আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নতুন বছরের শুরতেই রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কেঁপে উঠল রাজধানী কিয়েভেসহ গোটা ইউক্রেন। শনিবার মধ্য রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভেই প্রথম বিস্ফোরণটি হয়। কিয়েভ ছাড়াও ইউক্রেনের আরও দুটি জেলায় একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া, এমনটাই অভিযোগ করেছে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয় যায়নি।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো টেলিগ্রামে বলেছেন, নতুন বছরের প্রথম ৩০ মিনিটের মধ্যেই হামলা চালায় রাশিয়া। কিয়েভের একটি চার তারকা হোটেল আলফাভিটোর ওপর রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আছড়ে পড়তেই তা গুড়িয়ে যায়। এরপরে কিয়েভের ন্যাশনাল প্যালেস অব আর্টসের পাশেও বিস্ফোরণ হয়।

ইউক্রেনের দক্ষিণে অবস্থিত মাইকোলাইভ শহরেও মধ্য রাতে হামলা চালায় রুশ বাহিনী। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন মেয়র।

এদিকে রোববার ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, নববর্ষের রাতে রাশিয়া মোট ৪৫টি ড্রোন দিয়ে ইউক্রেন আক্রমণ করেছে। যার মধ্যে প্রায় ২৩টি রুশ ড্রোনকে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে।

ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, আক্রমণ চালানো সমস্ত ড্রোনই ইরানের তৈরি। যেগুলো শাহেদ-১৩৬ যুদ্ধ ড্রোন বা তথাকথিত ‘কামিকাজে’ড্রোন নামে পরিচিত ।

ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী আরও জানিয়েছে, ড্রোন ছাড়াও ইউক্রেনে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ২০টি ক্ষেপণাস্ত্রও নিক্ষেপ করেছে রাশিয়া।

এদিকে নববর্ষে রুশ হামলার নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট ব্রিঙ্ক রবিবার ভোররাতে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলাকে কাপুরুষ ও সন্ত্রাস বলে নিন্দা করেছেন।

এক টুইটার পোস্টে তিনি বলেন, নতুন বছরের প্রথম দিনে রাশিয়া ঠাণ্ডা ও কাপুরুষতার সাথে ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল। কিন্তু পুতিন এখনও বুঝতে পারছেন না যে ইউক্রেনীয়রা লোহার তৈরি।

উল্লেখ্য, ১১ মাসে পা দিয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ। এখনও যুদ্ধ থামার কোনও ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে না। ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশী ইউক্রেন আক্রমণ করে রাশিয়া এরপর থেকে উভয় দেশের অন্তত ৪০ হাজার সেনার মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছে তাদের সরকার। এছাড়াও, যুদ্ধের ইউক্রেনের বহু সাধারণ নাগরিক মৃত্যু এবং ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস (ওএইচসিএইচআর) জানিয়েছে, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারী ইউক্রেনে রাশিয়া তার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরু পর থেকে ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ১৭ হাজার ৮৩১ জন বেসামরিক হতাহতের ঘটনা রেকর্ড হয়েছে। যার মধ্যে ৬ হাজার ৮৮৪ জন নিহত এবং ১০ হাজার ৯৪৭ জন আহত হয়েছে।