জানানো হয়, গত ৩০ জানুয়ারি ভর্তির জন্য বিজ্ঞপ্তির মেধাতালিকার একজন শিক্ষার্থী নিপুণ বিশ্বাস পরিবহন সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত সময়ে উপস্থিত হতে পারেননি। অনুষদীয় ভর্তি কমিটি উক্ত শিক্ষার্থীর ক্রমের পরবর্তী ক্রমের উপস্থিত শিক্ষার্থী বায়েজিদ মল্লিককে ভর্তি করেন। পরবর্তীতে নিপুণ বিশ্বাস বেলা দেড়টায় উপস্থিত হন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্যকে অবহিত করলে তিনি বিষয়টির মানবিক দিক বিবেচনায় শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগে একটি আসন বর্ধিত করে উক্ত শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানোর জন্য ডিনস্ কমিটিকে অনুরোধ করেন। মাননীয় উপাচার্যের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এ কমিটি উক্ত শিক্ষার্থীকে একটি আসন বাড়িয়ে ভর্তি করার সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির পরবর্তী সভায় অবহিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, গত রোববার সাড়ে ৫ টার দিকে যবিপ্রবির ওয়েবসাইটের নোটিশে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগে ৩য় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। স্মার্ট ফোন না থাকায় এই ভর্তি বিজ্ঞপ্তি দেখতে পারেনি নিলফামারীর বাসিন্দা নিপুণ বিশ্বাস। গভীররাতে ভর্তির বিষয় জানালে তাৎক্ষণিক প্রতিবেশী ও স্বজনদের কাছ থেকে ২৩ হাজার টাকা জোগাড় যবিপ্রবির উদ্দেশ্য রওনা দেন তিনি। কিন্তু যশোর থেকে নীলফামারীর দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ায় এবং রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে বেলা ১২টা ৮ মিনিট বেজে যায়। ফলে তার অনুপস্থিতিজনিত কারণে শুন্য আসনে ভর্তি করে নেওয়া হয়।
এ নিয়ে চ্যানেল দুর্জয় অনলাইন সহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করে।