উজ্জ্বল রায় (নড়াইল জেলা) প্রতিনিধিঃ
“গিরি—বাসো গিরিবনে নিত্যং গীতাধ্যয়নতৎপরঃ ।
গংভীরাচলবুদ্ধিশ্চ গিরিনামা স উচ্যতে ॥ -(জ্যোতির্মঠাম্নায়- ৬)
অর্থাৎ, যিনি পার্ব্বত্য বনে বাস করেন, সর্ব্বদা গীতাপাঠে নিরত, গম্ভীর ও স্থিরবুদ্ধি, তাঁহার নাম “গিরি”।
“পর্ব্বত”—
বসন্ পর্বতমূলেষু প্রৌঢং জ্ঞানং বিভর্তি যঃ ।
সারাসারং বিজানাতি পর্বতঃ পরিকীর্ত্যতে ॥ -(জ্যোতির্মঠাম্নায়- ৭)
অর্থাৎ, যিনি পর্ব্বতমূলে বাস করিয়া দৃঢ়জ্ঞান ধারণ করেন, যিনি সার (নিত্য) ও অসার (অনিত্য) বিষয় জানেন, তাহাকে “পর্ব্বত” বলিয়া অভিহিত করা হয়।
“সাগর”—
তৎবসাগরগম্ভীর জ্ঞানরত্নপরিগ্রহঃ ।
মর্যাদাং বৈ ন লঙ্ঘ্যেত সাগরঃ পরিকীর্ত্যতে ॥ -(জ্যোতির্মঠাম্নায়- ৮)
অর্থাৎ, যিনি তত্ত্ববিষয়ে সাগরবৎ গম্ভীর, যিনি জ্ঞানরূপ রত্নের ধারণ করেন এবং শাস্ত্রমর্যাদা লঙ্ঘন করেন না, তিনি “সাগর” বলিয়া কথিত হন।
“সরস্বতী”—
স্বরজ্ঞানরতো নিত্যং স্বরবাদী কবীশ্বরঃ ।
সংসারসাগরাসারহন্তাঽসৌ হি সরস্বতী ॥ -(শৃঙ্গেরীমঠাম্নায়- ৬)
অর্থাৎ, যিনি সর্ব্বদা বেদের স্বরজ্ঞানে রত, স্বরোচ্চারণে নিপূণ ও কবিশ্রেষ্ঠ এবং অসার সংসার সাগরের হন্তা তাঁহার নাম “সরস্বতী”।
“ভারতী”—
বিদ্যাভরেণ সম্পূর্ণঃ সর্বভারং পরিত্যজন্ ।
দুঃখভারং ন জানাতি ভারতী পরিকীর্ত্যতে ॥ -(শৃঙ্গেরীমঠাম্নায়- ৭)
অর্থাৎ, যিনি সকল ভার পরিত্যাগ করিয়া বিদ্যাভারের দ্বারা পরিপূর্ণ, এজন্য দুঃখভারকে জানেন না, তাঁহাকে “ভারতী” বলা হয়।
“পুরী”—
জ্ঞানতত্ত্বেন সম্পূর্ণঃ পূর্ণতত্ত্বপদে স্থিতঃ ।
পরব্রহ্মরতো নিত্যং পুরীনামা স উচ্যতে ॥ -(শৃঙ্গেরীমঠাম্নায়- ৮)
অর্থাৎ, যিনি জ্ঞানতত্ত্বের দ্বারা পরিপূর্ণ, যিনি পরিপূর্ণতত্ত্বে অবস্থিত, সর্ব্বদা পরব্রহ্মে নিরত, তাঁহার নাম “পুরী”।
“তীর্থ”—
ত্রিবেণীসঙ্গমে তীর্থে তত্ত্বমস্যাদিলক্ষণে ।
স্নায়াত্তত্ত্বার্থভাবেন তীর্থনাম্না স উচ্যতে ॥ ৬॥ -(শারদামঠাম্নায়- ৬)
অর্থাৎ, যিনি তত্ত্বমস্যাদিরূপ ত্রিবেণীসঙ্গমতীর্থে তত্ত্বার্থভাবে স্নান অর্থাৎ তত্ত্বমস্যাদিপ্রতিপাদ্য বস্তু অবগত আছেন, তাঁহাকে “তীর্থ” বলা হয়।
“আশ্রম”—
আশ্রমগ্রহণে প্রৌঢ় আশাপাশবিবর্জিতঃ ।
যাতায়াতবিনির্মুক্ত এতদাশ্রমলক্ষণম্ ॥ ৭॥ -(শারদামঠাম্নায়- ৭)
অর্থাৎ, যিনি সন্ন্যাসাশ্রম গ্রহণে নিপূণ, যিনি আশারূপ বন্ধনশূন্য, ও সংসারের গতাগতি বিরহিত, তাঁহাকে “আশ্রম” বলা হয়।
“বন”—
সুরম্যে নির্জনে স্থানে বনে বাসং করোতি যঃ ।
আশাবন্ধবিনর্মুক্তো বননামা স উচ্যতে ॥ -(গোবর্দ্ধনমঠাম্নায়- ৫-৬)
অর্থাৎ, যিনি অতি রমণীয় নির্জ্জনস্থানরূপ বনে বাস করেন, যিনি সমস্ত আশাবন্ধন হইতে নির্ম্মুক্ত হন, তিনি “বন” নামে কথিত হইয়া থাকেন।
“অরণ্য”—
অরণ্যে সংস্থিতো নিত্যমানন্দে নন্দনে বনে ।
ত্যক্ত্বা সর্বমিদং বিশ্বমারণ্যং পরিকীর্ত্যতে ॥- (গোবর্দ্ধনমঠাম্নায়- ৬-৭)
অর্থাৎ, যাঁহারা এই সমুদায় বিশ্ব পরিত্যাগ করিয়া সর্ব্বদা আনন্দময় নন্দনবন সদৃশ অরণ্যে বাস করেন, তাঁহাদিগকে “অরণ্য” বলা হয় থাকে।