স্টাফ রিপোর্টারঃ যশোর সদরের সীতারামপুর ঋষিপাড়ায় ভেজাল মবিলের রমরমা কারবার চলছে। আর এই ভেজাল মবিলের ব্যবসা করে অল্প দিনেই অনেক সম্পত্তির মালিক হয়েছেন জসিম নামের এক যুবক।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে জসিম রাতের আধারে আবাসিক এলাকায় একটি খুপড়ি ঘরে পোড়া মবিল থেকে রিফাইনকৃত মবিল প্লাস্টিকের কন্টিনারে ভরে বিভিন্ন নামিদামি কোম্পানির মোড়ক ব্যবহার করে কার্টুনজাত করার পর বাজারে বিক্রি করছে। যশোরের ওলিতে গলিতে গড়ে ওঠা পোড়া মবিল রিফাইনারি কারখানা থেকে ভারতীয় এক ধরণের ক্যামিকাল মিশ্রিত রিফাইনকৃত মবিলের ব্যারেল কিনে আনে জসিম। ওই ব্যারেল থেকে কন্টিনারে মবিল ভরে ভিকো ইঞ্জিন অয়েল ও টারবো রেডিওটার নাম ব্যবহার করে মবিল ও গিয়ার অয়েল বাজারজাত করছে সে। মবিলের কন্টিনারে লেখা আছে ইউএস ফর্মুলা ও আরব আমিরাত (টঅঊ) থেকে আমদানিকৃত। অথচ জসিমের কাছে আমদানি করা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখতে চাইলে সে কিছুই দেখাতে পারেনি।
সরেজমিন ওই এলাকায় অনুসন্ধানে গেলে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সীতারামপুর ঋষিপাড়ার অনেকেই জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে জসিম যশোরের বিভিন্ন পোড়া মবিল রিফাইনারি কারখানা থেকে রিফাইনকৃত ব্যারেল ভর্তি মবিল ক্রয় করে এনে বসতবাড়ির একটি খুপড়ি ঘরে রাতের আধারে প্লাষ্টিক কন্টিনারে ভরে রাতেই এসব পণ্য ভ্যানযোগে অন্যত্র পাচার করে দেয়। সম্প্রতি যশোর সদরের ভায়নার এক ভুঁইফোড় সাংবাদিক জসিমের কারখানায় গিয়ে ভেজাল মবিলের ছবি তোলে। এসময় জসিম পেপারে রিপোর্ট না ছাপার জন্য তাকে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়। এ ব্যাপারে জসিমের স্ত্রীর সাথে কথা বলে সত্যতা পাওয়া গেছে। জসিমের স্ত্রী বলেছেন সব কাগজপত্র বানিয়েই আমরা এই ব্যবসা করি। এছাড়া শহরের নীলগঞ্জ এলাকার আর এক ভুঁইফোড় সাংবাদিকের চলাফেরা রয়েছে ওই মবিল কারখানায়। এদিকে বাজারে এসব ভেজাল মবিলের দাম কম হওয়ায় বড় বড় কোম্পানির মবিল মাঠে মার খাচ্ছে।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্যারেজ ও গাড়ির মালিক জানান, রিফাইনকৃত ভেজাল মবিল ব্যবহারের কারণে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও ইঞ্জিন দ্রæত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভেজাল মবিল ব্যবহার করার কারণে বাস, ট্রাক, মাইক্রো, প্রাইভেট কার, মোটর সাইকেল, স্যালো মেশিন ও পাওয়ার টেলারের মতো যানবাহনের ইঞ্জিন দ্রæত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে যানবাহন মালিকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন। পক্ষান্তরে ভেজাল কারবারি জসিম ফুলে ফেঁপে ঢোল হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ভেজাল মবিল প্যাকেটজাত কারখানাটি আবাসিক এলাকায় গড়ে ওঠায় যেমন পরিবেশ দূষন হচ্ছে তেমনি সাধারণ মানুষ এই দূষনের কারণে নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। ভূক্তভোগী এলাকাবাসি এব্যাপারে যশোর জেলা প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।