1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
“জো - কমলা প্রশাসন” কেমন প্রভাব পড়বে এশিয়ায় : বিদ্যুৎ। - চ্যানেল দুর্জয়
রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৫২ পূর্বাহ্ন

“জো – কমলা প্রশাসন” কেমন প্রভাব পড়বে এশিয়ায় : বিদ্যুৎ।

  • প্রকাশিত : রবিবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২০

সম্পাদকীয়।। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনের উত্তাপ এখনো গোটা পৃথিবী জুড়ে। ২০১৬ সালের নির্বাচনে অনেকটা গোটা পৃথিবীকে বিস্মিত করে আর্বিভূত হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাজনৈতিক নৈপুণ্যতার খ্যাতি, অখ্যাতি যেটাই তার ললাটে জুটেছিল, তার চেয়েও তিনি ছিলেন আলোচিত। মার্কিন প্রশাসনের বড় বড় পদের বদলি,ছাটাই ও ওবামা প্রশাসনের রাজনীতির পরিবর্তন দৃশ্যমান ছিল প্রকট। যদিও ওমাবা প্রশাসনের মতো ট্রাম্প প্রশাসন কোনো যুদ্ধে জড়িত হয়নি, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় আমেরিকার প্রভাব বেড়েছিল।

সম্প্রতি নির্বাচনে ট্রাম্পের পরাজয় মর্মাহত করেছে আমেরিকার অনেক প্রভাবশালী মিত্রকে। জো বাইডেন তার দল সব সময় গনতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে খুবই সংবেদনশীল হিসেবে পরিচিত। সেক্ষেত্রে বিগত বছরগুলো সংগঠিত বিভিন্ন ঘটনাবলি বিশেষ ভারত সরকারের কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল,জনদ্রোহী নাগরিকত্ব সংশোধন বিল ইত্যাদি মাধ্যমে সেখানে গনতন্ত্র ও মানবাধিকার ব্যাপকভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে। সেখানে ট্রাম্প প্রশাসন বরাবরই ছিল নীরব। সেটা আগামীতে কীরুপ নিবে সেটাই জো বাইডেনের দল থেকেই জানা যাবে। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের আনুষ্ঠানিক বৈঠকের মধ্য দিয়ে  ২৭ অক্টোবর সই হয়েছে ভূ-স্থানিক সহযোগিতামূলক ‘বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট’ (বেকা)। এ চুক্তিটি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি প্রধান সামরিক চুক্তি। চুক্তিটি কতটুকু ফলপ্রসূ হবে সেটা নির্ভর করবে আমেরিকার নতুন প্রশাসনের উপর।

চীন – যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য যুদ্ধে চীনের চাইতে মার্কিন জনগণ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।সেক্ষেত্রে জনগণের ভোটে নির্বাচিত নতুন সরকার চীন – মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধের দামামার উপর প্রশান্তির বার্তা বইতে পারে। যার ফলে চীন- মার্কিন সম্পর্ক কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হতে পারে এবং এর প্রভাব পড়বে আরেক পারমানবিক  শক্তিধর রাষ্ট্র পাকিস্তানের উপর। আফগানিস্তান ও পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনা আরও প্রশমিত হতে পারে বলে আশা করা যায়। ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত আফগান সরকার এখন অনেক বেশিই ভঙ্গুর ও নতজানু। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত মার্কিন ও তালেবান চুক্তিই তার জোরালো প্রমাণ।  এখন ভারত ও আফগানিস্তানের উপর গুটি চালাতে গেলে অধিকতর সতর্ক হতে হবে মার্কিনদের। প্রয়োজনে তাদের তালেবানদেরকে স্বীকৃতি দিতে হতে পারে। যেটা পাকিস্তানের জন্য কৌশলগত প্রভাব বৃদ্ধি পেতে পারে।

