1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
ভোগবাসনা থেকে কৃষ্ণকে জানা উত্তম - চ্যানেল দুর্জয়
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৮ অপরাহ্ন

ভোগবাসনা থেকে কৃষ্ণকে জানা উত্তম

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২০

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
রামায়ণ , মহাভারত , পুরাণ সংহিতাদি গ্রন্থে আমরা দেখতে পাই মুনিঋষি ও দেবতাগণও অবৈধ স্ত্রীসঙ্গে লিপ্ত হয়ে পতন হয়। কারন এই দৃষ্টান্তগুলি দিয়ে কোনও কোনও শাস্ত্রে আরও বেশি করে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে , যাতে মানুষ বুঝতে পারে যে এই জড়জগতে যে যতই ক্ষমতাশীল বা জ্ঞানবান ব্যক্তি হােক না কেন সে কামনার দাসত্ব করে এই মায়ামোহময় সংসারে বদ্ধ থেকে যায় ।

দেবাসুরের সমুদ্র মন্থন সময়ে সমুদ্রের ভেতর থেকে অসংখ্য পরিচারিকার সঙ্গে অপ্সরা উঠে আসে। এরা ষাট কোটি । এরা নাচ গানে পারদর্শিনী । এরা গন্ধর্বের স্ত্রী । মুনি ঋষিদের তপস্যা ভাঙানাের জন্য এদের ব্যবহার করা হত । অপ্সরাদের মধ্যে উৰ্বশী , মেনকা , রম্ভা , তিলােত্তমা , ঘৃতাচী , সুকেশী , মঞ্জু , ঘােষা , অলধূষা , বিদ্যুৎপৰ্ণা , সুবাহু , বশ্বাচী , সরমা ইত্যাদি । এরা মায়ারূপিণী । সমুদ্র জল থেকে এদের জন্ম ।

অমল পুরাণ শ্রীমদ্ভাগবতে উল্লেখ করা হয়েছে বলবান ইন্দ্রিয়সমূহ মােক্ষবিদ বিদ্বান ব্যক্তির চিত্তকেও বিপন্ন করে থাকে । যাঁদের দেহ , মন , প্রাণ পরমানন্দময় মদনমােহনের শ্রীপাদপদ্মে নিবেদিত , তাদের ক্ষেত্রে যদি কোন সময় অবৈধসঙ্গের স্মরণমাত্রও হয় , তবে তারা ঘৃণায় থুথু ফেলেন ।
কতকগুলি দৃষ্টান্ত যেমন ,
এক, শ্রীবিল্বমঙ্গল ঠাকুর একদিন এক ব্যবসায়ী পত্নীর প্রতি আসক্ত হলেন এবং তৎক্ষণাৎ তিনি মহিলাটির কাছ থেকে তার খোঁপার দুটি কাটা ভিক্ষা করেন এবং আপন দুটি চক্ষুতে সেই কাঁটা ফুটিয়ে অন্ধ হয়ে যান । মাতৃ সম্মান সেই অবস্থায় ‘কৃষ্ণ কৃষ্ণ ’ বলতে বলতে এক আশ্চর্য রকমে শ্রীবৃন্দাবনে গমন করেন ।

দুই, অর্জুনের সঙ্গ উদ্দেশ্যে স্বর্গের অপ্সরা এসে উপস্থিত হলে অর্জুন তাঁকে মাতৃসম্মান পূর্বক বিদায় দিলেন । এতে অপ্সরা লজ্জিত হয় ।

তিন, শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর ভােগ রান্নার জন্য বৃদ্ধা মাধবীদেবীর কাছে চাল আনতে গিয়েছিলেন ছােট হরিদাস । সেই নির্দোষ ছােট হরিদাসের এই আচরণও মহাপ্রভু সমর্থন করেননি এবং রুষ্টভাবে বলেছিলেন ছােট হরিদাসের মুখ দর্শন করবেন না । পার্ষদদের নিয়ে লােকশিক্ষা হেতু মহাপ্রভু এরূপ লীলা করলেন ছােট হরিদাস ব্যথিত হৃদয়ে মহাপ্রভুর পাদপদ্ম স্মরণ করতে করতে গঙ্গায় আত্ম বিসর্জন করলেন ।
চার, নামাচার্য শ্রীল হরিদাস ঠাকুর বেনাপােল গ্রামে নির্জনে তিন লক্ষ হরিনাম করতেন । এক সুন্দরী বেশ্যা তিন রাত ধরে তাকে ভ্রষ্ট করবার চেষ্টা করে তাকে একটুও টলাতে পারেনি বরং নামের প্রভাবে সে নিজেই মস্তক মুণ্ডন করে পরম বৈষ্ণবী হয়ে ওঠেন।

