উজ্জ্বল রায় (নিজস্ব প্রতিবেদক) নড়াইলঃ
আদ্যাশক্তি মহামায়া দক্ষরাজের কন্যা সতী রূপে আবির্ভূতা হন এবং তিনি শ্মশানচারী ভিক্ষুক মহাদেবকে পতী রূপে গ্রহণ করেন। কিন্তু দক্ষরাজ ছিলেন শিব বিদ্বেষী। তিনি কিছুতেই শিবকে জামাতা বলে মানতে নারাজ। তাই তিনি শিবকে অপমান করতে একটি বৃহৎ যজ্ঞের আয়োজন করেন। যেখানে শিব ভিন্ন সমস্ত দেবতা, যক্ষ, গন্ধর্ব, কিন্নর, ঋষি, মুনি সবাই আমন্ত্রিত থাকেন। কিন্তু দেবী সতী বিনা আমন্ত্রণে এই যজ্ঞে উপস্থিত হলে দক্ষরাজ শিবনিন্দা করতে থাকেন। পতী নিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেবী সতী সেই যজ্ঞাগ্নি তে প্রাণ বিসর্জন দেন এবং শিবহীন যজ্ঞের অবস্থান ঘটান।
শ্রীশ্রী মা যে স্বয়ং দেবী সতী কয়েকটি ঘটনায় তার আভাস পাওয়া যায়।
একবার বাগবাজারে বলরাম ভবনে ‘দক্ষযজ্ঞ’ অভিনয় হচ্ছে। উপস্থিত আছেন শ্রীশ্রী মা এবং তাঁর সাথে আছেন গোলাপ মা, যোগিন মা, গৌরী মা প্রমুখেরা। দক্ষযজ্ঞে দক্ষের অন্যান্য কন্যারা চলেছেন, তাই দেখে সতী মর্মাহত। এই দৃশ্য দেখে শ্রীশ্রী মা হঠাৎ বলে ওঠেন__ “হায় রে, দিদিরা সব যে যার মতো চলে যাচ্ছে, আমার আর যাওয়া হবে না… “। পাশে উপবিষ্টা গৌরী মা বলে উঠলেন , “কি মা ধরা দিয়ে ফেললেন তো? “….
আরও একটি ঘটনায় শ্রীশ্রী মা স্বয়ং স্বীকার করেছেন তিনি শিবানী সতী। জয়রামবাটী তে থাকাকালীন যখন একবার মায়ের মা শ্যামাসুন্দরী দেবী বলতে লাগলেন পাগল জামাইয়ের (ঠাকুরের) হাতে পড়ে মেয়ের সংসারে সুখভোগ হল না। তাই শুনে পতীনিন্দায় অধীরা শ্রী মা উগ্র কন্ঠে বলেছিলেন __ “বার বার পাগল পাগল করোনি। একবার পতী নিন্দায় দেহ ছেড়েছি, আবার কি তুমি তাই দেখতে চাও? “
শ্রীশ্রী মায়ের পার্থিব শরীর দাহ হয়ে যাওয়ার পর বেলুড় মঠে শিবানন্দজী মহারাজ (মহাপুরুষ মহারাজ, শ্রীরামকৃষ্ণ পার্ষদ, বেলুড় মঠের দ্বিতীয় সভাপতি) উপস্থিত সাধু ভক্তদের বলেছিলেন– “সতীর দেহের এক একটা খন্ড বুকে নিয়ে পৃথিবীতে ৫১ সতীপীঠ গড়ে উঠল। সেই সতীর সমগ্র শরীরটা আজ বেলুড় মঠের মাটিতে মিশে গেল। তাহলেই ভেবে দেখ এই বেলুড় মঠ কত বড় তীর্থ।
যেখানে মায়ের নাম সেখানে আনন্দধাম ।