যশোর: আধিপত্য দ্বন্দ্বে ২৬ নভেম্বর দুপুর দেড় টার দিকে বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার একটি চিহ্নিত চক্রের হামলার শিকার হয়েছেন যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর ও পরিবহন শ্রমিক নেতা শেখ শাহেদ হোসেন নয়ন। এর প্রতিবাদে দুপুর দুটোর দিকে যশোর শংকরপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয় নয়ন সমর্থক ও তার গ্রুপের লোকজন। এসময় গোটা টার্মিনাল এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
আধাঘন্টা অবরোধ চলার পর পুলিশের উধর্বতনরা ও যশোর পরিবহণ সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এদিকে নয়নের উপর হামলার ঘটনায় তার বাবা গীতিকার সুরকার ও শিল্পী শেখ ফারুক হোসেন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। যদিও অভিযুক্ত পক্ষ বলছেন উল্টো কথা।
স্থানীয় সূত্র থেকে তথ্য মিলেছে, সম্প্রতি এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার চিহ্নিত একটি চক্রের সাথে দ্বন্দ্ব বাধে কাউন্সিলর নয়নের। শান্ত নামে নয়নের এক আত্মীয়কে কয়েক সপ্তাহ আগে মারপিট করে চক্রটি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হন নয়ন ও তার লোকজন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় এলাকা থেকে লোকজন ও কর্মী নিয়ে যাওয়া নিয়েও দ্বন্দ্ব হয়। এলাকায় আধিপত্য দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য রুপ নেয়। এরই একপর্যায়ে ২৬ নভেম্বর এলাকার রনির নেতৃত্বে শরিফুল গং টিবি ক্লিনিক এলাকায় নির্মাণ কাজ চালাচ্ছিল। সীমানা ও পৌরবিধি না মেনে ওই নির্মাণ করা হচ্ছে দাবি করে নয়ন ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে প্রথমে বাক-বিতন্ডা ও পরে নয়নের উপর হামলা করে চিহ্নিতরা। নয়নের সাথে থাকা মাসুদ নামে একজনকেও মারপিট করে তারা।
এদিকে, এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়ে যশোর শংকরপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায়। নয়নের সমর্থক ও তার লোকজন একাট্টা হয়ে দুপুর দুটোর দিকে পরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। এতে যাত্রীরা বিপাকে পড়েন। এসময় বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ার সংবাদ পুলিশের কাছে পৌঁছালে জেলা গোয়েন্দা শাখার ওসি রুপন কুমার সরকারের নেতৃত্বে একটি টিম, থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত শফিকুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি টিম, চাঁচড়া ফাঁড়ি একটি টিম ও যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলাল হোসাইনের নেতৃত্বে আরো একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় যশোর পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু, সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ ফুলসহ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হন। এর আধাঘন্টা পরে বাস চলাচল স্বাভাবিক করতে সমর্থ হন পুলিশ ও শ্রমিক নেতারা।
এদিকে, কাউন্সিলর নয়নের উপর হামলার ঘটনায় তার বাবা কন্ঠ শিল্পী ও সুরকার ফারুক হোসেন থানায় অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার রনি হোসেন, শরিফুল ইসলাম, রুবেল ওরফে কপাল কাটা, রুবেল, শুভ ওরফে পাকের আলী, সবুজ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, জসিম, শহিদুল ইসলামসহ অজ্ঞাত ৪/৫ জনের সাথে গোলযোগ চলছিল নয়নের। অভিযুক্তরা মাদক ব্যবসায়ী সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী দলের সক্রিয় সদস্য। শত্রুতার জের ধরে নয়নকে মারপিট ও খুন জখমের হুমকি দিয়ে আসছিল। তারা পরিকল্পিতভাবে নয়নকে এলোপাতাড়ীভাবে কিল ঘুষি, চড় থাবা ও লাথি মারে। সাথে থাকা মাসুদ ও অমিতকে এলোপাতাড়ীভাবে কিল ঘুষি, চড় থাবা ও লাথি মারে। ডাক চিৎকারে নয়নের স্ত্রী মিতু ঘটনাস্থলে আসলে তাকেও গালিগালাজ করে।
এদিকে অভিযুক্ত পক্ষের লোকজন জানিয়েছেন, নয়ন জনপ্রতিনিধি হয়ে এলাকায় যথেচ্ছা করছে। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে।