নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ ১০ দফা দাবিতে শনিবার কেন্দ্র ঘোষিত ইউনিয়ন পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে যশোর জেলা বিএনপি। এতে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে। দলের খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতসহ ২০ জন আহত হন। এই ঘটনায় রোববার যশোরের আটটি থানায় পুলিশ বাদী হয়ে নয়টি মামলা করেছে। কোতোয়ালি ও মণিরামপুর থানায় দুটি করে এবং শার্শা, বেনাপোল পোর্ট থানা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা ও কেশবপুর থানায় একটি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে। রোববার ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়েছে পুলিশ।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নাশকতামূলক কর্মকা- ঘটানোর উদ্দেশ্যে সমবেত হয়ে ককটেল সাদৃশ্য বোমা নিজেদের কাছে রাখে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। কোতোয়ালি থানার একটি মামলার বাদী এস আই একরামুল হুদা। এ মামলায় ৫১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন সদরের মধুগ্রামের রুহিন হোসেন (১৯), ঘুরুলিয়ার কুদ্দুস হোসেন (২৮), বানিয়াগাতির শফিয়ার রহমান (৫২), শেখহাটির বদিউজ্জামান (৬০) ও তরফ নওয়াপাড়ার আকরাম হোসেন (৫২)। এ সময় পাঁচটি ককটেল সাদৃশ্য হাত বোমা, দুইটি বাঁশের লাঠি, একটি লোহার রড ও নমুনা আলামত হিসেবে দুই টুকরো ইট উদ্ধার করা হয়েছে।

অপর মামলার বাদী কোতোয়ালি থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন এ মামলায় ৪১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন সদরের মন্ডলগাতি গ্রামের আবির হাসান শুভ (৩২), ফিরোজ শেখ (৩২), বাঁশবাড়িয়া গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিকি (৫০), মাহিদিয়ার এবি এম আসাদুজ্জামান (৬০), সাড়াপোলের আবু হাসান কুদ্দুস (৫০), চাঁচড়া রায়পাড়ার আল মাসুদ রানা (৩৮) ও রূপদিয়ার পলাশ খান (৩২)। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা যুবদলের সভাপতি এম তমাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আনসারুল হক রানা, যশোর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজেদুর রহমান সাগর, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য গোলাম রেজা দুলু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, কোতোয়ালি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জুরুল হক খোকন। এছাড়া অন্যান্য থানায় হওয়া মামলায় স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতকর্মীদের আসামি করেছে পুলিশ।

এব্যাপারে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন বলেন, শনিবার আমাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রায় বিনা উস্কানিতে পুলিশ সব জায়গায় বাঁধা ও লাঠিচার্জ করে আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা অমিতসহ কমপক্ষে ২০ জনকে আহত করে। আবার পুলিশই বাদী হয়ে মিথ্যা মামলা করেছে। যেখানে আসামি করেছে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে। সরকার পুলিশ দিয়ে নির্যাতন করে পার পাবে না। জনতা রুখে দাঁড়াবেই।

এদিকে ঝিকরগাছা থেকে জানিয়েছেন, বিএনপির আহ্বায়ক সহ বিভিন্ন পর্যায়ের ৩২ নেতাকর্মীর নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিরা হলেন রেজাউল ইসলাম, রফি মেম্বার, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোর্তজা এলাহী টিপু, যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলম, ঝিকরগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আইয়ুব মেম্বার, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব নাজমুল হক নাজুক, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আশরাফুল আলম রানা, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আশফাকুজ্জামান রনি, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আরাফাত কল্লোল, যুবদলের সদস্য রুবেল, শিমুলিয়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশা, যুবদলের সদস্য রুবেল (২), উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু মুসা মিন্টু, পানিসারা ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আলতাফ হোসেন, যুবদলের বিদ্যুৎ, পানিসারা ইউনিয়নের সদস্য সচিব আবুল খায়ের, বিএনপির সদস্য রফিকুল ইসলাম, ইউনুছ, বাবলু, ইকরামুল হোসেন, আবদুল খালেক, তোফা, গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল খান, যুবদলের আবদুল আজিজ, গদখালী ইউনিয়নের সভাপতি তবিবর রহমান, হাজিরবাগ ইউনিয়নের সভাপতি হাজি মিজানুর রহমান, শংকরপুর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হোক বাবলু, যুবদলের সদস্য নুরুল হক, বাঁকড়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জামির হোসেন ও বিএনপি সদস্য হাবিবুর রহমান হবি।