1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
প্রহ্লা‌দ ছিলেন পরম হ‌রিভক্ত - চ্যানেল দুর্জয়
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:১৭ পূর্বাহ্ন

প্রহ্লা‌দ ছিলেন পরম হ‌রিভক্ত

  • প্রকাশিত : রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রহ্লা‌দের পৌত্র ব‌লি । প্রহ্লা‌দ ছিলেন পরম হ‌রিভক্ত । ব‌লি ছিলেন বিষ্ণু‌দ্বেষী । বিষ্ণু‌নিন্দা করার জন্য প্রহ্লাদ ব‌লি‌কে অ‌ভিশাপ দি‌য়ে‌ছিলেন – ” বিষ্ণু‌নিন্দার জন্য রাজ্য হারা‌বে ।তোমার দারুণ অধঃপতন হ‌বে । ” ব‌লি ইহাতে ভয় পাইয়া ব‌লি‌লেন – ” কি উপায় হ‌বে , পিতামহ ? এমন শাপ কেন দি‌লেন ? “

প্রহ্লাদ বলি‌লেন – ” উপায় আবার কি ? শ্রীহ‌রি‌তে ভ‌ক্তি জন্মা‌লেই সব ফি‌রে পা‌বে । “

প্রহ্লাদ হ‌রিভক্ত ছি‌লেন – তাই ব‌লিয়া ই‌ন্দ্রের প্রতি বি‌দ্বেষ তাঁহার কম ছিল না । দেবতা‌দের তি‌নি শত্রু ব‌লিয়াই ম‌নে করি‌তেন । একশত বৎসর ধ‌রিয়া প্রহ্লা‌দ দেবতা‌দের স‌ঙ্গে অ‌বিরত যুদ্ধ চালান । বৃদ্ধ বয়‌সে প্রহ্লাদ পরা‌জিত হইয়া রাজত্ব ত্যাগ ক‌রেন । তি‌নি পৌত্র ব‌লি‌কে রা‌জ্যে অ‌ভি‌ষিক্ত ক‌রিয়া গদ্ধমাদন পর্ব্ব‌তে তপস্যার জন্য চ‌লিয়া যান ।

ব‌লি রাজা হইয়া দেবতাদের স‌ঙ্গে যুদ্ধ চালাইতে থাকেন । ব‌লির অ‌ন্ত‌রে বিষ্ণুভ‌ক্তি তখনও জা‌গে নাই । পিতামহের অ‌ভিশা‌পের ফ‌ল ফ‌লিল । ইন্দ্র বিষ্ণুর সহায়তায় ব‌লি‌কে রাজ্যভ্রষ্ট ক‌রি‌লেন ।ই‌ন্দ্রের ভ‌য়ে ব‌লি নানাস্থা‌নে লুকাইয়া বেড়াই‌তেন । একবার তি‌নি গর্দ্দ‌ভের রূপ ধ‌রিয়া ভ্রমণ ক‌রি‌তে‌ছি‌লেন । ছদ্মরূপ ধ‌রিলেও তাহা দেবতা‌দের দৃ‌ষ্টি এড়ায় না । ইন্দ্র তাঁহা‌কে দে‌খিয়া চি‌নিয়া ব‌লি‌লেন – ” হে দৈত্যরাজ , আজ না হয় তু‌মি রাজ্যহারা হ‌য়েছ । তাই ব‌লে এ কি দুর্গ‌তি তোম‌রি ! ছি ছি ! কাপুরু‌ষের মত তু‌মি একটা গর্দ্দ‌ভের মধ্যে আত্মগোপন ক’‌রে আছ ! বড়ই লজ্জার কথা । “

দৈত্যরাজ উত্তর দি‌লেন – ” এ‌তে আর লজ্জা বা দুঃখ কি আ‌ছে ? তোমা‌দের হত্তাকর্ত্তা বিধাতা বিষ্ণু মৎস , কূর্ম্ম , বরাহ ইত্যা‌দির রূপ ধ‌রে‌ছি‌লেন প্র‌য়োজন‌সি‌দ্ধির জন্য । তু‌মি নি‌জেও ব্রহ্মহত্যা ক‌রে মানস – স‌রোব‌রে পদ্মপাতার তলায় আশ্রয় নি‌য়ে‌ছি‌লে ।

