যশোরে ছাত্রলীগের বর্ধিত সভায় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। রোববার (২০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় যশোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। আগামী ২৪ নভেম্বর যশোরে শেখ হাসিনার দলীয় জনসভা সফল করতে বর্ধিত সভার আয়োজন করে যশোর জেলা ছাত্রলীগ।
এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। দ্বিতলা বিশিষ্ট মিলনায়তনে থেকে হুড়োহুড়ি করে অনেকেই বাইরে বের হতে গিয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘ ৫ বছর পর আগামী ২৪ নভেম্বর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে যশোর স্টেডিয়ামে দলীয় সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন দলের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাবেশ সফল করতে রোববার সন্ধ্যায় বর্ধিত সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রলীগ।
যশোর জেলা পরিষদের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ঐ বর্ধিত সভায় বিকাল থেকেই ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট থেকে মিছিল সহকারে উপস্থিত হন সভাস্থলে। একপর্যায়ে মিলনায়তনে প্রবেশ নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের সমর্থকদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। হাতাহাতি একপর্যায়ে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে মিলনায়তনের ভেতর থেকে বের হতে গিয়ে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদক এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তবে সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেনি দাবি করে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস বলেন, এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমাদের অনুষ্ঠানকে কেউ বিতর্কিত করতে এমন অপপ্রচার চালাচ্ছে।
অন্যদিকে মারামারি-হাতাহাতির একটি ভিডিও এই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব বলেন, এই অনুষ্ঠানের আগে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভার প্যানা টাঙানো নিয়ে মারামারি হয়েছিল। সেই ভিডিওটা ঐ ঘটনার হতে পারে। আমাদের বর্ধিত সভা শান্তিপূর্ণভাবে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা জেলা ছাত্রলীগের দুই নেতা বলেন, তেমন কিছু না। উঠানামা নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সম্পাদক এসে নিয়ন্ত্রণ আনে।
নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, তেমন কিছু না। নিউজ করার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। তার ভাষ্য একটু ঠেলাঠেলি হয়েছে; তাৎক্ষণিক নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছিল।
এদিকে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হাতাহাতির ঘটনার প্রায় ৪০ মিনিট পর বর্ধিত সভায় উপস্থিত হন সভার প্রধান অতিথি বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়। সংক্ষিপ্ত বক্তব্য তিনি বলেন, আগামী ২৪ নভেম্বর যশোরের সমাবেশের মধ্যে দিয়ে প্রমাণ হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা। যশোরের স্টেডিয়াম জনমানুষের উপস্থিতিতে জনসমুদ্রে পরিণত হবে। আপনারা খেয়াল করবেন, কয়েক মাসে বিএনপি কয়েকটি বিভাগীয় সমাবেশ করেছে। সেখানে অল্পসংখ্যক নেতা-কর্মী নিয়ে সমাবেশ করলেও বিএনপির কিছু এজেন্ডা বাস্তবায়নকারীরা সমাবেশের ছবি এডিট করে জনসমাগম দেখিয়ে। আসলেই তাদের প্রোগ্রামগুলোতে তেমন লোক হয়নি। যশোরের সমাবেশে জনসমুদ্রে পরিণত করার মধ্যে দিয়ে আমরা প্রমাণ করে দেব আওয়ামী লীগ জনগণের দল। তারা মাঠের রাজনীতি করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপি। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে জেলা ও উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।