1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
ফেনসিডিল নিয়ে ধোঁয়াশা: ষড়যন্ত্রের শিকার এএসপি? - চ্যানেল দুর্জয়
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০১:৫১ পূর্বাহ্ন

ফেনসিডিল নিয়ে ধোঁয়াশা: ষড়যন্ত্রের শিকার এএসপি?

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২১
সিনিয়র এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী

মিতু রহমান : বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ৮৮ বোতল ফেনসিডিল বিক্রি ও তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। অভিযানের আগে ও পরে পুলিশ কর্মকর্তাদের জিডি এবং এজাহারে উদ্ধার করা ফেনসিডিলের সংখ্যা ঠিক থাকলেও কিভাবে এ সংখ্যার ফেনসিডিল বিক্রি করা হয়েছে তার সদুত্তোর কেউ দিতে পারছে না। যে ডায়রির সূত্র ধরে কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে, তাতে লেখাগুলো একাধিক জনের। আবার অভিযানে এএসপি ছাড়াও উপস্থিত শিবগঞ্জ থানার ওসি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। ওসিকে তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়েছে। এসব নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

শাস্তি হিসেবে শিবগঞ্জ সার্কেল থেকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি হওয়া সিনিয়র এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, তার নেতৃত্বে অভিযানে ১৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার হয়েছে। জিডি ও এজাহারে উপস্থিত কর্মকর্তাদের সাক্ষরও রয়েছে। আর যে ডায়রির সূত্র ধরে তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে, তাতে সব লেখা তার নয়; কোনো ষড়যন্ত্রকারী অপর অংশ লিখেছে।

এছাড়া ঘটনার ১৭ দিন পর বিক্রির অভিযোগ মূলত পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের বিব্রত করতে কোনো কুচক্রি মহলের ষড়যন্ত্র বলে জানান সিনিয়র এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী।

তিনি জানান, গত শিবগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর কোনো কোনো প্রার্থী তাকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। আর এতে সাবেক এক পুলিশ কর্মকর্তা ইন্ধন দেন।

আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী আশা করেন, কাগজপত্র পর্যালোচনা ও সঠিক তদন্ত হলে অভিযোগ থেকে রেহাই পাবেন তিনি।

পুলিশ সুপারের নির্দেশে গঠিত প্রাথমিক তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার জানান, কোন মাধ্যমে ফেনসিডিল বিক্রির অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। কিন্তু তারা সদুত্তোর দিতে পারেননি। তাই তাদের বদলি ও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

পরবর্তীতে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে গঠিত তদন্ত কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করবে। এতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ না পেলে তাদের অবশ্যই রেহাই দেয়া হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ৩ এপ্রিল রাতে বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পাশে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে চেকপোস্ট বসানো হয়। এ অভিযানের আগে ও পরে নিয়ম অনুসারে জিডিতে মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহীনুজ্জামান উল্লেখ করেন, সিনিয়র এএসপি আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকী ও শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সুজাউদ্দৌলা সরকার, এএসআই মিজানুর রহমান ও অন্যরা অভিযানে অংশ নেন। তল্লাশির সময় ঢাকাগামী খালেক পরিবহন থেকে নাজিম উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে ৫০ বোতল ও পিংকি পরিবহন থেকে সাইফুল ইসলাম নামে একজনকে ১১০ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ ব্যাপারে এসআই সুজাউদ্দৌলা সরকার পরদিন শিবগঞ্জ থানায় দুটি মামলা করেন। তাতেও দুটি অভিযানে মোট ১৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জব্দ তালিকা প্রস্তুত করেন এসআই সুজাউদ্দৌলা এবং তাতে স্বাক্ষর করে শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম। সাক্ষী ছিলেন, এএসআই মিজানুর রহমান প্রমুখ। আবার পুলিশ পরিদর্শক শাহীনুজ্জামানের ডায়েরির লেখা অনুসারে কর্মকর্তা বিশেষ করে এএসপি সিদ্দিকীকে বদলি করা হয়েছে। অথচ ডায়েরির ওই পাতার সব লেখা তার (এএসপি) নয়।

এদিকে ঘটনার ১৭ দিন পর গত ২০ এপ্রিল অভিযোগ ওঠে পিংকি পরিবহন থেকে ১৯৮ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছিল। কিন্তু এজাহার ও জিডিতে ১১০ বোতল উদ্ধার দেখানো হয়েছে। পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা অভিযোগের সত্যতা পেয়ে পরদিন মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শাহীনুজ্জামান সরকারকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সের ওয়্যার হেডকোয়ার্টারে ও ফেনসিডিল উদ্ধার মামলার বাদী সহকারী পুলিশ পরিদর্শক সুজাউদ্দৌলা সরকারকে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেন। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলায় পুলিশ সদর দপ্তর থেকে শিবগঞ্জ সার্কেল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীকে বরিশাল রেঞ্জে বদলি করেন। তবে জিডি ও এজাহার অনুসারে অভিযানে ওসি সিরাজুল ইসলাম ও এএসআই মিজানুর রহমান মিজান উপস্থিত থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম জানান, তিনি সেদিনের অভিযানে ছিলেন না। জিডির গদ হিসেবে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

একই কথা বলেছেন এএসআই মিজান। মিজান জানান, তিনি ১৬০ বোতল দেখেছেন। বাড়তি ৮৮ বোতলের তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কিভাবে পেয়েছেন তা তিনি জানেন না।

পুলিশ পরিদর্শক শাহীনুজ্জামান সরকার ও এসআই সুজাউদ্দৌলা সরকার তদন্ত চলাকালে এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

শিবগঞ্জের সাধারণ জনগণ পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষায় সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • রবিবার (রাত ১:৫১)
  • ১৯শে মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১১ই জিলকদ ১৪৪৫ হিজরি
  • ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
141
3827975
Total Visitors