️একবার স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মােহিনীরূপ ধারণ করে অমৃত কলসী নিয়ে অসুর ও দেবতাদের মাঝখানে দাঁড়ালেন । দেবতারা কৃষ্ণের হাতে অমৃত পেয়ে ধন্য হলেন । কিন্তু অসুরেরা কৃষ্ণের মায়ারূপী সুন্দরীর লাবণ্য দেখে অমৃত খাওয়ার ব্যাপারটাই গােলমাল করে ফেলল ।
️আবার দেখা যায় শ্রীমতী রুক্মিণীদেবী গভীরভাবে মন্তব্য করেছেন , এই জগতে মেয়েরা প্রচণ্ড মূর্খ কারণ তারা সমগ্র সৌন্দর্যের আধারস্বরূপ পরম পুরুষ শ্রীকৃষ্ণের মধুর পাদপদ্মের প্রতি আকৃষ্ট হয় না । তারা কেবল মল – মূত্র যুক্ত বিশিষ্ট পচনশীল দেহসর্বস্ব কতকগুলি পুরুষরূপী মায়াকে ‘এই আমার স্বামী , এই আমার পতি ’ এই মনে করে তাদের পায়ের তলায় আত্ম নিবেদন করে।

যে ব্যক্তি কৃষ্ণভক্ত নয় এবং কৃষ্ণের শরণাগত হয় না , সে একটি নরাধম এবং দুষ্কৃতকারী , যে সর্বদা পাপাচরণ করে । অধম ব্যক্তিদের চেনা খুব একটা কঠিন নয় , কারণ কেবল একটি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার দ্বারা মানুষের স্থিতি বােঝা যায় — সে কৃষ্ণভক্ত কি না ? দেবতা ভক্তদের সংখ্যা বৈষ্ণবদের থেকে অধিক কেন ? তার উত্তর হল যে, কিছু জড় জাগতিক সুযোগ সুবিধা লাভ করার জন্য মানুষ দেবদেবীর আরাধনা করে।
️বৈষ্ণবেরা সুরা এবং সুন্দরী উপভােগের দ্বারা নিকৃষ্ট স্তরের আনন্দলাভে আগ্রহী নন এবং শ্রীকৃষ্ণও তাঁদের এই সমস্ত সুযােগ – সুবিধা প্রদান কবেন না ।

যাঁরা ভগবানের প্রেমময়ী সেবায় যুক্ত , তাঁদের কাছে শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে প্রকাশিত করেন । সেই কথাও ভগবান স্বয়ং ভগবদ্গীতায় ( ১৮/৫৫ ) প্রতিপন্ন করেছেন — “ভক্ত্যা মামভিজানাতি” । অল্পজ্ঞ মূর্খেরা কখনও কখনও ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ভুল বােঝে ।
তাই , শ্রীকৃষ্ণকে জানার সর্বশ্রেষ্ঠ পন্থা হচ্ছে শুদ্ধ ভক্তিতে যুক্ত হওয়া । মানুষ যতই ভক্তিমার্গে অগ্রসর হয় , ততই তাঁকে যথাযথভাবে জানতে পারে । যদি জড় – জাগতিক স্তরে শ্রীকৃষ্ণকে জানা যেত , তা হলে শ্রীকৃষ্ণ যেহেতু সব কিছু তাই এই জড় জগতের যে কোন বস্তু দর্শন করে শ্রীকৃষ্ণকে জানা যেত কিন্তু তা সম্ভব নয় ।

ভগবান শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন,
“ময়া ততমিদং সর্বং জগদব্যক্তমূর্তিনা । মৎস্থানি সর্বভূতানি ন চাহং তেষুবস্থিতঃ”॥
( গীতা: ৯/৪ )

“অর্থাৎ সব কিছুই শ্রীকৃষ্ণের উপর আশ্রিত , এবং সব কিছুই শ্রীকৃষ্ণ , কিন্তু যারা জড় জাগতিক স্তরে রয়েছে , তাদের পক্ষে তা বােঝা সম্ভব নয়।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • সোমবার (বিকাল ৫:২৮)
  • ২৯শে এপ্রিল ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২০শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
308
3286592
Total Visitors