উজ্জ্বল রায় নিজস্ব প্রতিবেদক নড়াইলঃ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল শঙ্খ। সমুদ্র মন্থনের সময় শঙ্খের প্রথম ব্যবহার হয়েছিল বলে জনশ্রুতি রয়েছে। কথিত আছে, চন্দ্র-সূর্য-বরুণ দেব শঙ্খের একেবারে নিম্নভাগে, মধ্যভাগে প্রজাপতি এবং উচ্চভাগে থাকেন গঙ্গা ও সরস্বতী। তাই শঙ্খধ্বনি এই সকল ঈশ্বরের আশীর্বাদ পেতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানও মেনে নিয়েছে শঙ্খের পবিত্র ধ্বনি নানা জীবাণু থেকে শরীরকে দূরে রাখে। ভগবান বিষ্ণু এবং দেবী লক্ষ্মীর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে শঙ্খ।
ভগবান বিষ্ণু “শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্ম” ধারী রূপে বিরাজমান। সমুদ্র মন্থনের সময় শঙ্খের উপরে দেবী লক্ষ্মী আবির্ভূতা হয়েছিলেন। প্রাচীন ধর্মগ্রন্থে বারংবার শঙ্খের ব্যবহার উল্লেখ করা হয়েছে। পূজা-পাঠ, শুভকার্যের শুভারম্ভ, ভূমিপূজন, জন্ম, বিবাহ, অন্নপ্রাশনে যেমন শঙ্খের ব্যবহার আছে, তেমনি ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে শঙ্খধ্বনি করা হয়। মহাকাব্যের যুগে শঙ্খকে যুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেব দেখানো হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে সূর্যোদয়ের শঙ্খধ্বনি যুদ্ধ শুরু এবং সূর্যাস্তের শঙ্খধ্বনি যুদ্ধ বিরামের ইঙ্গিত বহন করত। সেযুগে যুদ্ধ বিজয়েও শঙ্খধ্বনি দেওয়ার রীতি ছিল।
শঙ্খে দুধ-জলপূর্ণ করে মা লক্ষীকে এবং জলপূর্ণ করে সূর্য উপাসনায় সূর্যদেবকে উৎসর্গ করা হয়। ধনের অধিপতি কুবেরের মূর্তিতে মহাপদ্ম এবং শঙ্খ বিদ্যমান। ভগবদ গীতায় শ্রীকৃষ্ণ এবং পঞ্চপাণ্ডবের শঙ্খের নাম উল্লেখ আছে। শ্রীকৃষ্ণের শঙ্খের নাম “পাঞ্চজন্য”।