রায়হান হোসেনঃ
যশোরের চৌগাছায় ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণ কাজে অনিয়মে বাধা দেওয়ায় আওয়ামীলীগ কর্মীদের সাথে বিএনপি কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে শওকত আলী (৩২) নামের এক বিএনপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ৩ জন।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) উপজেলার সুখপুকুরিয়া ইউনিয়নের পুড়াপাড়ার মোল্যাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শওকত আলী পুড়াপাড়া গ্রামের মোল্যা পাড়ার নজরুল ইসলামের ছেলে। এঘটনায় আহতরা হলেন একই গ্রামের আওয়ামীলীগ কর্মী কিয়াম উদ্দীনের ছেলে শনু মিয়া (৩৫), ইউসুফ আলী (৩০) মৃত ওসমান আলীর ছেলে মুখতার হোসেন (৪০)।
আহত শওকত আলীকে মঙ্গলবার গুরুতর অবস্থায় প্রথমে চৌগাছা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করলে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যশোরে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রেফার করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাইদুর রহমান ইমন। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা রেফার করেন। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতেই শওকত আলীর মৃত্যু হয়।এদিকে শওকত আলীর মৃত্যু খবর পেয়ে হাসপতালে ভর্তি আহত আওয়ামীলীগ কর্মীরা রাতেই পালিয়ে যায়।
মামলার নথি ও স্থানীয়দের সুত্রে জানা যায়, পুড়াপাড়া মোল্যা পাড়ার মিজানুর রহমানের বাড়ির পাশ দিয়ে একটি ইটের সলিং রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছিল। রাস্তাটি দেখভাল করছিল স্থানীয় ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা কামাল হোসেন। রাস্তায় ইটের গাথুনির নিচে বালুর পরিমান কম দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম। এতে বাকবিতন্ডা হয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেনের সাথে। পরে আওয়ামীলীগ নেতা ইউপি সদস্য কামাল হোসেনের নেতৃত্বে কিয়াম উদ্দীনের ছেলে শনু মিয়া, ইউসুফ আলী, সোহারব হোসেন, আইজেল উদ্দীনসহ ১০/১২ জন নজরুল ইসলাম এর বাড়িতে গিয়ে হামলা করে। এসময় লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট করতে থাকলে নজরুল ইসলামের ভাতিজা বিএনপি কর্মী শওকত আলী বাধা দিলে তাকেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে জখম করে। এক পর্যায়ে বড়িতে থাকা লোকজন প্রতিহত করতে গেলে প্রতি পক্ষের তিন জন আহত হয়।
এঘটনায় শওকত আলীর চাচা বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান বাদী হয়ে সাত জনের নাম উল্লেখ করে চৌগাছা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা হবিবর রহমান বলেন, ‘রাস্তা নির্মাণ কাজ আরও ৭/৮ দিন আগেই শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, ইউপি সদস্য নির্বাচনে কামাল হোসেনের প্রতিদ্বন্দি ছিল মিজানুর রহমান। তাদের সাথে পূর্ব থেকেই দ্বন্দ ছিল’।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান বলেন, দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার কারনে বিএনপি কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। এটা খুবই দুঃখজনক। দোষীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা বলে তিনি জানান।
চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় দোষীদের আটকের চেষ্টা চলছে।