সালাহ্উদ্দীন সাগর : যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম কৃষ্ণবাটিগ্রাম। সেখানেই বাস সাজ্জাদ হোসেন সাজুর। ছোট্টবেলা থেকেই পরোপকারের পোঁকা বাসা বাঁধে সাজুর মনে। সেই যে পথ চলা- আজও পৌঁছেনি চূড়ান্ত গন্তব্যে। মানুষের উপকারের নেশায় আসক্ত এ যুবক বর্তমানে রীতিমত জনতার নেতা বনে গেছেন-হয়ে গেছেন অঘোষিত জনপ্রতিনিধিও।
শুরুর দিকটা সাজুর জন্য তেমন কোন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসতে পারেনি। কেননা ছেলেবেলা থেকেই তিনি কৃষ্ণবাটির মানুষের সুখে দুঃখে আনন্দ বেদনার সাথে নিজের আবেগে জড়িয়ে পড়েন। গ্রামের প্রতি ইঞ্চি মাটিতে রাতদিন সাজুর অবাধ বিচরণ সাজুর পথচলাকে মসৃণ করে তোলে। মানুষের সাথে তাঁর হৃদ্রতার বন্ধন অটুট হতে থাকে। দিনে দিনে গ্রামের মানুষের ভরসার স্থানটি দখল করে নেন সাজু। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের ক্ষুদ্র একজন কর্মী হয়েও মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিবেদন করে গেছেন আপোসহীন ভাবে। জনসেবার চূড়ান্ত সুযোগ আসে ২০১৬ সালের ৩০ শে জুন শাহারুল ইসলাম ইউনিয়নটির নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর। ইউনিয়নটির ৭ নং ওয়ার্ডটি গঠিত হয়েছে কৃষ্ণবাটি ও মালঞ্চি গ্রাম নিয়ে। ৭ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নিজের উদর পূর্তিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মামুনুর রশীদের বাড়ী মালঞ্চি গ্রামে।টানা ৫ বছরের অনুপস্থিতিতে কৃষ্ণবাটির মানুষের কাছে রীতিমত ভূতুড়ে মেম্বারও বনে গিয়েছেন তিনি । অনেকইে রয়েছেন কৃষ্ণবাটিতে, যারা তাদেরই ভোটে নির্বাচিত ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদের অবয়ব কেমন সেটাই জানেন না।
মামুনের এই অনুপস্থিতি গ্রামের মানুষকে যেন কাতর করতে না পারেন সে ব্যাপারে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রেখেছিলেন সাজ্জাদ হোসেন সাজু । ৫ বছর ক্ষমতার মেয়াদকাল জুড়ে চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম স্বয়ং হাজির হতেন কৃষ্ণবাটিতে । মানুষের সাথে সরাসরি কথা বলে তাদের সমস্যার সমাধান করতেন। বিষয়টি সাজুর ভাল লাগার দারুণ এক উদাহরণ সৃষ্টি করে। তিনি চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামের সাথে নিজেকে সামিল করেন।
তারপর আর পিঁছুফিরে দেখতে হয়নি তাকে। জনসেবার নেশায় সেবকের হাত ধরে হেঁটেছেন ক্ষমতার মেয়াদকালের প্রারম্ভ থেকে শেষ পর্যন্ত। ইউনিয়ন পরিষদ ও সরকারের পক্ষথেকে জনগণের প্রাপ্য ও কাঙ্খিত সেবা পৌঁছে দিয়েছেন দ্বারে দ্বারে। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে গোটাদেশ যখন লকডাউনের কবলে তখনও সাজু ছিল কৃষ্ণবাটির অতন্দ্র প্রহরী।নিজের সামর্থ্য থেকে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। রাতের আঁধারে চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলামের সাথে অনাহারীর ঘরে অন্ন পৌঁছে দিয়েছেন।
সামাজিক সীমাবদ্ধতা , হানাহানি , কলহ মিমাংসায় কখনো সাজু নিজেই, কখনো আবার চেয়ারম্যানের সহযোগিতা নিয়ে সমাজে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখেছেন। জনপ্রতিধি না হয়েও জনপ্রতিনিধির ভূমিকায় কখন যেন নিজেকে আবিষ্কার করে ফেলেছেন সাজু নিজেও বুঝতে পারেননি ।
চ্যানেল দূর্জয়ের ধারাবাহিক অনুষ্ঠান “শেকড়ের সংবাদ” নির্মাণ করতে গিয়ে উঠে আসে কৃষ্ণবাটির এ চিত্র। ব্যাপক সমাদৃত ও জনপ্রিয় সাজু সাধারন কর্মী থেকে নেতা- আর নেতা থেকে জনপ্রতিনিধি বনে গেছেন অনেক আগেই। একুশের ইউপি নির্বাচনে তাঁর স্বীকৃতি চান কৃষ্ণবাটির আপামর জনগণ। তারা সাজুকে ৭ নং ওয়ার্ডের (কৃষ্ণবাটি-মালঞ্চি) ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত করে মানবতার কিছুটা দ্বায়মুক্ত হতে চান।
এদিকে বর্তমান ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদের নিজ গ্রাম মালঞ্চির মানুষের অভিযোগ , তারা তাদের ইউপি সদস্যের কাছ থেকে কোনদিন কিছুই পাননি,বরং তাদের প্রাপ্য মেরে দিয়েছেন মামুন মেম্বার। তাই তাঁরা মামুনুর রশীদকে আর চান না। কিন্তু পরিবর্তণ চান।
এ বিষয়ে সাজু বলেন আমার নেতা জননেতা শাহারুল ইসলাম। নির্বাচন করব কিনা তার সিদ্ধান্ত। তবে যদি সুযোগ পাই মানুষের জন্য সর্বোচ্চ সামর্থ দিয়ে কাজ করে যাব৷ “হালের গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নাই” এই প্রবাদের স্থান ৭ নং ওয়ার্ডে আমি হতে দিবনা।
শেকড়ের সংবাদের পুরো অংশটি দেখুন…