স্টাফ রিপোর্টার।। প্রাথমিকভাবে সন্দেহই করা হচ্ছে, চট্টগ্রাম থেকে যশোরে নিয়ে আসার পথেই আসল সার বদলে নকল ওই সার ঢুকিয়ে বস্তাগুলো আবার সেলাই করে দেয়া হয়।ছয়টি ট্রাকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে যশোরে নিয়ে আসা ৮০ টন টিএসপি সারের ৭২ টনই পুরোপুরি ভেজাল বলে ল্যাব পরীক্ষায় প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গত ১৫ মার্চ রাতে চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি সার কারখানা থেকে ছয়টি ট্রাকে করে ৮০ টন টিএসপি সার যশোর বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) গুদামে পৌঁছায় ১৭ মার্চ। কিন্তু ওই সার দেখে সন্দেহ হলে পাঁচটি ট্রাকের সার খালাস বন্ধ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে গুদাম কর্তৃপক্ষ।
এরপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ওই সার জব্দ করে ২১ মার্চ পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয় পরীক্ষাগারে। ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রামের টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেড ও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন-বিসিআইসি টিএসপির উপপ্রধান রসায়নবিদ রেজাউল ইসলামকে প্রধান করে গঠন করে তিন সদস্যের কমিটি। কমিটির অন্য দুজন ছিলেন উপপ্রধান হিসাবরক্ষক নির্মল কুমার দত্ত ও ব্যবস্থাপক (উৎপাদন) শফিকুল ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) টিএসপি সার কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ঢুকতে না দেয়া পাঁচ ট্রাকে থাকা ৭২ টন টিএসপি সারের পুরোটাই ভেজাল। ওই প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির প্রধান টিএসপির উপপ্রধান রসায়নবিদ রেজাউল ইসলাম বলেন, ল্যাব পরীক্ষায় সব সারই ভেজাল পাওয়া গেছে।
টিএসপির উপপ্রধান হিসাবরক্ষক ও তদন্ত কমিটির সদস্য নির্মল কুমার দত্ত বলেন, আমরা ধারণা করছি, যোগসাজশে সড়ক থেকে আসল সার নামিয়ে এই ভেজাল সার ওঠানো হয়েছে।
যশোর বাফার গোডাউনের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে যে সার যশোর গোডাউনে নামানো হচ্ছে, সেগুলো আসল সার নয়। এখন যে সারগুলো আনা হয়েছে, সেগুলোর বস্তার সেলাই টিএসপির সেলাইয়ের মতো নয়। এ সারগুলো পথে পাল্টে নকল সার ভর্তি করে বস্তাগুলো পুনরায় সেলাই করে বাফার গোডাউনে সরবরাহের জন্য আনা হয়েছিলো।
চলতি বোরো মৌসুমে এই বাফার গোডাউন থেকে যশোর, ঝিনাইদহ, নড়াইল, মাগুরা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ৪৬০ জন ডিলারের মাধ্যমে মাঠপর্যায়ে কৃষকদের মাঝে ভর্তুকি মূল্যে এই সার বিক্রির কথা ছিলো।