1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে বাড়ছে সফটসেল কাকড়া চাষে - চ্যানেল দুর্জয়
সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন

সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে বাড়ছে সফটসেল কাকড়া চাষে

  • প্রকাশিত : শনিবার, ১৭ জুন, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে অবস্থিত উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় শ্যামনগর উপজেলায় মানুষের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে সফটসেল কাকড়া চাষ। এই উপজেলাটি সুন্দরবন সংলগ্ন হওয়ায় মাছ, কাঠ ও মধু সংগ্রহ করেই চলে এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকা। সুন্দরবনে পানিতে কুমির, ডাঙায় বাঘ আর ডাকাতদের সাথে যুদ্ধ করেই জীবন কাটে মৌয়াল, বাওয়ালি, জেলেদের জীবন।
বর্ষা মৌসুমে উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে বাড়িঘর প্লাবিত হওয়ার আশংকায় থাকে সাধারণ মানুষ। এমন সব পরিস্থিতিতে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিতে পারলেও বছরের অধিকাংশ সময় বনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকায় পূর্ব পুরুষদের পেশা নিয়ে শংকিত শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার উপকূলীয় এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে নরম খোলসের কাকড়া চাষে পাল্টে গেছে উপকূলীয় এলাকার প্রায় দুই হাজার বনজীবীর জীবনযাত্রা। আর্থিকভাবে এখন তাঁরা হচ্ছেন স্বচ্ছল।
এই চাষ পদ্ধতি বিষয়ে আলাপকালে চাষিরা জানান, শক্ত খোলসের কাকড়া ধরে প্রথমে দুটি কানসহ ৬টি নলি (হাত-পা) কেটে লোনা পানির প্লাস্টিকের বক্সে রেখে দেওয়া হয় খাবার। বক্সে রাখার তিন ঘন্টার মধ্যে কাকড়াটি তার শক্ত খোলস পরিবর্তন করে নতুন খোলস নেয়। এই সময় কাকড়াটি একেবারে নরম থাকে। তিন ঘন্টার মধ্যে ওই কাকড়া তুলতে না পারলে কাকড়াটি পুনরায় শক্ত খোলসে পরিণত হয়। এজন্য প্রতি তিন ঘন্টা পর পর চাষিকে প্রতিটি বক্স পরীক্ষা করতে হয়। শক্ত কাকড়া ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে কেনেন চাষিরা। শক্ত থেকে নরম খোলসে পরিণত করার পর ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়।
২০১৪ সাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় এলাকায় নরম খোলসের কাকড়া চাষ শুরু হয়েছে। এই কাকড়া বিদেশে জনপ্রিয় খাবার। তবে ওই সময় চাষিদের প্রশিক্ষণ না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়েছিল। প্রশিক্ষিত হলেও অনেকে পুঁজির চাষ শুরু করতে পারছিলেন না। বিশ্ব বাজারে নরম খোলশের কাকড়ার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে চাষিদের পাশে উন্নয়ন সংস্থা নওয়াবেঁকী গণমূখি ফাউন্ডেশন ও পিকেএসএফ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা করেছে।
সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও কাকড়ার প্রজনন মৌসুমের কারণে প্রতিবছর পাঁচ মাস সুন্দরবনে কাকড়া আহরণের পাস বন্ধ থাকে। এর ফলে সফট সেল কাকড়া চাষের প্রধান কাচামাল হার্ডসেল কাকড়া বা ক্রাবলেটের স্বল্পতার দেখা দিচ্ছে। বেশি মূল্যে এই ক্রাবলেট কিনতে হয় চাষিদের।
এদিকে, মন্দা আর উৎপাদন খরচ অনুযায়ী মূল্য না পাওয়ায় বিপাকে কাকড়া চাষিরা। তারা বলছেন, সম্ভাবনাময় খাতকে টিকিয়ে রাখতে হলে সুন্দরবনের উপর নির্ভশীলতা কমিয়ে বিকল্প উপায়ে স্বল্প মূল্যে কাকড়ার পোনা সরবরাহের পাশাপাশি চাষিদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে হবে।
শ্যামনগর উপজেলার দাতিনাখালী গ্রামের কাকড়া চাষি আবুল হোসেন কয়াল, মহব্বত আলী জানান, আমরা সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় বংশ পরম্পরায় বসবাস করে আসছি। বাপ-দাদার পেশা ছিল সুন্দরবনে মাছ মধু এবং কাঠ আহরণ। ঝুঁকি থাকলেও তারা ইচ্ছামত বনে যেতে পারত। এখন আর ইচ্ছামত বনে যাওয়ার সুযোগ নেই। বছরের বিভিন্ন সময় বনে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা থাকে। বর্তমানে নরম খোলসের চাষ করে এখন আর্থিকভাবে সচ্ছলতার মুখ দেখছি। স্ত্রী ও সন্তানরাও এ কাজে সহযোগিতা করেন। বিশ্ব বাজার মন্দা থাকায় এ বছর দাম কম পাচ্ছি।
দাতিনাখালি গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, তিনি দেড় বিঘা জমিতে নরম খোলসের প্রজেক্ট করেছেন। মাত্র কয়েক বছরে আশার আলো দেখেছেন। সারা বছর প্রজেক্টে কাজ করে আর্থিকভাবে সাবলম্বী তিনি।
কাকড়া চাষি আরিফুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম, নুর ইসলাম জানালেন, এ বছর তারা লাভের মুখতে পারবেন কি না তা নিয়ে নিয়ে সংশয় রয়েছে।
কাকড়া রপ্তানি কোম্পানি জার্মান বাংলার প্রতিনিধি নেপাল কুমার মন্ডল বলেন, চাষিরা কাকড়া নিয়ে আমাদের কাছে আসলে কাকড়াগুলো প্রথমে গ্রেডিং করা হয়। যেমন গ্রেড এ-১, এ-২, এ-৩, এ-৪ এবং বি ও সি। গ্রেডিং করার পর গ্রেড অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করে তারপর কোম্পানীতে পাঠিয়ে দেই। কোম্পানি সেগুলো প্রোসেসিং করে বিদেশ রপ্তানি করে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় বেসরকারিভাবে দুইটি ও কক্সবাজারে সরকারিভাবে একটি কাকড়া হ্যাচারি স্থাপন করা হয়েছে। এখন কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে সফট সেল কাকড়া চাষে পোনার যে সমস্যা ক্রাবলেটের তা সমাধান হবে।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার (সকাল ৬:০৬)
  • ২০শে মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১২ই জিলকদ ১৪৪৫ হিজরি
  • ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
84
3868079
Total Visitors