মোবাইল মসজিদ। যখন যেখানে প্রয়োজন নিয়ে যাওয়া যায়। জাপান অলিম্পিক ২০২০ সালকে কেন্দ্র করে জাপানের তৈরি বহনযোগ্য মোবাইল মসজিদ বিশ্বব্যাপী চমক জাগালেও ২০১৬ সালে মালয়েশিয়া গাড়ির উপর তৈরি করে ভ্রাম্যমান এ মসজিদ। কিন্তু ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল নামি-দামি ব্রান্ডের পাথর ও টাইলসে অত্যাধুনিক ও নান্দনিক বিলাসবহুল প্রথম মোবাইল মসজিদ তৈরি করে দুবাইয়ের সাত তারকা হোটেল বুর্জ আল-আরব কর্তৃপক্ষ।
অলিম্পিক গেমস ২০২০ উপলক্ষ্যে জাপানের তৈরি বহনযোগ্য ভ্রাম্যমান মসজিদটি ছিল ৪৮ বর্গমিটারের। যা ২৫ টন ওজনের ট্রাকের উপর নির্মিত। এটি কাস্টমাইজ করে সহজে বহনযোগ্য ছিল। ৫০ জন মুসল্লির ওজু ও নামাজের পূর্ণ ব্যবস্থা সম্বলিত মসজিদটি বানাতে জাপানের খরচ পড়ে ৯০ হাজার ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৭৬ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ টাকা।
কিন্তু বিশ্বের প্রথম বহনযোগ্য ভ্রাম্যমান বিলাসবহুল ভ্রাম্যমান মসজিদ তৈরি হয় ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল। ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিলাসবহুল এ মসজিদে নামাজ পড়তে পারবে মাত্র দুইজন।
মসজিদটি রাজকীয় আবহে তৈরি। মসজিদর ৭৫ ভাগ কাজ মূল্যবান বিশুদ্ধ আম্বর পাথর দিয়ে তৈরি করা হয়। বাদামি, লাল, সাদা, নীল, কালো, সবুজ ও ধবধবে সাদা রঙে তৈলস্ফটিক ও সুগন্ধিযুক্ত মহামূল্যবান আম্বর পাথরগুলো দিয়ে সাজানো ছিল মসজিদটি।
বিভিন্ন রঙের খাঁটি এ আম্বর পাথরগুলো স্বচ্ছ উজ্জ্বল ও মধুর মতো হলুদ বর্ণের। যার উপর সূর্যের কিরণ পড়লে তা থেকে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে। ভোরের শিশুর বিন্দুর মতো চকচক করে। আর তা দেখতেও ছিল চমৎকার।
বিশ্বের প্রথম এ ভ্রাম্যমান মসজিদটিতে ইসলামি ভাবধারা ফুটিয়ে তোলার জন্য দেয়ালে অঙ্কন করা হয়েছিল সুসজ্জিত অ্যারাবিক ক্যালিগ্রাফি। যা মসজিদের সৌন্দর্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিল। তৈরি করা হয়েছিল একটি গম্বুজ। গম্বুজটি আকারে ছোট হলেও তা মসজিদের সৌন্দর্যকে পরিপূর্ণ করে দেয়।
বিশ্বের প্রথম এ ভ্রাম্যমান মসজিদের দরজায় ব্যবহার করা হয় কারুকাজসমৃদ্ধ উন্নত মানের কাঠ। দরজায় সেট করা সোনালি হাতলগুলো অন্যরকম রূপ দিয়েছে। বহনযোগ্য ভ্রাম্যমান এ মসজিদের ফ্লোরে ব্যবহার করা হয় অত্যাধুনিক আম্বর টাইলস। বিলাসবহুল রাজকীয় কার্পেট দেয়া হয় আম্বর টাইলসের ওপর।
আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে-
দুবাইয়ের সাত তারকাসমৃদ্ধ হোটেল বুর্জ আল-আরব মূলত এ মসজিদটি বিশ্বের নামি-দামি বিলাসবহুল হোটেল ও ভিআইপি টার্মিনালের জন্য তৈরি করা হয়। দেশটিতে অবস্থিত বিশ্বের অন্যতম জেটেক্স ভিআইপি টার্মিনালে আম্বর পামের তৈরি এই বিশেষ মসজিদটি শোভা পায়। ধারণা করা হয়, এটিই বিশ্বের সবচেয়ে বিলাসবহুল মসজিদ।
উল্লেখ্য ইসলামে এ ধরনের বিলাসবহুল মসজিদে নামাজ আদায়ে যেমন কোনো বিশেষত্ব নেই। আবার নেই কোনো বিশেষ ফজিলত।