নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
এ যেন কোনো সিনেমার প্লট! যে স্বামী মারা গেছেন ভেবে শাঁখা-সিঁদুর পরা ছেড়েছিলেন, ২৫ বছর পর তারই হদিস পেলেন স্ত্রী। শুনতে খানিক অবাক লাগলেও এই ঘটনার সঙ্গে সিনেমার চিত্রনাট্যের কোনো মিল নেই। বাস্তবে ভারতের দণি দিনাজপুরে এই ঘটনা ঘটেছে।
প্রায় ২৫ বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে দিল্লিতে কাজ করতে গিয়েছিলেন ভারতের দণি দিনাজপুর জেলার হিলির সানপাড়ার বাসিন্দা সুটকা মাহাতো (৬৫)। বাড়ি ফেরার পথে ট্রেনেই হারিয়ে যান সুটকা। তারপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি। সম্প্রতি ওই জেলার পতিরাম এলাকায় রাস্তার ধারে স্বামীর খোঁজ পান স্ত্রী ফুলমতি মাহাতো।
বুধবার পতিরাম থানার উদ্যোগে ওই বৃদ্ধকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তার পরিবারের হাতে। বর্তমানে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় রয়েছেন। ২৫ বছর পর তাকে ফিরে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই খুশি পরিবারের সদস্যরা। পতিরাম থানার পুলিশকে তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২৫ বছর ধরে সুটকাকে নিরুদ্দেশ ভেবে আসছিলেন পরিবারের সদস্যরা। স্বামী আর বেঁচে নেই মেনে নিয়ে বিধবার জীবনযাপন করছিলেন স্ত্রী। বাবা নেই জেনে বড় হয়েছে তার ছেলেমেয়েরা। সেই গৃহকর্তা হঠাৎ বাড়ি ফিরে আসতে তারাও খানিক হকচকিত হয়ে পড়েছেন। সুটকা ২৫ বছর পর বাড়ি ফিরতেই তাকে দেখার জন্য ভিড় করেছে এলাকাবাসী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পতিরাম থানার বিদ্যেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় হঠাৎ করেই আবির্ভাব হয় সুটকার। বেশ কয়েকদিন ধরেই তিনি সেখানে থাকতেন। পুলিশের কাছে সেই ভবঘুরের খোঁজ যায়। এরপর খোঁজ খবর করতে বৃদ্ধের নাম পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। তারাই ওই বৃদ্ধকে খুঁজে বের করে। খুঁজে পাওয়ার পর বৃদ্ধের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। প্রথমে পরিবারের সদস্যরা তাকে চিনতে পারেননি। কারণ আগের সঙ্গে বর্তমান চেহারা আমূল বদলে গেছে। শেষমেশ তাকে তারা চিনতে পারেন। ২৫ বছর পর স্বামীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্ত্রী।
এই প্রসঙ্গে পতিরাম থানার ওসি সৎকার সাংবো বলেন, ‘ওই ভবঘুরে পতিরামের আশেপাশের এলাকায় ঘুরছিল। তার খোঁজ খবর করে পরিবারের সন্ধান পাই। অবশেষে ২৫ বছর পর তাকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়া হলো।’
প্রতিবেশী মিঠুন দাস বলেন, ‘তিনি কিছুদিন ধরে পতিরামেই ছিলেন বলে জানতে পারলাম। পুলিশ ওই ব্যক্তির খোঁজখবর করে। অবশেষে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে। পরিবারের সবাই ভেবেছিল তিনি মৃত। এখন সেই বৃদ্ধকে ফিরে পেয়ে খুশি পরিবার। আমরা সবাই এই ঘটনায় অবাক।’