1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
মিঠাপুকুরে নারীদের তৈরি ঝুড়ি যাচ্ছে ২০ দেশে - চ্যানেল দুর্জয়
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

মিঠাপুকুরে নারীদের তৈরি ঝুড়ি যাচ্ছে ২০ দেশে

  • প্রকাশিত : সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রংপুরের মিঠাপুকুরে নারীদের তৈরি ঝুড়ি রফতানি হচ্ছে বিশ্বের ২০টি দেশে। হোগলাপাতা, পাট, বেত, বাঁশ, কাঠসহ নানা ধরনের লতাপাতা দিয়ে তৈরি এসব ঝুড়ি তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এই অঞ্চলের নারীরা। প্রতি মাসে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার হস্তশিল্প পণ্য বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে বলে জানায় এ খাতের উদ্যোক্তরা। এসব ঝুড়ির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে রাউন বাস্কেট, ইউসেপ বাস্কেট, রাউন ফুড বাস্কেট, ওভাল বাস্কেট ইত্যাদি। জানা যায়, আমেরিকা, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিশ্বের প্রায় ২০টি দেশে উৎপাদিত পণ্যগুলো রফতানি করা হয়। প্রতিদিন ৪শ থেকে ৫শ শ্রমিক কারখানায় ও নিজ বাড়িতে এসব পণ্য তৈরি করেন। তাদের মধ্যে প্রায় ৩শ জন নারী রয়েছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে ‘কেয়ার বাংলাদেশ’ নামের একটি এনজিও সংস্থা মিঠাপুকুর উপজেলার বালারহাট ইউনিয়নের সংগ্রামপুর গ্রামে স্থানীয় নারীদের মাঝে হস্তশিল্প প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছিল। প্রশিক্ষণে আগ্রহী নারীদের কীভাবে পাতা দিয়ে হস্তশিল্প পণ্য তৈরি করা হয় সেটি শেখানো হয়। এর মধ্যে দিয়ে প্রশিক্ষিত নারীরা হোগলাপাতা দিয়ে পণ্য তৈরি করে বাড়তি আয় করার সুযোগ পায়। তবে বছর দুয়েক পর এনজিও সংস্থাটি তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে প্রশিক্ষিত নারীরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

বছরখানিক পরে ‘গ্রাম বাংলা হস্তশিল্প’ নামক ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান আবারও কার্যক্রম শুরু করে। এতে পুনরায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয় বেকার হয়ে পড়া প্রশিক্ষত নারীদের। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাদের। নারীরা তাদের সংসারের কাজের ফাঁকে হোগলাপাতা দিয়ে বিভিন্ন হস্তপণ্য তৈরি করে বাড়তি আয় করে আসছেন। এমনকি ওই এলাকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থী এই হস্তশিল্পের কাজ শিখেছেন। তারাও পড়ার ফাঁকে পণ্য তৈরি করে বাড়তি আয় করতে পারছেন। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে স্থানীয় নারীদের জীবনমান যেমন বদলে গেছে, ঠিক তেমনি তাদের তৈরি পণ্য থেকে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে বাংলাদেশ।

গ্রাম বাংলা হস্তশিল্পের পরিচালক আহাদ আলী মোল্লা বলেন, আমাদের প্রতিষ্ঠানে সবাই চাপমুক্ত থেকে কাজ করতে পারেন। আমি নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী হস্ত ও কুটির শিল্পের সমৃদ্ধ ইতিহাস তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে প্রযুক্তির ব্যবহার এবং বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার লক্ষ্যে কাজ করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘করোনাকালে প্রায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঝুঁকি তৈরি হলেও আমাদের কাজ চলছিল। তবে এখন পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে পণ্য উৎপাদন ও রফতানি করে তেমন একটা লাভ হচ্ছে না। বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম আগের থেকে না বাড়লে এই শিল্প টিকিয়ে রাখা ঝুঁকিপূর্ণ হবে। গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন।

হস্তশিল্পের কাজ করা মল্লিকা বেগম নামে এক নারী বলেন, ‘আগে ঢাকায় একটা সুতোর কারখানায় চাকরি করতাম। ৪ বছর হয় গ্রামের বাড়িতে আসার পর থেকেই এখানে কাজ করছি। ঢাকার কারখানার মতো বেতন ভাতা একই নিয়মে পাই। এখানে নিজের আগ্রহে যতটুকু কাজ করি ততটুকু মজুরি পাই। দুশ্চিন্তামুক্ত থেকে বাড়ির কাজও করা যায়।’

কলেজ শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, মাসে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা আয় করতে পারি। লেখাপড়ার ফাঁকে পণ্য তৈরি করে যে আয় হয় সেখান থেকে বাবা-মার সংসারে সহযোগিতা করে নিজেও কিছু সঞ্চয় করতে পারছি।

মল্লিকা ও ইশরাত জাহানের মতো গ্রামের শত শত শ্রমিক কাজের বিনিময়ে আয় করার সুযোগ পেয়েছেন। তাদের হাতের বুননে তৈরি করা পণ্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে কারখানার নির্দিষ্ট কিছু শ্রমিক সংগ্রহ করেন। এরপর কারখানায় ফিনিশিংয়ের কাজ শেষ হলে প্যাকেজিং করে উৎপাদিত পণ্যগুলো পরিবহনযোগে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাঠানো হয়। সেখান থেকে বিদেশে রফতানি করা হয় নারীদের তৈরি এসব পণ্য।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • মঙ্গলবার (বিকাল ৩:১৮)
  • ২৩শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৪ই শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ১০ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
114
3264147
Total Visitors