ভারতের মুম্বাই হাই কোর্ট কর্তৃপক্ষ বলেছে, মিডিয়া করোনা ভাইরাস ছড়ানোর দায় তাবলীগ জামাতের বিদেশি সদস্যদের উপর চাপিয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে।
শুক্রবার হাই কোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দিল্লির নিযামুদ্দীনের তাবলীগী ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী মোট ২৯ জন সদস্যের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা খারিজ করে দেয়। তাদের বিরুদ্ধে মহামারী আইন, বিপর্যয় মোকাবিলা আইন, এবং ভিসার শর্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিল মহারাষ্ট্র পুলিশ। কিন্তু হাই কোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চের দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, পুলিশ রাজনৈতিক চাপে পড়ে ওই জামাত সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিচারপতি টিভি তালাওয়াড়ে এবং বিচারপতি এম জি সেউলিকরের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, “মনে হচ্ছে, রাজ্য সরকার রাজনৈতিক চাপে পড়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। আর পুলিশও সরকারি নির্দেশের বিরোধিতা করার সাহস পায়নি। যখনই কোনও বিপর্যয় হয়, বা কোনও মহামারী আসে, সরকার একটা বলির পাঁঠা খোঁজে। আর এক্ষেত্রে মনে হচ্ছে, এই বিদেশিদেরই বলির পাঁঠা করার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে।”
ওই তবলিগ জামাত সদস্যদের দাবি ছিল, ভারত সরকারের দেওয়া বৈধ ভিসাতেই তারা এদেশের সংস্কৃতি এবং আতিথেয়তা উপভোগ করতে এসেছিলেন। আর বিমানবন্দরে তাদের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পরই বাইরে বেরনোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এমনকি লকডাউনের সময় তারা কখন কোথায় ছিলেন, সেই সব তথ্য জেলা প্রশাসকদের দিয়েছেন। আবেদনকারীদের এই যুক্তি মেনে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে দেয় মুম্বাই হাই কোর্টের এই ডিভিশন বেঞ্চ।
বস্তুত মার্চ মাসে দিল্লির নিজামুদ্দিনে তবলিগ জামাতের এক ইজতেমায় অংশগ্রহণকারী বহু তবলিগ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হন। তারপরই বিজেপি সরকারের রোষের মুখে পড়েছেন তারা। নির্দেশ অমান্য করে ধর্মীয় কার্যকলাপ এবং জমায়েত করার অভিযোগ ইতোমধ্যেই তবলিগ জামাতের প্রায় ৩৫০০ বিদেশি সদস্যকে ব্ল্যাকলিস্ট বা কালো তালিকাভুক্ত করেছে ভারত সরকার।
বিশ্বের প্রায় ৩৫টি দেশের বাসিন্দা এই তালিকায় আছেন। এর আগে তবলিগ জামাতের বিদেশি সদস্যদের ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে সরকারকে। এবার মহারাষ্ট্র সরকারকে একপ্রকার তিরস্কৃত হতে হল।
সংবাদ প্রতিদিন