আজ আমার দু‌র্দ্দিন – তাই আমাকে ধিক্কার দিচ্ছ । ইন্দ্র , আমার এ‌দিন থাকবে না । চাকা উ‌ল্টে যাচ্ছে । ইহ‌লো‌কের ঐশ্বর্য্য , ধনসম্পদ আজ আ‌ছে , কাল নেই । তা নি‌য়ে গর্ব্ব করছ , কর । দু’‌দিন পরে তোমার দশাও এম‌নি হবে । “

দৈত্যগুরু ব‌লি‌কে নানাস্থা‌নে খুঁ‌জি‌তে খুঁ‌জি‌তে সহসা একদিন আ‌বিস্কার করি‌লেন । তি‌নি ব‌লি‌কে বিশ্ব‌জিৎ য‌জ্ঞে অ‌ভি‌ষিক্ত ক‌রিলেন । সেই য‌জ্ঞের অ‌গ্নি‌তে আহু‌তি দিবামাত্র ই‌ন্দ্রের র‌থের মত এক‌টি রথ , ই‌ন্দ্রের অ‌শ্বের মত অশ্ব , সিংহ‌চি‌হ্নিত ধ্বজা , স্বর্ণময় ধনু , দিব্য কবচ ও দুই‌টি অক্ষয় বা‌ণে পূর্ণ তূণ উত্থিত হইল । শুক্রাচার্য্য এক‌টি বিজয়শঙ্খ দান ক‌রি‌লেন ।

নবরূ‌পে স‌জ্জিত হইয়া ব‌লি দৈত্য‌সেনা লইয়া প্রথ‌মে পৃ‌থিবীর রাজ্য অ‌ধিকার ক‌রি‌লেন ও তারপর স্বর্গরাজ্য – জ‌য়ের জন্য যাত্রা ক‌রি‌লেন । দেবগণ ভীত হইয়া বৃহস্প‌তির শরণ লই‌লেন ।

বৃহস্প‌তি ব‌লি‌লেন – ” তোমরা যুদ্ধ কর‌তে যেও না । তোমরা এখন দুর্ব্বল । শুক্রাচার্য্য সঞ্জীবনী বিদ্যার দ্বারা দৈত্য‌দের বাঁ‌চিয়ে দে‌বে । তা ছাড়‌া , দুর্ব্বাসার অভিশাপ তোমা‌দের উপর চল‌ছে । তোমরা সব স্বর্গ হ’‌তে স’‌রে পড় । মর্ত্ত‌লো‌কে গিয়ে মানুষ ও জীবজন্তুর ম‌ধ্যে লু‌কি‌য়ে থা‌ক । “
ব‌লি বিনাযু‌দ্ধে স্বর্গরাজ্য অধিকার ক‌রিয়া লই‌লেন ।

শুক্রাচা‌র্য্যের উপ‌দে‌শে ব‌লি একশত বার অশ্ব‌মেধ যজ্ঞ ক‌রিলেন ।

বহস্প‌তি দেবতা‌দের উপ‌দেশ দি‌লেন – ” দেখ , সমুদ্রমন্থন ক’‌রে অমৃত উদ্ধার করতে না পার‌লে আর দৈত্য‌দের তাড়া‌নো যা‌বে না । অমৃত পেলে তোমরা অমর হ’‌য়ে যাবে ।

শুক্রাচা‌র্য্যের সঞ্জীবনী বিদ্যা তখন বে‌শি অ‌নিষ্ট কর‌তে পার‌বে না । সমুদ্রমন্থন খুব দুরূহ কাজ । তোমরা একা পারবে না – দৈত্য ও দেবতা দুই দ‌লে মি‌লে মন্থন কর‌তে হবে । ব‌লির কা‌ছে গি‌য়ে প্রস্তাব ক‌রো । ও‌দের সাহা‌য্যে সমুদ্রমন্থন ক’‌রে অমৃত উঠলে ফাঁ‌কি দি‌য়ে তোমরা অমৃতভাণ্ডটা অ‌ধিকার ক’‌রে নি‌তে পার‌বে । বিষ্ণুর স‌ঙ্গে পরামর্শ কর । “

