দুর্জয় ডেস্ক : সাংবাদিক বা মানবাধিকার কর্মী পরিচয়ে মানুষকে সুবিধা পাইয়ে দেয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিতেন হাজার হাজার টাকা। সে কারবারে তেমন একটা সুবিধা করতে না পেরে তান্ত্রিক বনে যান চট্টগ্রামের মো. ইব্রাহীম হোসেন। যাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান জানান, নগরীর হালিশহর থানার বৌ বাজার এলাকা থেকে মঙ্গলবার ইব্রাহীম নামের কথিত তান্ত্রিককে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের সময় ইব্রাহীম র্যাব সদস্যদের দুটি বোতল দেখিয়ে জিনের ভয় দেখান। তাকে ধরলে র্যাব ধ্বংস হয়ে যাবে বলেও হুমকি দেন তিনি।
র্যাব জানান, এক যুবকের পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তারা ইব্রাহীমের খোঁজ পান। ফরহাদুল ইসলাম নামের ওই যুবক মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। বিভিন্নভাবে চিকিৎসা করিয়ে ফল না পাওয়ায় বছর খানেক আগে প্রতারক ইব্রাহীমের শরণাপন্ন হন তারা।
মেজর মেহেদী বলেন, তখন থেকেই পরিবারটির সাথে প্রতারণা শুরু করেন ইব্রাহীম। কয়েক দফায় পরিবারটির কাছ থেকে মোট পাঁচ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি।
ফরহাদকে ইব্রাহীমের কাছে নেয়ার পর সে বলে, ফরহাদের ভাগ্যে অনেক গুপ্তধন আছে। সেগুলো উদ্ধার করতে কিছু সরঞ্জাম দরকার, সেজন্য খরচাপাতি লাগবে।
ইব্রাহীমের কথা বিশ্বাস করে তারা প্রথমে দুই লাখ টাকা দেন। এরপর সে টাকা নিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে। ভুক্তভোগীরা তাকে বারবার তাগদা দেয়ায় ইব্রাহীম আরও টাকা দাবি করে। পরিবারটি তখন আরও দেড় লাখ টাকা দেয়।
মেজর মেহেদী জানান, ইব্রাহীম ভুক্তভোগী পরিবারটির বাসাও চিনে নেন। দ্বিতীয় দফায় টাকা পেয়ে ভুক্তভোগীর বাসার কাছের একটি মাঠে তিনটি পিতলের ঘটি, একটি তালা এবং একটি পুতুল মাটির নিচে রেখে আসেন। পরে একদিন ওই পরিবারের লোকজনকে নিয়ে মাটি খুঁড়ে গুপ্তধনের নমুনা হিসেবে সেগুলো বের করে দেখান।
কয়েক দিনের মধ্যে পরিবারটি ইব্রাহীমকে আরও দেড় লাখ টাকা দেয় গুপ্তধনের আশায়। এক পর্যায়ে তারা ইব্রাহীমের প্রতারণা বুঝতে পেরে র্যাবে অভিযোগ দেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারের সময় ইব্রাহীমের কাছে বেশ কিছু নকল মুদ্রা, ধাতব মূর্তিসহ বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে, যেগুলো তিনি প্রাচীন মুদ্রা, দামি বস্তু হিসেবে দেখিয়ে লোকজনকে ঠকিয়ে আসছিলেন। এভাবে তিনি বহু মানুষের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।