নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
‘নোজ জব’ অর্থাৎ প্লাস্টিক সার্জারি করে নিখুঁত নাসিকা পেতে চেয়েছিলেন তিনি। আর তার খরচ জোগাড় করতে নিজের ৫ দিনের সন্তানকে ২ লক্ষ ৮৬ হাজার টাকার বিনিময়ে বেচে দিলেন মা। ৩৩ বছর বয়সী ওই রাশিয়ান নারীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। তিনি ২৫ এপ্রিল একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের মাত্র পাঁচ দিন পরে বাবা-মা হতে চাইছেন এমন স্থানীয় এক দম্পতির কাছে নিজের সন্তানকে বিক্রি করে দেন মা। বাংলায় প্রবাদ আছে, ‘কুপুত্র যদি বা হয় কুমাতা কখনও নয়’। কিন্তু এই রাশিয়ান মা সেই ধারণাটাই বদলে দিয়েছেন। ডেইলি স্টারের খবর অনুযায়ী , মানব পাচারের সন্দেহে মে মাসের শেষের দিকে ওই নারীকে হেফাজতে নেয়া হয়। রাশিয়ান কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর কাসপিয়স্কের একটি হাসপাতালে পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। পরে তিনি একজন স্থানীয় বাসিন্দার সাথে দেখা করেন এবং ২০০,০০০ রুবেলের বিনিময়ে তার নবজাতক পুত্রকে হস্তান্তর করতে সম্মত হন।
‘ডেইলি স্টার’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, শিশুটিকে হস্তান্তর করার দিন প্রথমে ৩৬০ মার্কিন ডলার হাতে পেয়েছিলেন তার জন্মদাত্রী মা ।
কিন্তু, শিশুটির চিকিৎসার প্রয়োজন ছিল। তার নতুন বাবা-মা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার জন্মের সনদপত্র চেয়েছিল। কয়েক সপ্তাহ পর, ২৬ মে চুক্তির বাকি টাকার বিনিময়ে ওই নারী নতুন বাবা-মা-এর হাতে তাঁর সন্তানের জন্মের সনদপত্র তুলে দিয়েছিলেন। কিছুদিন পরেই সেই খবর পৌঁছায় পুলিশের কাছে। পুলিশ ওই যুগল ও বাচ্চার জন্মদাত্রীকে গ্রেফতার করে। ধরা পড়ার পরে ওই যুগল পুলিশকে জানিয়েছেন যে, তাঁরা কখনওই বেআইনিভাবে শিশুটিকে নিতে চাননি। কিন্তু শিশুটির জন্মদাত্রী তাঁদের কাছে শিশুটিকে তার জন্মের প্রমাণপত্র দিয়ে যান। বদলে তিনি তাঁর নাকের অপারেশন করার জন্য কিছু টাকা চান। অপারেশনের কথা শুনেই সেই টাকা দিতে তাঁরা রাজি হয়ে যান। রুশ ফেডারেশনের তদন্ত কমিটি অবশ্য তাদের এই যুক্তি বিশ্বাস করছে না।
রুশ ফেডারেশনের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী তাঁদের তিন জনের বিরুদ্ধেই ‘অসহায় ব্যক্তির অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে ক্রয়-বিক্রয়ের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকেই আটক করা হয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে তিন জনই কঠোর শাস্তি পেতে পারেন।