উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধিঃ
বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৯৬তম জন্মবার্ষিক (১০ আগস্ট)। এ উপলক্ষে নড়াইলের জেলা প্রশাসন ও এসএম সুলতান ফাউন্ডেশন দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমাদের নড়াইল জেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল রায় জানান, কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে শিল্পীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কোরআন খানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা। বরেণ্য এ শিল্পী ১৯২৪ সালের এই দিনে নড়াইলের চিত্রা নদীর পাড়ে অবস্থিত মাছিমদিয়া গ্রামে বাবা মেছের আলী ও মা মাজু বিবির ঘরে জন্মগ্রহণ করেন।
বাঙালি জাতিসত্তার গভীরতম অন্তর ভূমিতে সহস্র বছর ধরে যে অমিত শক্তি সুুপ্ত ছিল তারই নান্দনিক শৈল্পিক প্রকাশের অন্যতম সূর্যসারথি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান। ১৯২৪ সালের ১০ আগস্ট তৎকালিন মহকুমা শহর নড়াইলের চিত্রা নদীর পাশে সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা, পাখির কলকাকলীতে মুখরিত মাছিমদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন শিল্পী এসএম সুলতান। তার পিতা মোঃ মেছের আলি ও মাতা মোছাঃ মাজু বিবি। চেহারার সঙ্গে মিলিয়ে পিতা-মাতা আদর করে নাম রেখেছিলেন লাল মিয়া। চিত্রশিল্পী এসএম সুলতানের ৭০ বছরের বোহেমিয়ান জীবনে তিনি তুলির আঁচড়ে দেশ, মাটি, মাটির গন্ধ আর ঘামে ভেজা মেহনতী মানুষের সাথে নিজেকে একাকার করে সৃষ্টি করেছেন “পাট কাটা”, “ধানকাটা”, “ ধান ঝাড়া”, “ধান ভানা”, “ জলকে চলা”, “ চর দখল”, “গ্রামের খাল”, “গ্রামের দুপুর”, “নদী পারা পার”, “ধান মাড়াই”, “জমি কর্ষনে যাত্রা”, “মাছ ধরা”, “নদীর ঘাটে”, “গুন টানা”, “ফসল কাটার ক্ষনে” , “শরতের গ্রামীন জীবন”, “শাপলা তোলা”র মত বিশ্ব বিখ্যাত সব ছবি।
১৯৫০ সালে ইউরোপ সফরের সময় যৌথ প্রদর্শনীতে তার ছবি সমকালীন বিশ্ববিখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসো, ডুফি, সালভেদর দালি, পল ক্লী, কনেট, মাতিসের ছবির সঙ্গে প্রদর্শিত হয়। সুলতানই একমাত্র এশিয়ান শিল্পী যার ছবি এসব শিল্পীদের ছবির সঙ্গে একত্রে প্রদর্শিত হয়েছিল। কালোত্তীর্ন এই শিল্পী ১৯৮২ সালে একুশে পদক, ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশ সরকারের রেসিডেন্সিয়াল আর্টিস্ট হিসেবে স্বীকৃতি, ১৯৮৬ সালে চারুশিল্পী সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯৩ সালে রাষ্টীয় ভাবে স্বাধীনতা পদক পেয়েছিলেন। ১৯৯৪ সালের ১০ অক্টোবর যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।