নবাবগঞ্জ প্রতিবেদন,||জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান, সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি জনগণ যদি ভোট কেন্দ্রে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, নির্বাচন যদি অবাধ ও সুষ্ঠু হয় তাহলে আমি দোহার নবাবগঞ্জ (ঢাকা-১) আসনের এমপি নির্বাচিত হব ইনশাল্লাহ।
নবাবগঞ্জের কলাকোপা ও বান্দুরা এলাকায় রোববার সকালে দোহার-নবাবগঞ্জে লাঙ্গল প্রতীকের এই প্রার্থী গণসংযোগকালে এসব কথা বলেন তিনি। এদিন সালমা ইসলাম ওই এলাকার ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্রব্যবসায়ী, শ্রমিক, কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও গণসংযোগ করেন। এছাড়া এদিন উঠান বৈঠক ও স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে সালমা ইসলাম ৭ তারিখের নির্বাচনে লাঙ্গলে ভোট চান।
তিনি বলেন, আপনারা আমাকে বিগত সময়ে ভোট দিয়ে এমপি নির্বাচিত করেছিলেন। এসময় আপনাদের এই অঞ্চলের কতটুকু উন্নয়ন কাজ আমি করতে পেরেছিলাম সে বিষয়টি আপনারা অবগত আছেন। আমার দলের কোনো নেতাকর্মী টেন্ডারবাজি, ঠিকাদারি ও মাস্তানি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করে নাই। আমি নিজেও জনগণের মৌলিক অধিকারসহ স্থানীয় পর্যায়ে কোন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করি নাই। কারো পদবী নিয়ে টানাটানি করার মতো লোক আমি নই। দেশ ও জনগণের কল্যাণকর কাজগুলো অধিকাংশ জনগণের মতামতের ভিত্তিতেই করা উচিত বলে আমি মনে করি।
সালমা ইসলাম নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়ন ও তরুণদের কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আমি নির্বাচিত হলে নবাবগঞ্জকে পৌরসভায় রূপান্তরিত করে আধুনিক জীবনব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। নাগরিক জীবনের সব সঙ্কট নিরসনে পাকা রাস্তার দু’পাশে ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু করা হবে। নির্বাচিত হলে নতুন ভোটার বা শিক্ষিত ও মেধাবী তরুণ তরুণীদের জন্য সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি করা হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদেরকে বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
এসময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালমা ইসলাম আরো বলেন, নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলার সরকারি বরাদ্দে উন্নয়নের পাশাপাশি আমি ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সহায়তা করার মাধ্যমে এই আঞ্চলকে এগিয়ে নিয়ে যাব। এসময় উপস্থিত ভোটাররা তার এই বক্তব্যেকে হাততালির মাধ্যমে স্বাগত জানান।
বিকালে লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী বান্দুরা এলাকার প্রতান্ত এলাকায় বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন ও লাঙ্গল মার্কায় ভোট চান। তিনি বলেন, আমি নির্বচিত হলে ইছামতি নদীকে সচল করতে দুইপাড়ে ওয়ার্কওয়ে তৈরী করা হবে। যাতে সাধারণ মানুষ প্রাকৃতিক ও মনোরম পরিবেশে জীবনযাপন করতে পারে। দুষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা হবে। এছাড়া মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত এলাকা গড়তে স্থানীয় প্রশাসন, গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করার মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ীদের স্বাভাবিক পেশায় পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সামাজিক অবক্ষয় রোধে সচেতন নাগরিক কমিটি গড়ে উঠতি যুব সমাজকে খেলাধুলায় মনোনিবেশ করে সামজিক ভারসাম্য রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সালমা ইসলাম বলেন, নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ ও নারীর ক্ষমতায়নে সর্বক্ষেত্রে নারী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। দোহার নবাবগঞ্জের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তাঁতী জনগোষ্ঠির বসবাস। বিলুপ্তপ্রায় তাঁত শিল্পকে পুনরুদ্ধারে সরকারি বেসরকারি উদ্যোগ নেওয়ার মাধ্যমে বেকার তাঁতীদের কর্মসংস্থানকে তরান্বিত করা হবে।
বিপুল সংখ্যক হিন্দু খ্রিস্টান সমৃদ্ধ দোহার নবাবগঞ্জকে শান্তি সম্প্রীতির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে শান্তি সন্নিবেশ বাস্তবায়নে স্থানীয়ভাবে কমিটি গঠনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গণসংযোগকালে সালমা ইসলামের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি জুয়েল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বোরহান হোসেন ও কলাকোপা ও বাহ্রা ইউনিয়নের মহিলা পার্টি, যুবসংহতি, ছাত্র সমাজ, কৃষক পার্টির জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের বিভিন্ন নেতারা।