1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
সুন্দর বনের বাঘের চামড়া যায় কোথায়? - চ্যানেল দুর্জয়
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৫:৪৫ অপরাহ্ন

সুন্দর বনের বাঘের চামড়া যায় কোথায়?

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

খুলনা ব্যুরো।।সুন্দরবনে দিনকে দিন রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা কমে আসছে। কমে যাওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ শিকারীদের দৌরাত্ব। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুন্দরবনে বাঘের চামড়া ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গসহ চোরাকারবারিরাও ধরা পড়ছে। চলতি বছরেও পাচারকারীদের কাছ থেকে বাঘের চামড়া ও হাড় উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাঘের চামড়ার ওপর চোরাকারবারিদের লোভ এখনো কমেনি। এমনকি তাদের কাছ থেকে বাঘের চামড়া নিতে বিনিয়োগ করছে আর্ন্তজাতিক একটি চক্র। বাঘের চামড়া ছাড়াও মাংস, হাড়, মাথা সবকিছুই পাচার হয়ে যাচ্ছে। একইসঙ্গে পাচার হচ্ছে বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণের অঙ্গপ্রত্যঙ্গও। ফলে বাঘের সংখ্যা কমছে।

এ বিষয়ে বন অধিদপ্তরের সাবেক উপ-প্রধান বন সংরক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তপন কুমার দে চ্যানেল দুর্জয়কে বলেন, ‘সুন্দরবনের মধ্যে গোলপাতা, মধু ও মাছের আহরনে আগের মতোই মানুষের আগাগোনা থাকলেও হতাহতের সংখ্যা অনেকটা কমেছে। এ বিষয়টি সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে। এর মানে সুন্দরবনে বাঘ কমেছে। যার প্রধান কারণ হলো চোরা শিকারীরা বাঘ হত্যা করে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচার করছে। দেশের বাইরে বাঘের চামড়া, মাংস, হাড়, নখ, মাথার ব্যাপক চাহিদা। তাই চোরাকারবারিরা বেশ সক্রিয়।’

বাঘ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৃথিবীর প্রায় সকল দেশে বাঘের চামড়া, হাঁড় ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থেকে তৈরি পণ্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করে আইন প্রণয়ন করেছে এর পরেও চোরাপথে পাচার ও কালো বাজারে বিক্রি হচ্ছে। বাঘ ও শিকার প্রাণী (হরিণ, বুনো মহিষ, সাম্বার, শুকর ইত্যাদি) গোপনে নিধনও হচ্ছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এ সবের ব্যাপক চাহিদা। বিশেষ করে চীনে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে সনাতনী ওষুধ তৈরি করা হয়। সেখানে বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে তৈরি স্যাম্পু ও টনিকের বিশাল বাজার আছে। এগুলো মূলত বেশিরভাগই চীনে পাচার হয়। দক্ষিণ কোরিয়াতেও এর চাহিদা রয়েছে।

সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের শরণখোলায় চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি র‌্যাব ও বন বিভাগ যৌথ অভিযান চালিয়ে বাঘের চামড়াসহ এক পাচারকারীকে আটক করে। সেই ঘটনার তিনদিন পর একই এলাকা থেকে ১৯টি হরিণের চামড়াসহ দুই পাচারকারীকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। গত ১১ মার্চ ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে দুই বিদেশি নাগরিকের কাছ থেকেও চারটি বাঘের হাড় উদ্ধার করা হয়।

সংশ্লিষ্টদের মতে, বাঘের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গুলো প্রধানত নৌপথে দেশের বাইরে চলে যায়। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থান দিয়ে এসবকিছু পাচার হওয়ার তথ্য থাকলেও প্রধান ‘অ্যাক্সেস’ পয়েন্ট হিসেবে ধরা হয় সুন্দরবন সংলগ্ন মংলা পোর্ট। জাহাজের মাধ্যমে এই বন্দর দিয়ে খুব সহজেই এগুলো পাচার হয়ে যায়।

বন কর্মকর্তারা বলছেন, পাচারকারীরা প্রধানত বনদস্যুদের সহায়তায় খাদ্যে বিষ মিশিয়ে ফাঁদ পেতে অথবা গুলি করে বাঘ শিকার করে। এরপর বনের ভেতরেই স্থানীয় পদ্ধতিতে চামড়া, হাড়, অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এবং মাংস সংরক্ষণ করে। পরে সুযোগ বুঝে পাচার করে।

বন বিভাগের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন পর্যন্ত যেসব বাঘের চামড়া বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আটক হয়েছে সেগুলো স্থানীয়ভাবে ক্রেতা সেজে করা হয়েছে। যে কারণে আন্তর্জাতিক চক্রটির পরবর্তী ধাপগুলো জানা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে গভীর তদন্ত হওয়া দরকার।

তবে ইন্টারপোল তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে সুন্দরবনের বাঘের অঙ্গপ্রতঙ্গগুলো মূলত পাচার হয় ভারত, মিয়ানমার ও মালয়েশিয়ায়। এসব দেশের বাজার থেকে পরবর্তীতে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়াতে পাচার হয়ে যায়।

বন অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ড. তপন কুমার দে বলেন, ‘বাঘ ও হরিণ শিকারী এবং ডাকাতের উপদ্রব বন্ধের জন্য র‌্যাব, পুলিশ, কোষ্টগার্ড ও বনবিভাগ সমন্বয়ে গোটা সুন্দরবনে নিয়মিতভাবে যৌথ অভিযান চালাতে হবে। একইসঙ্গে চিহ্নিত বাঘ ও হরিণ শিকারীদের ধরার জন্য গোয়েন্দা তৎপরতাও বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিটি এলাকায় বন বিভাগের টহল জোরদার ও স্মার্ট পারোলিং পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।’

বাংলাদেশ প্রাণিবিজ্ঞান সমিতির এই নেতা আরো বলেন, ‘চোরা শিকারীদের বাঘ হত্যা ও পাচার ছাড়াও বাঘের অস্তিত্ব রক্ষায় বাঘের অন্যতম প্রধান হুমকি শিকারী প্রাণীগুলো পাচার। সুন্দরবনে বাঘের শিকার প্রাণীর মধ্যে চিত্রা হরিণ, শুকর, ও বানর রয়েছে। বাঘের সংখ্যা বাড়াতে হলে শিকার প্রাণীর (হরিণ) সংখ্যা বাড়াতে হবে। সকলকে বাঘ সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় বিপন্ন এ প্রাণীটি আমাদের দেশ থেকে অচিরেই হারিয়ে যাবে।’

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • শুক্রবার (বিকাল ৫:৪৫)
  • ৩রা মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৪শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ২০শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
339
3380006
Total Visitors