আশিকুর রহমান,ঝিনাইদহ: খাদ্যের অভাবে ৩ শিশু পূত্র সন্তান। অপুষ্টিতে বেঁচে আছে কোনরকমে। পৃথিবীতে এসে বিপাকেই পড়েছে জমজ তিন ভাই। অনাহারে দিন কাটছে ভ্যান চালকের পরিবার।
দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়ার জ্বালা হয়ত বুঝতে পারছে ৩শিশু। সন্তানের দুধের যোগান দিতে গিয়ে ও অসুস্থ্য স্ত্রীর জন্য ঔষুধ কিনতে অন্যের কাছে হাত পাত-তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত ভ্যান চালক বাবাকে। বাচ্চাগুলোকে নিয়ে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছে এ পরিবারটি। অপুষ্টি ভুগছে ৩ জমজ ভাই।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের অজপাড়াগঁা চরখাজুরা গ্রাম। ছোট্ট শিশু আহাদেও মুখে দুধের বোতল দিয়ে চুপ করালেও কাদছে অন্য দুই ভাই আরিফ ও আলিফ। নিষ্ঠুর পৃথিবীতে তাদের জন্মই যেন অনাকাঙ্খিত। কোনভাবেই থামছে না কান্না করে তাদের প্রতিবাদ।
এ গ্রামেরই দরিদ্র ভ্যানচালক করিম আলী। একটি টিনের খুপড়ি ঘরে কোন রকম দিনপাত করে তারা। স্ত্রী আলোমতি, মেয়ে কণা, কণিকা এবং মাকে নিয়ে বেশ চলছিল তার পরিবার। পরবর্তিতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে এবছর গত ২৪শে মার্চ স্ত্রীর কোল জুড়ে তিনটি ছেলে সন্তান জন্ম গ্রহণ করে। একদিকে সন্তাদের খাদ্য দুধ ক্রয় অন্যদিকে অসুস্থ্য স্ত্রীর চিকিৎসা খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে ভ্যান চালক করিম।
তিনটা বাচ্চা বাদে সংসারে আছে ৫জন খানেওয়ালা। এদের মতো বিপদ যেন আর কারো জীবণে না আসে। খাদ্যের অভাবে বাচ্চাগুলো অপুষ্টিতে ভুগছে। ক্ষিদেয় ওদের কান্না চোখে দেখা যায় না। এভাবে চললে বাচ্চাগুলোর বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
জমজ তিন পূত্র সন্তানের মা আলোমতি বেগম বলেন, কেউ যদি বাচ্চাগুলো আমার কোলে তুলে দিলে আমি নিতে পারছি। তাছাড়া আমার একা একা কোন ক্ষমতা হচ্ছে না বাচ্চাদের কোলে নেওয়ার। আমি খুবই অসূস্থ্য, আমার শাশুড়ি ও দুই মেয়ে মিলে বাচ্চাগুলো দেখাশুনা করছে। আমাদের পক্ষে বাচ্চাদের দুধ কিনে খাওয়ানো সম্ভব না। আমার এই তিন বাচ্চা বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগীতার আশা করছি।
বাবা আব্দুল করিম বলেন, পুত্র সন্তানের স্বপ্ন পূরণ হলেও দুঃখজনক হলেও সত্য অভাবের এই সংসারে জমজ বাচ্চাতিনটি যেন এখন মরার উপরে খাড়ার ঘঁা। বাচ্চার মা অসুস্থ্য থাকায় বুকের দুধ পায় না তারা। আবার দোকান থেকে দুধ কিনে খাওয়ানোর মত সামর্থ নাই। এই লকডাউনের মধ্যে ভ্যানে তেমন কোন ভাড়া পাইনা। প্রতিদিন ২২০০ টাকার দুধ লাগে। ওরা এখন প্রি-বায়োমিল দুধ খায়। আমি রিন গ্রস্থ হয়ে পড়েছি। কেই আর ধারও দিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহর্ী কর্মকর্তা এসএম শাহীন বলেন, আমাদের তহবিল থেকে কিছু আর্থিক সহযোগিতা করেছি। ভবিষ্যতে আরো কী করা যায় দেখছি।
সন্তানদের বঁাচাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন দরিদ্র এ পরিবারটি।