নিজস্ব প্রতিবেদক :যশোর মাধ্যমিক ও উচ্ছ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডে সিবিএ নির্বাচনকে ঘিরে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। তাছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরে কর্মরত পরিচ্ছন্ন কর্মীকে শো’কজ ও অতঃপর সাময়িক বরখাস্ত করার ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বোর্ডের কর্মচারীদের আগামী ১৬ নভেম্বর সোমবার যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি ( সিবিএ) নির্বাচনে একটি পক্ষের সুবিধার্থে পরিচ্ছন্ন কর্মীর বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। তাছাড়া,পরিচ্ছন্ন কর্মীকে স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করার হুমকী ধামকীসহ নানা কৌশল হিসেবে খোদ কর্র্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আসন্ন সিবিএ নির্বাচনের পূর্বে ঝিঁকে শাস্তি দিয়ে অন্যান্যদের শিক্ষা দেয়ার কৌশল করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলেছেন যশোর শিক্ষাবোর্ড এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন ( রেজিÑ খুঃ ২১২৭ (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান। আর মাত্র তিনদিন পর কর্মচারীদের নির্বাচন। অথচ নির্বাচনে কোন আমেজ এখানে বিরাজমান নেই।
বোর্ডের সূত্রগুলো বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর সকালে বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মোল্যা আমির হোসেন তার বাস ভবন থেকে সরাসরি প্রশাসনিক ভবন -১ নীচতলার গাড়ীর গ্যারেজে আসেন।
বোর্ডের প্রধান কর্তা হয়ে সরাসরি গাড়ির গ্যারেজে আসা উদ্দেশ্য মূলক দাবি করে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিকাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারী জানান, বোর্ডে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দেখভাল করার জন্য সচিব থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তর রয়েছে। তারা দেখে চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ তুলে ধরবেন। তারপর চেয়ারম্যান বিষয়গুলো তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। বোর্ডের ইতিহাসে এমন ভাবে চলমান হয়ে আসছে কার্যক্রম। অথচ বোর্ডের প্রধান কর্তা হয়ে সরাসরি গাড়ীর গ্যারেজে যেয়ে সেখানে বস্তা আগলা করে ঢেকে রাখা ময়লা আর্বজনা পরিস্কার করা হয়নি তার কারণ পরিচ্ছন্ন কর্মী শ্রীতন কুমার দাশের কাছে জানতে চান। বিষয়টি উদ্দেশ্য মূলক ও পরিকল্পিত নয় কি? এরপর তিনি উক্ত পরিচ্ছন্ন কর্মীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরে সচিবের মাধ্যমে ১১ অক্টোবর এক স্মারকে পরিচ্ছন্ন কর্মী শ্রীতন কুমার দাশকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিতে বলেন। নোটিশ পাওয়ার পর শ্রীতন কুমার দাশ কারণ দর্শানোর নোটিশের সমুচিন জবাব দিয়ে ঘটনার ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করার পাশাপাশি মার্জনা করাসহ ভবিষ্যতে এ ধরনের ত্রুটি হবে না বলে উল্লেখ করেন। তারপরও দায়িত্ব অবহেলা, বোর্ডের চেয়ারম্যানের সাথে সরকারি শৃঙ্খলা পরিপন্থি কার্যকমের তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য চেয়ারম্যানের নিদের্শে সচিব এ এম এইচ আলী আর রেজা তিন সদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সূত্রগুলো বলেছে, গঠিত তদন্ত কমিটির আহবায়ক বোর্ডের উপ-সচিব (প্রশাসন) আব্দুস সালাম আজাদ, সদস্য সচিব-১ (প্রশাসন) মুজিবুল হক ও সদস্য সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (অনুমোদন) এস এম আনিছুর রহমান। তদন্ত কমিটির মধ্যে সদস্য সচিব-১ (প্রশাসন ) মুজিবুল হক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোরের শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়ন (রেজিঃ নং-খুলনা-২১২১) গত কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। কমিটির সদস্য এস এম আনিছুর রহমান ছিলেন ওই কমিটির সক্রিয় সদস্য ও উপদেষ্টা। চেয়ারম্যানের দৃষ্টিতে পরিচ্ছন্ন কর্মী শ্রীতন কুমার দাশ যশোর শিক্ষাবোর্ড এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের একনিষ্ট সমর্থক ও কর্মী। যার কারনে গঠিত তদন্ত কমিটি হওয়ার সাথে সাথে এসএম আনিছুর রহমান মন্তব্য করেন এর তদন্তের প্রয়োজন কিসের সরাসরি বরখাস্ত করার পরামর্শ দেন কমিটির আহবায়ককে এমন কথা বোর্ডের অনেকের মুখে মুখে। বোর্ড সূত্রগুলো বলেছে, আগামী ১৬ নভেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড যশোরে যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি (সিবিএ) নির্ধারণী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ২৫ অক্টোবর নির্বাচনী তফসীল ঘোষনা করেছে রেজিষ্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন খুলনা। নির্বাচনী তফসীলে যশোর শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়ন রেজি নং ২১২১ নির্বাচনী প্রতীক দোয়াত-কলম ও যশোর শিক্ষাবোর্ড এপ্লয়ীজ ইউনিয়ন রেজি নং ২১২৭ নির্বাচনী প্রতীক হরিণ বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। বোর্ডে কর্মচারীদের মধ্যে ৯৮ জন ভোটার চুড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনের যে আমেজ ইতিপূর্বে হয়েছে তেমন কোন তাপ ও উৎসব মুখর পরিবেশ দেখা যাচ্ছে না। যশোর বোর্ডে শক্তিশালী কর্মচারীদের সংগঠনের নিরুতাপ নির্বাচন দেখে সকলে হতবাক। এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সভাপতি পদে আবুল কালাম আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে আসাদুজ্জামান ও যশোর শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নে সভাপতি পদে মাকসুদ আল হাবিব ও সাধারণ সম্পাদক পদে আব্দুল মান্নানের কথা শোনা গেছে। এমপ্লীয়জ ইউনিয়নের ও বর্তমানে বোর্ডের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান অভিযোগ করেন, বোর্ডের অনেক কর্মচারীকে খোদ বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তা নানাভাবে হয়রানী ও প্রলোভন দেখাচ্ছে যশোর শিক্ষাবোর্ড কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষে সমর্থন দিতে। বর্তমানে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে যে কোন সময় অপ্রীতিকর ঘটনা তৈরী হতে পারে নির্বাচনকে ঘিরে। তাই অবিলম্বে বোর্ডের সৃষ্ট পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অধিকাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।