আব্দুল্লাহ আল সাকিব ।। যশোর সদর উপজেলার ১২ নং ফতেপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের রাজাপুর গ্রামের মৃত নুর ইসলামের নির্যাতিতা শিশু আমেনার (১২) চিকিৎসা মামলা সংক্রান্ত সহযোগিতা সহ সকল দ্বায়ভার নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছেন ফাতেমা আনোয়ার।
অভিযুক্ত শ্যামলী রানী ও বাদল অধিকারী ঢাকার মহাখালীর বাসিন্দা হওয়ায় শিশু ননির্যাতনের বিষয়ে অভিযোগ গ্রহণ করছিলোনা কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ। যশোর পুলিশের পক্ষথেকে ঘটনা যে এলকায় ঘটেছে (মহাখালি-ঢাকা) সে এলাকার সংশ্লিষ্ঠ থানায় মামলা করার পরামর্শ দেয়া হয়। শিশু আমেনার অভিভাবক বলতে তার বৃদ্ধা নানী ও মা আকলিমা ছাড়া কেউ নেই । দারিদ্রের চরম কষাঘাতে জর্জরিত তাদের অবস্থা । ঢাকায় যেয়ে মামল করার মত সাধ্য তাদের নেই । এক পর্য়ায়ে বিচারের আশা ছেড়ে দিয়ে মেয়েকে সুস্থ করার আপ্রাণ চেষ্টা মা আকলিমার।
খবর পেয়ে শনিবার ২৯ মে যশোর জেনারেল হাসপাতালে আসেন ফাতেমা আনোয়ার এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসা ওষুধপত্র ও বেডের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। এবিষয়ে ফাতেমা আনোয়ার চ্যানেল দুর্জয় কে বলেন আমেনা আমার ফতেপুর ইউনিয়নের মেয়ে ,ওর সকল প্রকার দেখাশোনা আমি করবো। ওর ন্যায় বিচার প্রাপ্তির জন্য আমার পক্ষ থেকে মামলা রেডি করে ঢাকায় লোক পাঠিয়েছি সেখানেই নিয়ম মেনে মামলা হবে মামলা সংক্রান্ত সকল খরচও আমিই বহণ করবো। তিনি আরও বলেন আমি আমেনার পাশে আছি। মানে সার্বক্ষনিক সকল প্রকার সুবিধা অসুবিধা আমি দেখবো । যেহেতু ওর বিবাহ যোগ্য হয়ে উঠতে অনেক দেরী সে পর্যন্ত আমি ওর দেখাশোনা করবো এবং বিবাহযোগ্য হওয়ার পর ওর বিবাহের দ্বায়িত্বও আমার। উল্লেখ্য ফাতেমা আনোয়ার আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১২ নং ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনয়ন প্রতাশী।
আমেনা খাতুনের মা আকলিমা বেগম জানান, পিতৃহারা ৩ সন্তানকে নিয়ে আকলিমা বেগম অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছিলেন। অভাব অনাটন লেগেই থাকতো তার সংসারে। ২০২০ সালের ১০ ফ্রেবুয়ারি সকালে তার বাড়ীতে হাজির হয়, পার্শ্ববর্তী বাগডাঙ্গা গ্রামের শ্রী প্রভাস বৈরাগী ও তার কন্যা শ্যামলী রানী, জামাতা বাদল অধিকারী।এসময় আমেনা খাতুন কে খাওয়া পরা বাদে প্রতিমাসে ৩৫০০ টাকা বেতনে শ্যামলীর রানীর বাসা বাড়িতে কাজের জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেই থেকে আমেনা খাতুন (১২) শ্যমলী ও বাদলের ভাড়া বাড়ী ঢাকার মহাখালির গৃহকর্মীর কাজ করতে থাকে।
হঠাৎ করে গৃহকর্তা শ্যামলী রানী, আমেনা খাতুন কে বাড়ীতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য মোাবাইলে চাপ দিতে থাকে। উপয় না দেখে আমেনা খাতুনের বৃদ্ধা নানি জোহরা বেগম গেল ২৩শে মে ঢাকার গাবতলি পৌছায়।বাদল গাবতলি থেকেয় বৃদ্ধা নানির সাথে আমেনা খাতুন কে যশোরের বাসে তুলে দেয়। নানী দেখে কান্নায় ভেঙে পড়ে শিশু আমেনা। একে একে সব খুলে বলে তার সাথে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ নির্যাতনের কথা ।আমেনা খাতুন জানায় মাসিক বেতনের ৩৫০০ টাকা চাইলেই তার উপর চালানো হতো অমানুষিক নির্যাতন।কারনে অকারনে গরম খুন্তি ছাকায় দগ্ধ হত ছোট্ট আমেনার কোমল শরীর।ছোট ছোট ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে নির্যাতন করা হতো। বেধড়ক মারপিট, খুনতির ছ্যাকা, প্লাস দিয়ে নখ, তুলে দেয়া ছিল নিত্যঘটনা। এমনকি তাকে হাত পা বেধে বুকের উপর পাড়িয়ে নির্যাতন চালানো হয়। সেইসাথে জবাই করে হত্যার প্রচেষ্টাও চালানো হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে যায়।