রিপন গাজী ও আরিফুল ইসলাম : যশোরের সিতারামপুরে পেয়ারা চুরির অপবাদ দিয়ে রিফাত সুলতান নামে ১৩ বছর বয়সী এক মানষিক ভারসম্যহীন শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে একই গ্রামের শেখ পাড়ার মহিদুল জামান কাজল, নাজমুল সহ তাদের সহযোগীরা।
শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় যশোর সদরের সিতারামপুর শেখ পাড়ায় হাত পা বেঁধে প্রতিবন্ধী রিফাতকে পিটিয়ে নির্যাতন করে ফেলে রাখে পেয়ারা বাগান মালিক কাজল। পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে রিফাতের জ্ঞান ফিরলে রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আহত অবস্থায় দুই দফা রিফাতকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে রিফাতকে বাড়ীতে নিয়ে যান তার অভিভাবকরা।
রিফাতের পরিবারের দাবি হত্যার উদ্দেশ্যে রিফাতকে এভাবে মারা হয়েছে। রিফাত মানষিক ভারসম্যহীন এটা এলাকার সবাই জানে এবং তাঁর প্রতিবন্ধী কার্ডও রয়েছে। রিফাত বারবার বিরক্ত করে সেজন্য রিফাতকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলো বাগান মালিক মহিদুল জামান কাজল এমন দাবি রিফাতের মা জাহানারা বেগমের।
এদিকে নির্যাতনের চারদিন পার হলেও কেউ রিফাতের খবর নিতে আসেনি। উল্টো বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন বাগান মহিদুল জামান কাজল ৷
এই নিউজের ভিডিও দেখতে এই লেখায় ক্লিক করুন
রিফাতের মত একজন মানষিক ভারসম্যহীন প্রতিবন্ধীকে এরকম নির্মম নির্যাতনে হতবাক গ্রামবাসী৷তিন বছর আগে বাবা হারানো মানসিক ভারসম্যহীন রিফাতদের সংসার চলে মায়ের দর্জি কাজের উপার্জন দিয়ে৷ টানাটানির সংসারে সন্তানের জন্য গণমাধ্যম ছাড়া আর কোথাও বিচার চাইবার সাহসটুকুও নেই অসহায় এই পরিবারটির। রিফাতের পরিবারই শুধু নয়। এ ঘটনায় সম ব্যাথায় ব্যথিত এলাকাবাসীও।
নির্যাতনের শিকার মানসিক ভারসম্যহীন রিফাত সুলতান যশোর সদর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সিতরামপুর মধ্যপাড়ার মৃত টিপু সুলতানের ছেলে।
এ ব্যপারে মহিদুল জামান কাজল জানান, রিফাত এ নিয়ে তার বাগানে দুবার পেয়ারা ছিড়তে গেছে। অন্ধকারে তাকে চিনতে না পেরে তারা রিফাত কে মেরেছে। কাজল আরও জানান, ১৫ হাজার টাকায় একটা মিমাংসা করা হচ্ছে।
মহিদুল জামান কাজল বাঘারপাড়া উপজেলা সমবায় কার্যালয়ের সহকারী পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। সরকারী ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে রিফাতের পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে এ ঘটনা ধাপাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছেন মহিদুল জামান কাজল ।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন রিফাতের মা জাহানারা বেগম স্বপ্না।
এ ব্যাপারে জেলা প্রতিবন্ধি বিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিন জানিয়েছেন স্থানীয় থানায় অভিযোগ দেয়ার পর তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।