নিজস্ব প্রতিবেদক : ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চাকরিচ্যুতির নির্দেশ থাকলেও তা মানছেন না বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম। বুধবার জালিয়াতির অভিযোগে দুষ্ট শিক্ষিকা সুষমা শিরিনা নার্গিসের নাম সংযুক্ত করে বেতনশীটে স্বাক্ষর করাতে গেলে তা ফিরিয়ে দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার। বৃহস্পতিবার তার নাম বাদ দিয়ে পুণরায় বেতনশীট জমা দিলে তাতে স্বাক্ষর করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ।
এর আগে জাল সনদের বিষয়ে অবগত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ ৭ অক্টোবর তার বেতন বন্ধ করে দিয়েছেলন। পরে হাইকোর্টে রিট করে সে বেতন ফের বাগিয়ে নিতে শুরু করেন নার্গিস। তারপর ফের সংবাদ প্রকাশ করা হলে নড়েচড়ে বসে বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষ । সুষমা শিরিনা নার্গিসকে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের পর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ) কে চুড়ান্ত রিপোর্ট প্রেরণ করে এনটিআরসিএ। তারপর বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন নার্গিস।
তবে শেষরক্ষা হয়নি। গেল ১৮ মে শিক্ষা মন্ত্রণালায়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অভ্যন্তরীন নিরীক্ষা শাখা সারাদেশে ৬৭৮ জন জাল সনদধারী যে শিক্ষকদের তালিকা করেন সে তালিকায় ৪৮৯ নম্বরে রযেছে ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কম্পিউটার শিক্ষিকা সুষমা শিরিনা নার্গিসের নাম এবং ফেরত দিতে বলা হয়েছে সতের লক্ষ টাকা।আদেশে জাল সনদধারীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক ফৌজদারি অপরাধের মামলা দায়েরের কথা বলা হলেও অজ্ঞাত কারণে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে দিয়ে নিয়মিত ক্লাস ও পরিক্ষা নেয়াচ্ছেন। স্কুলটিতে বুধবার থেকে শুরু হওয়া অর্ধবার্ষীকি পরিক্ষার হলে ডিউটি এবং খাতাও দেখছেন নার্গিস। এছাড়া কৌশলে বেতন তুলতেও সহযোগিতা করছেন রবিউল ইসলাম।
এ ব্যাপারে উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনুপ দাশ জানান, ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটি না থাকায় বেতনশিটে তিনি স্বাক্ষর করে আসছেন। ওই স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষিকা সুষমা শিরিনা নার্গিসের জাল সনদের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় তার বেতন বন্ধ করে দিয়েছেন। এবং প্রধান শিক্ষককে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১০ সালের পহেলা জানুয়ারি শিক্ষক নিবন্ধনের জাল সনদ দিয়ে এমপিওভুক্ত হয়ে বেতন উত্তোলন করে আসছিলেন শিক্ষিকা সুষমা শিরিনা নার্গিস। এরমধ্যে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ-এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, হুমায়ুন কবির নামে এক ব্যক্তির রোল ও রেজিস্ট্রেশন ব্যবহার করে সুষমা শিরিনা নার্গিস জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন, প্রমাণিত হয়েছে। তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করে এনটিআরসিএ কে অবহিত করতে নির্দেশ দেয়া হয় ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।