সালাহ্উদ্দীন সাগর।
যশোর শহরের এক কাপড়ের দোকান থেকে অভিনব কায়দায় লুকিয়ে রাখা একশ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে র্যাব। গাঁজার এই বিশাল চালানসহ আটক করা হয়েছে শেখহাটির বাসিন্দা বহুল আলোচিত মাদক কারবারি মোঃ মিন্টু গাজীকে (৪৮)। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) বিকেলে যশোর শহরতলীর জামরুলতলা এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৬, যশোর ক্যাম্প জানতে পারে, জামরুলতলার রংধনু মার্কেটের নিচে অবস্থিত মিন্টুর ‘রাত্রি বস্ত্রালয়’ নামের একটি কাপড়ের দোকান আসলে মাদক ব্যবসার গোপন কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দোকানের ভেতরে ছাপা গজ কাপড়ের রোলের মাঝে কৌশলে মোড়ানো অবস্থায় রাখা হচ্ছিল গাঁজার প্যাকেট। এরপর সেগুলো দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন র্যাব-৬ এর যশোর ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল। অভিযান চলাকালে র্যাব সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে মিন্টু গাজী দোকান বন্ধ করে পালানোর চেষ্টা করেন। তবে র্যাবের ঘেরাও এবং তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
র্যাব জানায়, দোকানটি বাইরে থেকে দেখতে একেবারেই সাধারণ কাপড়ের দোকানের মতো। কিন্তু ভেতরে বিশেষভাবে রাখা ছিল নানা রঙের কাপড়ের ভিতর মোড়ানো ১০০ কেজি গাঁজা। জিজ্ঞাসাবাদে মিন্টু স্বীকার করেন, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে স্বল্প দামে গাঁজা সংগ্রহ করে যশোর ও আশেপাশের জেলায় বেশি দামে বিক্রি করে আসছিলেন।
উদ্ধার করা গাঁজার বাজারমূল্য আনুমানিক ২০ লাখ টাকা। মিন্টু গাজী নিজেই দোকানের ভেতরের গাঁজার অবস্থান দেখিয়ে দেন এবং সাক্ষীদের উপস্থিতিতে সেগুলো জব্দ করা হয়।
র্যাব জানায়, দেশের অভ্যন্তরে মাদক চক্র দমনে কাজ করছে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই। ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা, বিদেশি মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারে ধারাবাহিকভাবে সফলতা অর্জন করেছে তারা।
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে গাঁজার চালান আসার তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে র্যাব-৬। এই অভিযানের মাধ্যমে একটি বড় মাদক চক্রের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
গ্রেফতারকৃত মিন্টু গাজীর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ এর আওতায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদক ও আটক আসামিকে কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। র্যাব জানিয়েছে, চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের শনাক্তে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।
র্যাবের এই অভিযানে একটি বড় মাদক চক্রের মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—এই ধরনের চক্র দীর্ঘদিন কীভাবে এতটা সক্রিয় থাকে, এবং স্থানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গাঁজা ব্যবসা চালাতে পারে?
Leave a Reply