1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
ব্যাড গাই, গুড গাই প্রক্রিয়ায় নেগোসিয়েশন কৌশল - চ্যানেল দুর্জয়
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন

ব্যাড গাই, গুড গাই প্রক্রিয়ায় নেগোসিয়েশন কৌশল

  • প্রকাশিত : রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩

দুর্জয় পাঠকের কলাম: নেগোসিয়েশন হচ্ছে আলোচনার মাধ্যমে কোনো এগ্রিমেন্টে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া। আরও বিস্তৃত ভাবে বললে, এটি একটি প্রক্রিয়া যেখানে আলোচনার মাধ্যমে দ্বন্দ্বের সমাধান করে সমঝোতায় পৌঁছানো যায়। জীবনের প্রায় প্রতিটি পর্যায়েই আমাদের আলোচনা করার প্রয়োজন হয়।

নেগোশিয়েশনে একটা কৌশল আছে৷ ব্যাড গাই, গুড গাই৷ বিষয়টা কী বিস্তারিত বুঝিয়ে বলছি৷ ধরুন, কোন একজন আসামীকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে৷ পারিপার্শ্বিক অবস্থায় বুঝা যায় তার কাছ থেকে তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ তবে তাকে যতই প্রেসার দেয়া হোকনা কেন সে কিছুতেই মুখ খুলবেনা৷ এ অবস্থায় ব্যাড গাই গুড গাই কৌশল প্রয়োগ করা হয়৷

তাহলে কৌশলটা কীভাবে প্রয়োগ করা হয়! এ কৌশলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজন কর্মকর্তা থাকেন৷ এদের একজন জুনিয়র৷ আরেকজন তার চেয়ে সিনিয়র৷ জুনিয়র কর্মকর্তা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবেন ব্যাড গাই হিসেবে৷ তার আচরণ হবে খুব খারাপ৷ হুমকি দেবেন৷ মারধর করতে চাইবেন৷ অপমান করবেন৷ এমনকি মারধরও করতে পারেন৷ মোটকথা জিজ্ঞাসাবাদের নামে পরিস্থিতি খুব খারাপ করে তুলবেন৷ খুব সিরিয়াস মুহূর্তে অন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা সেখানে প্রবেশে করবেন৷ তিনি আসামির সাথে খারাপ ব্যবহারের জন্য তার জুনিয়র কর্মকর্তাকে বকাঝকা করবেন৷ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের হুমকি দেবেন৷ তারপর তীব্র ক্রোধে তাকে কক্ষ থেকে বের করে দেবেন৷ যাতে আসামী তাকে ভালো মানুষ মনে করেন৷ এরপর তিনি তার সাথে ভালো ব্যবহার করবেন৷ যাতে তাকে ভালো মানুষ হিসেবে বিশ্বাস করেন৷

আসামী ঘুর্ণাক্ষরেও বুঝতে পারেন না এটা আসলে সাজানো ছিল৷ তিনি খারাপ কর্মকর্তার হাত থেকে ভালো কর্মকর্তার হাতে পড়েছেন বলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন৷ আর এ সুযোগটাই সিনিয়র কর্মকর্তা কাজে লাগিয়ে তথ্য উদ্ধার করবেন৷

এটি আসামীর জিজ্ঞাসাবাদে ব্যবহৃত কৌশল বলে এই নাম দেয়া হয়েছে৷ তবে এই কৌশল বাণিজ্য নেগোশিয়েশন বা রাজনৈতিক সংলাপেও ব্যবহার করা হয়৷ এসব ক্ষেত্রে জুনিয়র বড়সড় দাবি নিয়ে প্রস্তাব দেয়৷ পরে সিনিয়র তাতে হস্তক্ষেপ করেন৷ বলেন, আহারে ওনারা তো অতিথি মানুষ৷ অথবা তাদের সাথে আমাদের এত বছরের সম্পর্ক৷ অথবা আরে এভাবে কথা বললে তো সমাধান হবেনা৷ অথচ আমরা সমাধানে আসতে চাই৷ এত কড়া দাবি করলে কী হয় নাকি! সম্পর্কের ভিত্তিতে আমি এটাকে এই পর্যায়ে নামিয়ে নিচ্ছি৷ ব্যস! এতে প্রতিপক্ষ ধোকা খেয়ে যেতে পারেন৷

ব্যাড গাই গুড গাই কৌশলটা নিয়ে আলোচনার একটা কারণ রয়েছে৷ আমি নিশ্চিত গাজা ইস্যুতে ইসরায়েল ব্যাড গাই ও যুক্তরাষ্ট্র গুড গাইয়ের ভূমিকা পালন করছে৷ যুক্তরাষ্ট্র মাঝে মাঝে ইসরায়েলকে ধমকও দিচ্ছে৷ এই যেমন গতকাল গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাতে গিয়ে ইসরায়েল যে ধরনের আচরণ করছে, তার কঠোর সমালোচনা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। তিনি বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা নিশ্চিতে এবং হতাহতের ঘটনা এড়াতে ইসরায়েল সরকার যে লক্ষ্যের কথা বলেছিল, তার সঙ্গে তাদের আচরণে ফারাক থেকে যাচ্ছে। তার এ বক্তব্য আরবদের খুশী করার উদ্দেশ্য ছাড়াও ইসরায়েল যাতে তার কাজ চালিয়ে যেতে পারে তা নিশ্চিত করা ৷ কোন দিন গণহত্যার প্রশ্ন উঠলে যুক্তরাষ্ট্র এই বাণি স্মরণ করিয়ে দেবে৷ এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের ওপর ভিসা নীতি প্রয়োগেরও হুমকি দিয়েছিলেন৷

তবে আরব দেশগুলো এই ধোকা বুঝতে পারলেও কিছু করার নেই৷ যুক্তরাষ্ট্রের মুখের ওপরে সোজা সাপটা কিছু বলারও সাহস কারো নেই৷ সেই সুযোগে বেহায়ার মতো যুক্তরাষ্ট্র ভালো মানুষের ভূমিকায় অভিনয় করে যাচ্ছে৷

আধুনিককালে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে ‘ব্যাড গাই গুড গাই’ কৌশল বুঝতে এর চেয়ে জ্বলন্ত উদাহরণ আর হতে পারেনা৷ এটি এই কৌশলের টেক্সড বুক এক্সামপল হয়ে থাকবে৷

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (রাত ৯:৪০)
  • ২৭শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১৮ই শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
227
3278143
Total Visitors