রায়হান হোসেন, চৌগাছাঃ
৩১মার্চ রবিবার “চৌগাছায় টাকা ছাড়া কাজ হয় না ইউনিয়ন ভূমি অফিসে!” শিরোনামে জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল চ্যানেল দুর্জয়ে সংবাদ প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ৩ দিনের মধ্যে ঘুষ গ্রহনের সংবাদ সম্মন্ধে বিস্তারিত জানাতে নায়েব আব্দুর রাজ্জাককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস নিশ্চিত করেছেন। তবে নায়েবের নিয়োগকারি কর্তৃপক্ষ না হওয়ায় তাকে সরাসরি কারন দর্শানো চিঠি দিতে পারছেননা বলেও জানিয়েছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস।
সংবাদ প্রকাশের পরে নারায়নপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, অফিস ছুটির পরেই সেবাপ্রার্থীদেরকে অফিসে ডেকে, কখনো উপজেলা
সদরে নিজ বাসায় আবার কখনো তিনি নিজেই সেবাপ্রার্থীর বাড়িতে বসে কাজের চুক্তি করতেন।
এদিকে গত ৩১ মার্চ আবারো সরেজমিনে নায়েব রাজ্জাকের বিষয়ে জানতে বুন্দলিতলা গ্রামে পৌছালে মধ্য বয়স্ক শুকুর বিশ্বাস জানান, জমির খাজনা বাবদ নায়েব রাজ্জাককে ১লাখ ৩০হাজার টাকা দিয়েছি কিন্তু তিনি গত ২জানুয়ারি আমাকে ৭০হাজার ৮শত ৪৫টাকার রশিদ দিয়েছেন। ইমান গাজীর অভিযোগ, ১ বছর আগে তার ৪৮ শতক জমির নামপত্তনের জন্য
৪৮ হাজার টাকা চুক্তির অগ্রিম ২৫হাজার টাকা নিয়ে আজও কাজ করেনি নায়েব রাজ্জাক। একই গ্রামের আবু বক্কর বলেন, জমির নাম পত্তনের বিষয়ে
নায়েবের কাছে গেলে তিনি আমার কাছে শতক প্রতি ১ হাজার টাকা করে সর্বমোট তিনি ৩ লাখ টাকা দাবী করলে তাকে ২ লাখ টাকা দিই। তবে সকল ঘটনা আমাদের মোবাইলে রেকর্ডিং করে রাখি। পরে কাজ না হওয়ায় গত ৪/৫ মাস আগে সেই রেকর্ডিং দেখিয়ে সেই টাকা উদ্ধার করি।
গৃহিনী রেশমা বেগম জানান, আমাদের জমির কাগজপত্র ঠিক করতে নায়েব রাজ্জাককে গত ৬/৭ মাস আগে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিলেও এখনো কাজ হয়নি। মুঠো ফোনে এই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, আমার পিতা ফরজান আলী আমাদের জমির খাজনা বাবদ নায়েব
রাজ্জাককে ৮৬হাজার টাকা দিয়েছিলেন। বিনিময়ে নায়েব আমাদেরকে ৬৮হাজার টাকার জমা রশিদ দিয়েছেন। এছাড়াও গত ৮ জানুয়ারি
বাটিকামারি গ্রামের হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে নায়েব রাজ্জাক ও তার অফিস সহকারি ইউনুছসহ ৭জনের বিরুদ্ধে একটি চাদাবাজির মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন। এ সকল তথ্য এই প্রতিবেদকের কাছে অডিও এবং ভিডিওতে সংরক্ষিত আছে।
তবে মুঠো ফোনে নারায়নপুর ইউনিয়ন অফিসের নায়েব আব্দুর রাজ্জাক সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবী করেন।