1. admin@channeldurjoy.com : admin : Salahuddin Sagor
  2. news.channeldurjoy@gmail.com : Editor :
সংকীর্ণতার স্থান নেই : মামুন হাসান বিদ্যুৎ। - চ্যানেল দুর্জয়
শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৩:৪৩ পূর্বাহ্ন

সংকীর্ণতার স্থান নেই : মামুন হাসান বিদ্যুৎ।

  • প্রকাশিত : বুধবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২০

সম্পাদকীয়।। বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় মানুষে মানুষে বৈষম্য, ভোগবাদ, পরিবেশ বিনষ্টকারী, প্রকৃতি বিরুদ্ধ এক অসুখের নাম, কোভিড-১৯। কভিড – ১৯ ভাইরাসটি পুরো বিশ্বকে বদলে ফেলছে। এ যেন সর্বব্যাপী তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে দামামা বেজে ওঠেছে। পুঁজিবাদের সাথে প্রকৃতির যুদ্ধ।  করোনা নামক মরনঘাতী প্রাকৃতিক হাতিয়ার পৃথিবীর যে কোন জায়গায় যেকোন ঘরেই হামলে পড়তে পারে। উন্নত চিকিৎসাশাস্ত্র,আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জীবাণুটির বিরুদ্ধে কতখানি অসহায় সেটা গোটা পৃথিবীর মানুষ অনুধাবন করছে।
পুঁজিবাদের অবৈধ সন্তান হচ্ছে করোনা ভাইরাস। পুঁজিবাদের কাছে ধর্ষিত পৃথিবী আগ্রাসন শুরু করেছে। বিশ্ব পুঁজিবাদ হঠাৎ ভয়ানক ধাক্কা খেল এক অজানা, অদৃশ্য কিন্তু সর্বত্র বিরাজমান ক্ষুদ্র ভাইরাস নভেল করোনা কভিড-১৯-এর কাছে। প্রায় অজানা করোনাভাইরাস সারা পৃথিবীকে দাবড়িয়ে তুলোধুনো করেছে, ধনী, দরিদ্র, সৎ, দুর্জন, দুর্নীতিপরায়ণ রাজনীতিবিদ, আমলা, শিক্ষক, কৃষক জনতাকে। পুঁজিবাদী বিশ্বের সুবিধাভেগীরা এবং তাদের প্রভাবে পড়ে  সুবিধাবঞ্চিতরাও। করোনা নামক প্রাকৃতিক হাতিয়ারের আগ্রাসনে সেসব ধারণা ভূলুণ্ঠিত হওয়ার দশা। করোনাকালে এটা আজ স্পষ্ট পুঁজিবাদ বিশেষ করে তার গৃহীত নয়া উদারতাবাদী নীতি আজ চরম সংকটের মুখে। পুজিবাদের সমর্থক বিশ্ব বিখ্যাত অর্থনীতিবিদরাও আজ অকপটে এ কথা স্বীকার করছেন।

