বিশেষ প্রতিনিধিঃ যশোরের চৌগাছার ৬টি প্রাইভেট কিনিকে অভিযান চালিয়ে ৪টিকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে যশোরের স্বাস্থ্য বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১২ টা থেকে ২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত শহরের এসব কিনিকে সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি দল অভিযান চালিয়ে এই নির্দেশ দেন। অভিযানের নেতৃত্ব দেন চৌগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রকৌশলী এনামুল হক।

অভিযানে চৌগাছা উপজেলা শহরের কপোতাক্ষ কিনিক, মায়ের দোয়া পাইভেট কিনিক, বিশ্বাস ডায়াগনস্টিক ও পল্লবী কিনিককে লাইসেন্স নবায়ন না থাকা, সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার ও পর্যাপ্ত নার্স না থাকাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সবরকমের চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেয়া হয়।

এসময় পল্লবী কিনিকে ভর্তি ১৫ রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয়া হয় এবং কিনিকটির মালিক গ্রাম্য ডাক্তার মিজানুর রহমান ও কিনিকের একজন মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট জাহিদুর রহমানের প্রেসকিক্রপশন প্যাডে ডাক্তার লেখার অপরাধে তাদের তাদের সতর্ক করে তাদের প্রায় ২ হাজার প্রেসক্রিপশন প্যাড (চিকিৎসাপত্র) পুড়িয়ে ফেলা হয়। অভিযানকালে দেখা যায় মায়ের দোয়া প্রাইভেট কিনিকের ঔষধ রাখার ফ্রিজে মাংস ও ব্লাড পাশাপাশি রাখা হয়েছে। ফ্রিজটির গোড়ায় অনেকগুলি ব্যাঙ লাফাচ্ছে।

অপারেশন থিয়েটারের পাশের জানালা খোলা এবং রোগী রাখার বেডে ময়লা পড়ে থাকায় তাৎক্ষণিকভাবে কিনিকটির সকল কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়া এসব কিনিক গুলোকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কিনিকগুলির লাইসেন্স নবায়নসহ ডাক্তার ও নার্সদের কাগজপত্র প্রদর্শন ও যে কিনিকে যে যে ত্রুুটি রয়েছে তা সমাধানের নির্দেশ দেয়া হয় ।পরবর্তী পরিদর্শনের সময়ে নবায়নসহ সকল কাগজপত্র ও সার্বিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারলে কিনিকগুলোকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেয়া হবে।

এ বিষয়ে অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া যশোরের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ও যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ বলেন, ৬টি কিনিকের মধ্যে কপোতাক্ষ কিনিক, বিশ্বাস ডায়াগনস্টিক, মায়ের দোয়া কিনিক ও পল্লবী কিনিককে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সকল প্রকার চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখে কাগজপত্র হালনাগাদ ও কিনিকের স্বাস্থ্য সেবার পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই নির্দেশ না মানলে কিনিকগুলিকে স্থায়ীভাবে সিলগালা করে দেয়া হবে। পল্লবী কিনিকে ভর্তি থাকা ১৫জন রোগীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্থানান্তরের জন্য ৩দিন সময় দেয়া হয়েছে এবং তাদের দুজনকে ভুয়া ডাক্তার লেখার অপরাধে সতর্ক করে দেয়া হয় ও তাদের প্রেসক্রিপশন প্যাড (চিকিৎসাপত্র) পুড়িয়ে দেয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, নোভা এইড প্রাইভেট হাসপাতালের সার্টিফিকেটধারী নার্স সংকট রয়েছে এবং এছাড়া মধুমতি প্রাইভেট হাসপাতালের ইন্সপেকশন প্রক্রিয়াধীন থাকায় এই দুটির কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আগামী শনিবার উপজেলার অন্যান্য কিনিকগুলিতেও অভিযান চালানো হবে বলেও তিনি নিশ্চিত করেন।