যদিও ঢাকাকে মসজিদের শহর বলা হয়, কিন্তু তারপরও ঢাকায় লোক সংখ্যার তুলনায় মসজিদ অপর্যাপ্ত। যার প্রমাণ শুক্রবার জুমার নামাজে স্পষ্টভাবে ধরা পড়ে। লোক সংখ্যার দিকে তাকিয়ে ঢাকায় আরো মসজিদ নির্মাণ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশিষ্ট তরুণ আলেম মুফতি সাখাওয়াত হুসাইন রাজি।
সমাজের বিত্তবানরা যেন আরো মসজিদ নির্মাণে এগিয়ে আসেন। মানুষকে নির্বিঘ্নে মসজিদে নামাজ পড়ার সুযোগ করে দেন সেই জন্যেও সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের মসজিদের তিতাসের গ্যাস লাইন লিকেজ থেকে সৃষ্ট আগুনে প্রায় ২৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দেশের দায়িত্বশীলদেরকে সমবেদনা ও দায় নেওয়ার পরিবর্তে উল্টো মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে ঢালাওভাবে দেশের সাধারণ মুসলমানদের উপর দোষ চাপাতে দেখা যায়। দায়িত্বশীলদের এসব আচরণে সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশের সাধারণ মুসলমানগণ।
মসজিদ দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ জায়গা। মসজিদের সাথে যার অন্তর সংযুক্ত থাকে কেয়ামতের ময়দানে সে আল্লাহর আরশের নীচে ছায়া পাবে। আর্থিকভাবে পীড়িত আমাদের সমাজে মসজিদ পরিচালনা কত কঠিন তা কেবল তারাই জানেন যারা মসজিদ পরিচালনা করেন। এমতাবস্থায় যদি দেশের দায়িত্বশীলদের পক্ষ থেকে মসজিদ ও মসজিদ নির্মানকারী ও পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে জায়গা দখলের ঢালাওভাবে অভিযোগ করা হয় এবং তাদের হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে এটা খুবই নিন্দনীয় ও ন্যাক্কারজনক কাজ হবে বলে মনে করেন মাওলানা সাখাওয়াত।
কোনো ধরণের তদন্ত ছাড়াই একজন মুসলমান কখনো কোনো মসজিদকে অবৈধ বলতে পারে না। মসজিদের সাথে ‘অবৈধ’ শব্দ লাগানো ঈমান ধ্বংসের কারণ হতে পারে বলে মনে করেন মুফতি সাখাওয়াত। যদি কোথাও অন্যকারো জমিতে বিনা অনুমতিতে নামাজের ঘর নির্মিত হয়, তাহলে সেটা গোড়া থেকেই মসজিদ গণ্য হবে না। মসজিদ কেবল বৈধ জায়গাতেই হয়ে থাকে। একবার মসজিদ হওয়ার পর সেই জায়গায় চিরকাল মসজিদই থাকে। মসজিদের সাথে কোনো মুসলমান অবৈধ শব্দ লাগাতে পারে না, যোগ করেন মুফতি সাখাওয়াত।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জের সেই তল্লা মসজিদ ৩০ বছর ধরে ওয়াকফ মসজিদ হিসাবে চলে এসেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। ১৯৯০ নগরীর খানপুর সরদারপাড়া এলাকার চার জ্ঞাতি ভাই আফাজউদ্দিন সরদার, শাহাবুদ্দিন সরদার, মাহমুদ সরদার ও আবু সিদ্দিক পশ্চিম তল্লা এলাকায় নিজেদের আট শতাংশ জমি দান করেন মসজিদের জন্য।
ওই জমিতে প্রথমে টিনের একটি মসজিদ নির্মাণ করা হয়। ১০-১২ বছর আগে এটিকে পাকা দালানে পরিণত করা হয়। সর্বশেষ ছয়-সাত বছর আগে ওই মসজিদের প্রবেশপথের কিছুটা অংশ বাড়ানো হয় মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায়। মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন জমি দানকারীদের বংশধররা। ২০১৪ সাল পর্যন্ত মাহমুদ সরদার মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ হয়ে শয্যাশায়ী। তাই তার ভাগ্নে আবদুল গফুর মেম্বারকে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।