1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
বাঙালির স্বপ্ন জয়ের সারথি শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ - চ্যানেল দুর্জয়
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১০ অপরাহ্ন

বাঙালির স্বপ্ন জয়ের সারথি শেখ হাসিনার জন্মদিন আজ

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

রায়হান হোসেন : সমাজের সব ক্ষেত্রে শোষণ আর বৈষম্যের শিকার হতে হতে বাংলার মানুষ যখন অতিষ্ঠ, তখন তাদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি শুধু স্বপ্নই দেখাননি। তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীনতা লাভ করি। যা ছিল বাঙালি জাতির সর্বকালের সবচেয়ে বড় অর্জন। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন বাঙালিকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে ৩ বছরের মাথায় ঘাতকের নির্মম বুলেটে প্রাণ হারান তিনি। বঙ্গবন্ধু বেঁচে না থাকলেও ভাগ্যক্রমে বাঙালির আশীর্বাদ হয়ে থেকে যান তার অদ্যম সাহসী বীরকন্যা শেখ হাসিনা। যার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা-চিকিৎসা ও সংস্কৃতিসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আছেন বলেই বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। পিতার মতো তিনিও বাঙালিকে মহাকাশসম স্বপ্ন দেখান, আবার নিজেই সারথি হয়ে স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনে দেন। এর মাধ্যমে তিনি ১৮ কোটি বাঙালির কাছে হয়ে উঠেছেন স্বপ্ন জয়ের এক ‘ম্যাজিকাল লেডি’। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা ও সাহসিকতা দিয়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে শেখ হাসিনা এখন অন্যন্য, অদম্য এক বিশ্বনেত্রী।

আজ ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার কোল আলো করে জন্ম নেন তিনি। তার শৈশব-কৈশোর কেটেছে মধুমতি নদীর তীরে। পিতা শেখ মুজিব আদর করে শেখ হাসিনাকে ডাকতেন হাসু বলে। শেখ হাসিনারা পাঁচ ভাইবোন। অপর চারজন হলেন- শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রেহানা এবং শেখ রাসেল। এরমধ্যে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা ছাড়া কেউই আর বেঁচে নেই। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গন্ধুর সঙ্গে তারাও নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হন।

শেখ হাসিনা ১৯৫৬ সালে ঢাকার টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে (বর্তমানে শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়) ভর্তি হন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। তিনি বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের (সাবেক ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজে) ছাত্রী থাকা অবস্থায় ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৬৬ সালে তিনি ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন শেখ হাসিনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় তার। পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ২০০৯ সালের ৯ মে মারা যান। তাদের সংসারে পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় ও কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল রয়েছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা জাতির পিতাকে সপরিবার নির্মমভাবে হত্যা করে। ওই সময় পড়াশোনার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা ও তার ছোটো বোন শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতক গোষ্ঠী। বাঙালি জাতির জীবনে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসে ঘোর অমানিশার অন্ধকার। ঠিক এমনি ক্রান্তিলগ্নে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এরপর ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষে সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন তিনি। ওই দিন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে একনজর দেখার জন্য কালবৈশাখীর তীব্র হাওয়া আর মুষলধারার বৃষ্টি-বাদল উপেক্ষা করে কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে জড়ো হয়েছিলেন লাখ লাখ বাঙালি। ওই দিন লাখ লাখ জনতার সংবর্ধনায় আপ্লুত শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সবাইকে হারিয়েছি। আমার আর হারানোর কিছুই নেই। আপনাদের মাঝেই তাদের ফিরে পেতে চাই।’

দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার ও স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হৃত গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। এরমধ্য দিয়েই সামরিক জান্তা ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে তার দীর্ঘ সংগ্রাম শুরু হয়। ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ ও ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা এবং ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা।

এরপর শুরু হয় বিএনপি-জামায়াতের শাসনামল। পরবর্তীতে অগণতান্ত্রিক পন্থায় ক্ষমতায় এসে ১/১১ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই শেখ হাসিনাকে বিনা পরোয়ানায় আইনবহির্ভূতভাবে গ্রেপ্তার করে। যা ছিল বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি কালো দিন। ফখরুদ্দীন-মইন ইউ আহমেদ সরকারের পরিকল্পনা ছিল শেখ হাসিনাকে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য করা।

২০০৭ সালের ১৫ মার্চ শেখ হাসিনা সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমেরিকা ও কানাডা যান। এরপর বঙ্গবন্ধুকন্যা যেন দেশে ফিরতে না পারেন সেজন্য তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা দায়ের করা ও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আরও একবার বীরের বেশে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ঘটে তার।

২০০৭ সালের ১৬ জুলাই শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রায় এক বছর কারাবন্দি থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ জুন তিনি মুক্তি পান। একই বছরের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করেন শেখ হাসিনা। সেই থেকে টানা তিন মেয়াদে গত প্রায় ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে খাদ্যে স্বয়ংস্পূর্ণতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর খুনি ও একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার এবং রায় কার্যকর করা হয়েছে। একসময় দারিদ্র্য-দুর্ভিক্ষে জর্জরিত যে বাংলাদেশ অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম করত, সেই বাংলাদেশ আজ শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বিশ্বদরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তালাবিহীন ঝুঁড়ি’ বলে যেই অপবাদ দিয়েছিলেন, সেই অপবাদ ঘুচে গিয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে। দেশের উন্নয়নকে মহাকাশ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

আমাদের আছে নিজস্ব স্যাটেলাইট ‘বঙ্গবন্ধু-১’, আছে গর্ব করার মতো দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘতম দ্বিতল পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, ঢাকা মেট্রোরেলসহ আরও অনেক মেগা প্রকল্প। এ ছাড়া উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণ করা বঙ্গবন্ধু টানেল। আজ শেখ হাসিনার সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, সারাদেশে ভূমি-গৃহহীনদের ঘর দিচ্ছে, জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছে, সর্বজনীন পেনশনের ব্যবস্থা করে দিয়েছে, সারাদেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ করছে। এভাবেই বাঙালির স্বপ্ন জয়ের সারথি হয়ে স্বপ্নকে হাতের মুঠোয় এনে দিচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার দীর্ঘ ৪২ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পথচলা ছিল কণ্ঠকাপূর্ণ ও বিপৎসংকুল। মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার রক্ষার লড়াই করতে গিয়ে অন্তত ২০ বার হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। কিন্তু তিনি বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মতোই অদম্য ও সাহসী। রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, সততা, মেধা, দক্ষতা দিয়ে সমসাময়িক বিশ্বের অন্যতম সেরা রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন শেখ হাসিনা। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তিনি হয়ে উঠেছেন বিশ্বনন্দিত নেতা। বহির্বিশ্বে বাঙালিদের করেছেন গৌরবান্বিত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ডিজিটাল হয়েছে, এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। নতুন প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অবিরাম কাজ করে যাওয়া শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিনে দুর্জয় পরিবারের পক্ষ থেকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা, সালাম ও শ্রদ্ধা।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার (বিকাল ৪:১০)
  • ২৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২০শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
317
3286328
Total Visitors