নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
যশোরে জন্মের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে তহমিনা বেগম (২২) নামে এক মায়ের প্রসব করা পাঁচটি শিশু মারা গেছে। এরমধ্যে দুইটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে ছিল। মাত্র ২৪ সপ্তাহে অর্থাৎ গর্ভে ছয় মাস থাকার পর জন্ম নেওয়ায় শিশুদের বাঁচানো যায়নি বলে চিকিৎসক মন্তব্য করেছেন।
বেদনাদায়ক ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকালে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে। প্রসূতি তহমিনা বেগম জেলার ঝিকরগাছার ছুটিপুর এলাকার বিষহরি গ্রামের মালায়শিয়া প্রবাসী হুমায়ন কবিরের স্ত্রী। বিয়ের সাত বছর পর তার কোল জুড়ে সন্তান এসেছিল। সব শিশুরই মৃত্য হওয়ায় পরিবারজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শিশুদের দাদী খালেদা খাতুন জানান, তহমিনা গর্ভবর্তী হয় ছয়মাস আগে। সকালে হঠাৎ ব্যাথা উঠলে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে আনার পথে গাড়ির মধ্যেই একটি বাচ্চার জন্ম হয়। হাসপাতালে আনার পর দুপুরে পরপর আরো চারটি বাচ্চা প্রসব করে তহমিনা।
পরবর্তীতে বাচ্চাগুলো ‘অপুষ্ট’ হওয়ায় শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করার একঘণ্টার ব্যবধানে সবগুলো শিশু মারা যায়। পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে চলছে শোকের মাতম।
কান্না জড়িক কণ্ঠে তিনি আরো জানান, তার ছেলে চার মাস আগে অর্থাৎ তহমিনার গর্ভে সন্তান আসার দুই মাস পরে বিদেশ যায়। চেষ্টার পর বিয়ের সাত বছরের মাথায় তহমিনার গর্ভে সন্তান এসেছিল।
এ বিষয়ে হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সিনিয়র নার্স আয়েশা বেগম জানান, হাসপাতালে আনার পূর্বে একটি ও আনার পর সাধারণভাবে আরো চারটি শিশু প্রসব করেন তিনি। পরবর্তীতে বাচ্চাসহ তাকে হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের সিনিয়র নার্স জোৎন্সা পারভেজ জানান, বাচ্চাদের সাড়ে তিনটায় ভর্তি করা হয়। ভর্তির আধা ঘণ্টা পর একটি শিশু ও এর ৪৫ মিনিট পর আরো এক শিশু, দশ-পনের মিনেটের ব্যবধানে সবগুলো শিশু মারা যায়।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক জসিম উদ্দিন জানান, ২৮ সপ্তাহের পরে সন্তান ভূমিষ্ট হলে মেডিকেল সাপোর্ট দিলে শিশু বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ওই পাঁচটি শিশু ২৪ সপ্তাহে জন্মেছিল। এ সময়ে জন্মে নেওয়া শিশুর ওজন কমসহ পরিপূর্ণ স্বাভাবিক পর্যায়ে থাকে না। এজন্য তাদের মেডিকেল সাপোর্ট দেওয়ার পরও বাঁচানো যায়নি।