মোঃ ইমরান, বটিয়াঘাটা,প্রতিনিধি:
পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৩০টি পরিবার। বটিয়াঘাটা উপজেলা বারোআড়িয়া বাজার সংলগ্ন ত্রিশটি পরিবার পানিবন্দি হয়ে চরম মানবেতর জীবনযাপন করছে। চরম ঝুঁকিপূর্ণ মধ্যেদিয়ে প্রতিদিন ছেলেমেয়ে পরিজন নিয়ে দূষিত পানির মধ্যে দিয়ে পার হতে হচ্ছে তাদের। পানিবন্দি পরিবারের মধ্যে রয়েছে শেখ বাড়ি,গাজি বাড়ি,মোল্লাবাড়ি। ৩০ টি পরিবারের শতাধিক লোকের বসবাস এখানে। এখানে রয়েছে একটি পারিবারিক কবরস্থান। সেটাও পানিতে তলানো। মহাসিন গাজী খোকন বলেন,আমাদের পরিবারের কেউ মারা গেলে দাপন করার মত কোন জায়গা নাই। কবরস্থানটি হাঁটুপানিতে তোলানো। স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী গফফার গাজী বলেন,তার মাতা মারা গেলে উক্ত কবরস্থানে মাটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। পরে কলাগাছের ভেলা তৈরি করে কবরের ভিতর বসিয়ে তার উপর মাটি দিয়ে তাকে দাফন করা হয়।
পাশেই রয়েছে একটি পুলিশ ফাঁড়ি। পুলিশ ফাঁড়ির চার পাশে রয়েছে পানি আর পানি। ফলে পুলিশ ক্যাম্পটি রয়েছে চরম ঝুঁকিপূর্ণর মধ্যে। এব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে জানান হলেও তাতে কোন কাজ হচ্ছেনা বলে জানায় ভুক্তভোগীরা। সংশ্লিষ্ট এলাকার পানিবন্দি ভুক্তভোগীরা বলছে এলাকার কিছু স্বার্থন্বেষী মহলের কারণেই আজ আমরা এতগুলো পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। সামান্য বৃষ্টি হলেই এখানে হাঁটু পানি জমে যায়। জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে আমাদের বাড়িঘর, পুকুর সবই এখন পানিতে তলানো রয়েছে। দীর্ঘ তিন মাস অতিবাহিত হলেও পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা নেই এখানে। ফলে আমাদের প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। পানিবন্দি হওয়া এক স্কুল ছাত্রী রিয়া খাতুন জানায়, প্রতিদিন এই দূষিত পানির মধ্যে দিয়ে চরম ঝুঁকিপূর্ণর ভিতর হাটু পানি পেরিয়ে আমাদের স্কুলে যেতে হয়। এলাকার জনৈক মহিলা কুলসুম,জ্যোৎস্না বেগম সহ আরো অনেকে বলেন, প্রতিদিন হাটুপানির মধ্যে দিয়ে খাবার পানি আনতে হয়। এই দুষিত পানির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বিষধর সাপসহ পোকামাকড়। স্থানীয় শওকত শেখ বলেন,পানি নিস্কাশনের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে বারোআড়িয়া বাজারের পূর্বমাথা থেকে নদীর ওয়াপদা রাস্তা পযর্ন্ত,প্রায় ৫থেকে ৭মিটার জায়গায় ভেড়িবাধ দেওয়া জরুরি দরকার। তাহলে জোয়ারের পানি এলাকায় ঢুকতে পারবেনা। ৪নং সুরখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আব্দুল হাদি সরদার বলেন,বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হবে। সূত্রে প্রকাশ,গত আমপান ঝড়ের পর থেকে ৩০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। স্থানীয় কিছু ব্যক্তিদের লীজঘের রয়েছে সেখানে। পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ হচ্ছে ঐসকল লীজঘের দিয়ে। তারা বলছে উক্ত ঘেরের মালিকরা পানি সরবরাহের সম্মতি না থাকায় এলাকার গোটা পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী বারোআড়িয়া বাজারটি রয়েছে ভদ্রানদীর আক্রোশের শিকার। প্রতিদিন গিলে খাচ্ছে রাক্ষসী এই “ভদ্রানদী” বাজারসহ গ্রামটি। শুধু তাই নয়,জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পেলে,জোয়ারের সময় বাজারে রাস্তাঘাট ও বিভিন্ন গলি হাটু পানিতে তলিয়ে যায়। কোথাও কোথাও বাড়িঘরের ভিতর পানি উঠে যায়। সরকার প্রতিবছর এই বাজার থেকে লাক্ষ লাক্ষ টাকার রাজস্ব আদায় করে। অথচ সরকারের কোন নজর নেই বাজারের প্রতি। এ ব্যাপারে এলাকাবাসি জরুরি ভিত্তিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি আকর্শন করছেন।