দেশে ধনী-গরিবের বৈষম্য বাড়ছে। ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে আর দরিদ্ররা  দরিদ্র সীমার নিচে চলে যাচ্ছে। এটি সামাজিক সমস্যা। অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, করোনায় বাংলাদেশের ১০ কোটি ২২ লাখ মানুষের আয় কমে গেছে। আর পরিবার হিসাবে আয় কমেছে ৭৪ শতাংশ পরিবারের। খবরে পড়ছি, করোনায় বাংলাদেশে আরও তিন কোটি মানুষ নতুন করে গরিব হবে। হতদরিদ্র থেকে মধ্যবিত্ত পর্যন্ত কোটি কোটি মানুষ চোখে অন্ধকার দেখছে। বেকার সমস্যার কোনো আশানুরূপ সমাধান হয়নি। মহামারির কারণে বেকার সমস্যা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেশে সার্বিকভাবে ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়ছে। দেশে সড়ক দুর্ঘটনা, গুম, হত্যাকান্ড, ছিনতাই, গণধর্ষণ, শিশু ধর্ষণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাহীনতা বেড়েছে। আমাদের শিক্ষাক্ষেত্রটা গড়ে উঠেছে বৈষম্যমূলকভাবে। ছাত্রছাত্রীরা এখন স্কুল-কলেজে যেতে পারছে না, ফলে কিছু সামাজিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তারা বাড়িতেই বসে ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত   হয়ে পড়ছে।  পাশাপাশি বর্তমানে কিশোর অপরাধও কিন্তু আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। করোনার মতো অদৃশ্য শত্রুর সাথে আলিঙ্গনের ভীতির মঝেও অনেকে লুটেছে, লুটছে।  স্বাস্থ্য খাতের করুণ হাল। দায়িত্বপ্রাপ্তরাই ডুবে গেছে দুর্নীতিতে। বর্তমানে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির উন্নতি সাধারণের জীবনযাপনের ওপর মোটেও প্রভাব ফেলতে পারছে না। আমাদের সাধারণ নিম্নবিত্ত দরিদ্র মানুষগুলো সমস্ত প্যাকেজ, সমস্ত সুবিধার বাইরে চলে গেছে। দরিদ্র ও অতিদরিদ্রদের জন্য সরকারের দেওয়া খাদ্য এবং নগদ সহায়তা সঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না।
এতসব নেতিবাচক আশঙ্কার মধ্যেও বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষের কর্মচাঞ্চল্যের ওপর ভরসা রেখে আশা করা যায়, করোনাবিধ্বস্ত অর্থনীতিতে একটা বড় ভূমিকা রাখতে পারে আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজারের বিশালতা। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কৌশলে কৃষিই নেতৃত্ব দেবে। আগামীতে কৃষির এ নেতৃত্ব ধরে রাখতে হলে আমাদের কৃষি প্রক্রিয়াকরণ জোরদার করা; কৃষিতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কৃষকের আয় বাড়ানোর কাজে নীতি মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। তবে রাজস্ব আয়, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান এখনও নেতিবাচক ধারায় রয়েছে। সে কারণে অর্থনীতি স্বাভাবিক গতিতে ফিরতে আরও সময় লাগবে। এ জন্য করোনা মোকাবিলায় ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোয় নীতি সহায়তাসহ প্রণোদনা প্যাকেজ দ্রুত বাস্তবায়ন করা দরকার।সরকার বেশ কিছু ঋণ সুবিধা দিয়েছে। তবে ঋণ কিন্তু সর্বগ্রাসী নয়। ঋণের সঙ্গে অন্যবিধ সহযোগিতা ও টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রয়োজন। এ জন্য বিভিন্ন সেক্টরের জন্য সংস্থা চিহ্নিত করা প্রয়োজন এবং উদ্যোক্তাদের সঙ্গে লিঙ্কেজ সৃষ্টির ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। যতক্ষণ পর্যন্ত জাতীয় আয়ের সমতাভিত্তিক বণ্টন নিশ্চিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই সমস্যা আমাদের তাড়িয়ে বেড়াবে।
করোনা পরবর্তী  বিশ্ব পুঁজিবাদ নিজেকে রক্ষার জন্য মরিয়া হয়ে উঠবে, এমনকি সামরিক সংঘর্ষকেও উড়িয়ে দেওয়া যায়না। ভূ-রাজনীতি নতুন মেরুকরণের দোরগোড়ায়। এটাকে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি বললে বাড়িয়ে বলা হবে না।কর্পোরেট পুঁজি কে বাঁচাতে মূলতঃ প্রণোদনা ঘোষিত হচ্ছে। তাতে সাধারণ মানুষের হিস্যা সামান্য লোক দেখানো। এই বাস্তবতায় আক্রান্ত মানুষের পাশে ঐক্যবদ্ধভাবে এবং দৃঢ়ভাবে দাঁড়াতে হবে। নিজেদের পার্থক্যকে মেনে নিয়েই ঐক্যের পথ তৈরি করতে হবে। গত শতাব্দি অনেক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে এটাই শিখিয়েছে, সংকীর্ণতার স্থান নেই।

এই বিভাগের আরো সংবাদ

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (রাত ৩:৪৩)
  • ৪ঠা মে ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ২৫শে শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরি
  • ২১শে বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)

এই মুহুর্তে সরাসরি সংযুক্ত আছেন

Live visitors
229
3391722
Total Visitors