নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তবে কৃষিতে উৎপাদন সন্তোষজনক হলেও তার প্রভাব নেই বাজারে। দেশি-বিদেশি নানা প্রভাবকের কারণে মূল্যস্ফীতি লাগাম ছাড়া।
গিয়েছিলেন ৭ লাখ ১৫৯ জন।
প্রবাসীদের আয় বৃদ্ধিতে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার একরেটে যাওয়াকে গুরুত্ব দেন ড. আতিউর রহমান। তিনি বলেন, এক রেট না হওয়ার কারণে বাজারে কিছুটা অস্থির হওয়ার সুযোগ থাকে। এই অস্থিরতা রোধে উদ্যোগ নিতে হয়েছে।
প্রবাসী আয় বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এগুলো কার্যকর করতে হবে। পর্যবেক্ষণ জোরদার করার তাগিদ দেন তিনি।
খাদ্য উৎপাদনে নানা প্রচেষ্টার ফলে দেশের পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে। কিন্তু বাড়তি উৎপাদন ব্যয়ের কারণে খাদ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাড়ছে দানাদার খাদ্যের বাইরে অন্যান্য খাদ্যের দামও। সর্বশেষ মার্চ মাসের মূল্যস্ফীতি উঠেছে ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশে । মূল্যস্ফীতির আঘাত মানুষের সঞ্চয়ে লেগেছে। মানুষ সঞ্চয় ভেঙে বাড়তি ব্যয় মেটাচ্ছে। সঞ্চয়পত্র কেনার বিপরীতে মানুষ বেশি বেশি ভাঙছে।
রপ্তানি আয় এখনো ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। চলতি অর্থ বছরের জুলাই-মার্চ ৯ মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪১ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। এ সময়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৮ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। আগের ফেব্রুয়ারি মারে প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ। তথ্য বলছে, রপ্তানি আয়ে এখনো ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলেও তা কমে আসছে।
এ সময়ে ডলারের চাহিদা কমাতে আমদানি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু কার্যত কোনো কাজে আসছে না। চলতি অর্থ বছর ২০২২-২৩ এর প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) এক হাজার ৩৮২ কোটি ৮০ লাখ (১৩ দশমিক ৮২ বিলিয়ন) ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থ বছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) ৪ হাজার ৮৭৯ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে রপ্তানি হয়েছে তিন হাজার ৪৯৬ কোটি ৬০ লাখ ডলারের পণ্য।
একমাত্র প্রবাসী আয়ই ইতিবাচক ধারায় আছে। অবশ্য এর জন্য সরকারকে নানা রকম উদ্যোগ নিতে হয়েছে। প্রবাসী আয় বাড়াতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে সেগুলো—বৈধ পথে প্রবাসী আয় পাঠানোর বিপরীতে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫ শতাংশ করা, প্রবাসীদের সিআইপি সম্মাননা দেওয়া, প্রবাসী আয় বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ণ অর্থায়ন সুবিধা দেওয়া, ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশের ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা ও রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে।
এছাড়া সেবার বিনিময়ে দেশে প্রবাসী আয় আনার ক্ষেত্রে ফরম ‘সি’ পূরণ করার শর্ত শিথিল করার ব্যবস্থা করা হয়। ঘোষণা ছাড়াই সেবাখাতের উদ্যোক্তা ও রপ্তানিকারকদের ২০ হাজার মার্কিন ডলার দেশীয় মুদ্রা দেশে আনার সুযোগ দেওয়া হয়।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব উদ্যোগের ফলে প্রবাসী আয় যেমন বাড়ছে। যে হারে প্রবাসে যাওয়া মানুষের সংখ্য বাড়ছে তাতে প্রবাসী আয় বৃদ্ধির ধারাকে আরও টেকসই করবে।