ছাকিন হোসেন: যশোর সদর উপজেলার ইছালী মাধ্যমিক বিদ্যালের গণিত শিক্ষক মনি শংকর ঘোষাল কে শোকজ করায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। ওই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে নানা কর্মসূচি পালন করছে৷ তাঁদের দাবি শোকজ প্রত্যাহার না করা হলে তারা ক্লাসে ফিরবেনা৷
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই তারা ক্লাস বর্জন করে স্কুল কম্পাউন্ডে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকে৷
জানাগেছে, গেল ২৯ শে জুলাই আশুরার ছুটির দিনে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীরা স্কুলের পাশে বনভোজনের আয়োজন করে। ওই আয়োজনে তাদের ক্লাস টিচার মনি শংকর ঘোষাল ও কামরুজ্জামান বাচ্চুকে আমন্ত্রণ জানায় শিক্ষার্থীরা। ওই আমন্ত্রণে অংশ নেয়ার জন্য ৩১ জুলাই বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম মনি শংকর কে আশুরার ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুন্ন হয়েছে মর্মে শোকজ করেন। একই সাথে ১১(এফ) ধারায় প্রতিস্বাক্ষরকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগ আনা হয়। এরপর ফুঁসে ওঠে বনভোজনের আয়োজক শিক্ষার্থীরা৷
তাঁদের দাবি বনভোজনের আয়োজন করেছে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা। তারা চাঁদা তুলে এ আয়োজন করে এবং মনি শংকর ঘোষাল ও কামরুজ্জামান বাচ্চু কে আমন্ত্রণ করে। তাহলে মনি শংকর ঘোষাল কে কেন শোকজ করা হবে?
অবিলম্বে শোকজ প্রত্যাহারের দাবিতে গত মঙ্গলবার তাঁরা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলন করলে প্রধান শিক্ষক শোকজ প্রত্যাহারের আশ্বাস প্রদান করেন৷ কিন্তু পরবর্তীতে শোকজ প্রত্যাহার না করায় বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফা আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, কাউকে না জানিয়ে মনি শংকর ঘোষাল বনভোজনের আয়োজন করে পবিত্র আশুরার ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট করেছে এ জন্য তাকে শোকজ করা হয়েছে৷ অপর শিক্ষক কামরুজ্জামান বাচ্চু তার স্কুলের লাইব্রেরিয়ান। তিনি ষষ্ট শ্রেণীর কয়েকটি ক্লাস নেন, তার বাড়িও এখানে সেজন্য তাকে শোকজ করা হয়নি৷
গনিত শিক্ষক মনি শংকর ঘোষাল বলেন, শোকজে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। শিক্ষার্থীরা ছুটির দিনে বিদ্যালয়ের বাইরে একটি বনভোজনের আয়োজনে তাকে নিমন্ত্রন করে। তিনি শিক্ষার্থীদের নিমন্ত্রণে সেখানে যান এবং খাওয়া দাওয়া করে চলে আসেন৷ এরপর তিনি জানতে পারেন তার বিরূদ্ধে ভিত্তিহীন কিছু অভিযোগ এনে তাকে শোকজ করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে স্কুলের বেতনবিলে স্বাক্ষর করার দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ বলেন, শোকজের ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেননা। যেহেতু স্কুলের কমিটি নেই প্রধান শিক্ষক কাউকে শোকজ করতে পারে কিনা প্রশ্ন তাঁর। ওই শোকজ লেটারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমতি না নিয়ে ১১ (এফ) রেফারেন্স ব্যবহার করার জন্য প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম কে শোকজ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুপ দাশ।