দেবগণ ব‌লির স‌ঙ্গে সাক্ষাৎ ক‌রিয়া সমুদ্রমন্থনের প্রস্তাব ক‌রি‌লেন । ব‌লি সম্মত হই‌লেন । দেবতারা দৈত্য‌দের সঙ্গে যোগ দিয়া সমুদ্রমন্থন ক‌রিয়া অমৃত অধিকার ক‌রিলেন । তাহা‌তে দেবাসু‌রে সংগ্রাম ঘোরতর হইয়া উ‌ঠিল । দেবতারা কিছু‌তেই স্বর্গরাজ্য হই‌তে দৈত্য‌দের তাড়াই‌তে পারি‌লেন না । দেবতামা অ‌দি‌তি বিষ্ণুর শরণাপন্ন হই‌লেন । অ‌দি‌তি ব‌লি‌লেন – ” বৎস , তু‌মি ছাড়া ত ‘ আমার ছে‌লে‌দের আর স্বর্গরাজ্য ফি‌রে পাওয়ার উপায় দেখ‌ছি না । তু‌মি একটা উপায় কর । “

বিষ্ণু বলি‌লেন – ” মা , প্র‌তিকার করবার জন্য তোমার গ‌র্ভেই আ‌মি একবার জন্ম নেব । তু‌মি নি‌শ্চিন্ত হ‌য়ে যাও । এবার আ‌মি বামন হয়ে জন্মাব । “

শ‌্রী‌বিষ্ণু অ‌দি‌তির গ‌র্ভে বামনরূপে জন্ম লই‌লেন ।

ক‌য়েক বৎসর প‌রের কথা । নর্ম্মদাতী‌রে ভূগুকচ্ছ নামক স্থা‌নে ব‌লি এক‌টি বিরাট যজ্ঞ ক‌রিলেন । সে য‌জ্ঞে ব‌লি যে যাহা চা‌হি‌তে‌ছিল , তাহাই দান করি‌তে‌ছিলেন । বাম‌ন‌দেব সেই যজ্ঞস্থ‌লে অ‌তি‌থি হইলেন । ব‌লি বামন‌দেবকে সমাদর ক‌রিয়া পাদ্য – অর্ঘ্য দিয়া অভ্যর্থনা ক‌রিয়া জিজ্ঞাসা ক‌রিলেন – ” হে ব্রাহ্মণ , আপনার প্রার্থনা কি ? যা চান তা- ই পাবেন । “
বামন বলি‌লেন – ” আমার প্রার্থনা সামান্য । আ‌মি ধনরত্ন চাই না , আ‌মি চাই সামান্য ত্রিপাদ ভূ‌মি । “
শুক্রাচার্য্য দে‌খিয়া বু‌ঝি‌লেন – এই বামন নিশ্চয় ছদ্ম‌বে‌শী বিষ্ণু । ইহার উ‌দ্দে‌শ্যে ভাল নয় । ব‌লি‌কে তি‌নি ব‌লি‌লেন – ” মহারাজ , সাবধান ! এই বামন যা চাই‌বে , তা – ই‌ দি‌তে সম্মত হ‌বেন না । এই বামন এ‌সে‌ছে আপনা‌কে ছলনা কর‌তে । “
ব‌লি ব‌লি‌লেন – ” আ‌মি যখন অঙ্গীকার ক‌রে‌ছি , তখন ই‌নি যা চান , তা – ই দেবই । “

দান ক‌রিবার আগে আচমন ক‌রি‌তে হয় । আচম‌নের জল যাহাতে ব‌লি না পান , সেজন্য শুক্রাচার্য্য ভূঙ্গারের মধ্যে প্র‌বেশ ক‌রিয়া জল‌রোধ ক‌রি‌লেন ।ভূ্ঙ্গার ভরা , অথচ জল প‌ড়ে না ! তখন বামন এক‌টি কুশ লইয়া ভূঙ্গা‌রের ন‌লের ম‌ধ্যে খোঁচা দিলেন – তাহা‌তে শুক্রাচা‌র্য্যের এক‌টি চোখ কানা হইয়া গেল ।
যাহাই হোক , ব‌লি আচমন ক‌রিয়া দা‌নে উদ্যত হই‌লেন । বামন‌দেব তখন বিশ্বরূপ ধারণ ক‌

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার (সকাল ৭:১৭)
  • ২৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২০শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
321
3284564
Total Visitors