স্টাফ রিপোর্টার।। ডা. শামারুখ মেহজাবীন শামা হত্যামামলার পুনঃতদন্তের দাবিতে যশোরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সম্মিলিত নাগরিক সমাজ যশোরের উদ্যোগে ১৫ নভেম্বর ২০২০ সকালে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন শেষে দাবি বাস্তবায়ন তরান্বিত করতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবুল লাইছ।
মানববন্ধনে মেয়ের শাশুড়ি, শ্বশুর ও স্বামী পরিকল্পিতভাবে ডা. শামারুখ মেহজাবীন শামাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে;
এমন দাবি জানিয়ে আবারও এ হত্যামামলার পুনঃতদন্ত দাবি করা হয় মানববন্ধন থেকে।
এ কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সভাপতি মাস্টার নুর জালাল, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সাজেদ রহমান বকুল, উদীচী যশোরের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান খান বিপ্লব, নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সাধারণ সম্পাদক শেখ মাসুদুর রহমান মিঠু, সুজন যশোরের সাধারণ সম্পাদক আবুল সাইদ মো. আতিকুর রহমান, রোটারিয়ান শরিফুল আলম বুলু, আইইডিবি যশোরের অর্থ সম্পাদক জাহিদুর রহমান, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মমতাজ পারভীন, আইইডিবি পরিবার কল্যাণ পরিষদের সদস্য নাছিমা বানু, ছাত্রনেতা গালিব হাসান রাহাত, অনিক মাহমুদ প্রমুখ।
কর্মসূচিতে ডা. শামারুখ মেহজাবীন শামার বাবা ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংঠনের সদস্যবৃন্দ।
সমাপনী বক্তব্য দেনে সম্মিলিত সাগরিক সমাজ যশোরের আহ্বায়ক শহিদুল হক বাদল।
সঞ্চালনা করেন আইডিবি যশোরের সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমীন।
বক্তারা বলেন, শুরু থেকে ডা. শামারুখ মেহজাবীন শামা হত্যামামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য খান টিপু সুলতান তৎপর ছিলেন। তারা তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকদের প্রভাবিত করেছেন।
তাই মামলাটি পুনঃতদন্তের মাধ্যমে বিচার কাজ করার দাবি জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডের ১৪ নম্বর বাসা থেকে হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক শামারুখের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম মেয়ের শাশুড়ি ডা. জেসমিন আরা, শ্বশুর আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সাংসদ খান টিপু সুলতান (প্রয়াত) ও স্বামী হুমায়ুন সুলতান সাদাবের নামের মামলা করেন। রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী হুমায়ুন সাদাব গ্রেফতারও হন। পরে জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
প্রসংগত, ডা. শামারুখ মাহজাবিন শামা হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজের এইচ-এফ-৯ ব্যাচের ছাত্রী ছিলেন। শামা হলি ফ্যামিলি মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন।
ডা. শামারুখ মেহজাবীন শামা তার শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে ধানমন্ডি ৬ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বরে কেয়ারি তাজ নামের বহুতল ভবনের তিনতলায় থাকতেন।
শামার বাবা নুরুল ইসলাম যশোরের ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী প্রকৌশলী ছিলেন। ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম যশোর শহরের বিমানবন্দর সড়কের স্থায়ী বাসিন্দা। দুই ভাই- বোনের মধ্যে শামা ছোট ছিলেন।
২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর শামরুখ মাহজাবিন শামা আত্মহত্যা করেন বলে শ্বশুর বাড়ি থেকে দাবি করা হলেও তার অভিভাবক ও বন্ধুমহল একে হত্যা বলেই দাবি করছেন।