 বর্ণবাদ, অতি মার্কিনি প্রীতি,অভিবাসন বিরোধী সিদ্ধান্ত, সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ, করোনা মহামারীতে খাম খেয়ালি আচরণ ট্রাম্পকে পরাজয়ের পথে ঠেলে দিয়েছে। অপর দিকে ট্রাম্প ইরাক ও আফগানিস্তান থেকে সৈন্য সরিয়েছেন। সিরিয়া থেকেও সরে আসার পিছনে ছিল ট্রাম্প প্রশাসন। মিয়ানমারের আগ্রাসনবাদী সেনাবাহিনী কতৃক সেদেশের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর জাতিগত নিধনের বিরুদ্ধে ট্রাম্প ছিল সরব।এক্ষেত্রে নতুন সরকার ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতে পারে।
জাপান, ফিলিপাইন, ভারত, ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশসমূহ ট্রাম্পকে ভালো ভাবেই গ্রহন করেছিল। এখন তারা জে বাইডেনকে নিয়ে চিন্তিত। বাইডেন যদি চীনের সাথে সমঝোতা করে রাশিয়াকে কাছে টানার চেষ্টা চালায় সেক্ষেত্রে বিশ্বরাজনীতি হয়ে পড়বে ভারসাম্যহীন। আবার পাকিস্তান, শ্রীলংকা, মালদ্বীপ, নেপাল প্রভৃতি  দেশে চীনা বিনিয়োগ আরও বৃদ্ধির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও রাশিয়ার প্রভাব কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। এমনকি ভবিষ্যতে চীন- ইরান গোপন বাণিজ্য নীতি আরও অবাধ হতে পারে।যার প্রভাব পড়বে ইসরায়েল, সৌদি আরব এবং তার মিত্রদের উপর। মধ্যপ্রাচ্য ট্রাম্প প্রশাসনের সময় অনেকটা শান্তিতে ছিল। ওবামা প্রশাসন ইরাক,সিরিয়া,লিবিয়া,ইয়েমেনে অস্তিত্ব সংকট তৈরী করেছিলেন এবং লাখ লাখ নিরাপদ মানুষকে হত্যা করে ছিল, সেই পথ আবার উন্মোচিত হতে পারে । ট্রাম্প ইরান, উত্তর কোরিয়াকে যথেষ্ট হুমকি ধামকি দিলেও সরাসরি কোনো যুদ্ধের পথে পা মাড়ায় নি। ট্রাম্পই একমাত্র প্রেসিডেন্ট যিনি ক্ষমতায় এসেছিলেন কেবল আমেরিকানদের স্বার্থ সম্মুন্নত রাখার আহবান নিয়ে।

এখন বিশ্ব নতুন প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে নতুন কিছু প্রত্যাশা করছে। যেসব মুসলিম দেশগুলোর উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ছিল তা প্রত্যাহার হতে পারে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে পুনরায় ফিরে আসতে পারে ,যেটা এশিয়ার জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য সুসংবাদ হতে পারে। ইরানের সাথে যে ছয়জাতি সমঝোতা চুক্তি ছিল। নতুন প্রেসিডেন্ট  পুনরায় সেই চুক্তিতে ফিরে আসতে পারে। চীনের সাথে সম্পর্ক অনেকটা স্বাভাবিক হতে পারে কিন্তু রাশিয়ার সাথে সম্পর্কে ভাটা পড়তে পারে। তবে ফিলিস্তিন ইস্যুতে ইসরায়েলকে অখুশি করে কোনে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত নাও আসতে পারে। যদিও সেখানে মানবাধিকার প্রতিনিয়ত লঙ্ঘিত হচ্ছে। সৌদি রাজ পরিবারের উপর একটি বড় ধাক্কা হলো ট্রাম্পের পরাজয়।  এক্ষেত্রে মোহাম্মদ বিন সালমান কিছুটা হলেও বাধার সম্মুখীন হবে। জামাল খাসেগি হত্যাকান্ড  ও রাজপরিবারের সদস্যদের জিম্মির মতো কর্মকান্ডে ভীতি সঞ্চার হবে। ইরাক ও সিরিয়ায় পুরনো পরাজিত বিদ্রোহীরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। শিয়া ও হুতিদের দমনে সৌদি ও তার মিত্রদের বেশ বেগ পেতে হবে। কারণ ইতোমধ্যে মুসলিম দেশগুলো হতে তারা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে বাহুল্যাংশে। ভারতের সাথে বাইডেন প্রশাসনের সম্পর্ক কীরুপ হবে সেটা মূলত নির্ভর করছে কমলা হ্যারিসের উপর। যদিও বিজেপি সরকারের সাথে কমলা হ্যারিসের সম্পর্ক খুবই তিক্ত। মার্কিন- ভারত স্বাক্ষরিত  ‘বেকা’ নামক সামরিক চুক্তিটি সহজেই বাতিল হচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট পরিবর্তন হলেও কোনো সরকার সহজে পূর্ববর্তী স্বাক্ষরিত চুক্তি সহজে বাতিল করে থাকে না। যতটুকু সম্ভব স্বাভাবিক রাখার দিকেই অধিকতর প্রাধন্য দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ তাদের জিএসপি সুবিধা ফিরে পেতে পারে। অভিবাসন সমস্যা থেকে বাঙালী মার্কিন প্রবাসীরা মুক্তি পেতে পারে যেটা রেমিট্যান্স প্রাপ্তির ক্রমধারা আরো ত্বরান্বিত করবে। চীন – মার্কিন  সম্পর্ক রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের মূল ফ্যাক্টর হয়ে দাড়াবে। 

 সার্বিকভাবে বলা যায় মার্কিনিদের  দক্ষিণ এশিয়াভিত্তিক পররাষ্ট্র নীতি কি হবে সেটা মূলত নির্ভর করছে সদ্য নির্বাচিত মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের উপর। মার্কিন প্রেসিডেন্ট পরিবর্তনের সাথে সাথে এশিয়ার রাজনীতির দলীয় নীতিগত পরিবর্তন ছাড়া অন্য কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • রবিবার (সকাল ৭:৫২)
  • ১৯শে মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১১ই জিলকদ ১৪৪৫ হিজরি
  • ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
133
3836775
Total Visitors