শেরপুর প্রতিনিধি।।পাকা বাড়ি পেয়ে এভাবেই নিজের অনুভূতির কথা বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গান্ধীগাঁও গ্রামের সেই দানবীর ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন (৮০)। যিনি গত ২১ এপ্রিল মঙ্গলবার ঝিনাইগাতীর ইউএনওর করোনা তহবিলে তার সারাজীবনের সঞ্চয় ১০ হাজার টাকা দান করেন। ওই গ্রামের মৃত ইয়ার উদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিনের দানের এ ঘটনা সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে।
৮০ বছর বয়স অইলো। আইজ পর্যন্ত পাক্কা গরে থাহি নাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে পাক্কা ঘর কইরা দিতাছে। স্বপ্নেও ভাবি নাই আমার মত ভিখারি দালান ঘরে থাকমু। খুব ভাল লাগতাছে। আল্লাহ মাবুদ শেখ হাসিনারে বাঁচায়া রাখুক, সুখি করুক। আর দেশরে করুনামুক্ত করুক । এইডাই আমার চাওয়া। ”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে ওই ভিক্ষুকের মহানুভবতার কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শে শেরপুরের জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব ঘোষণা দেন নাজিম উদ্দিনকে পাকাঘর করে দেওয়ার পাশাপাশি যাবতীয় সরকারি সুযোগ সুবিধা দেওয়ার।
প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী গান্ধীগাঁও গ্রামে তৈরি হচ্ছে নাজিম উদ্দিনের জন্য বিশাল পাকাঘর। পাঁচ শতাংশ জমির উপর এ ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলছে পলেস্তারার কাজ। প্রত্যন্ত পল্লী গারো পাহাড়ের এ গ্রামে নাজিমকে দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ঘর দেখতে আশপাশের এলাকা থেকে প্রায় প্রতিদিন আসছে লোকজন।
পুরো বাড়িটি ইট দিয়ে গেঁথে তোলা হয়েছে। সেখানে থাকছে দু’টি কক্ষ। বাড়ির ওপরে রঙিন টিনের ছাউনি। দু’পাশে লোহার গ্রিল দিয়ে বারান্দা করা হয়েছে।
রয়েছে বড়সর রান্নাঘর, তারপাশে পাশে গোসলখানা ও শৌচাগার। সবমিলিয়ে একটি পরিপাটি বসতবাড়ি বৃদ্ধ নাজিম উদ্দিনের জন্য উপহার দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্র্রী শেখ হাসিনা।
স্থানীয় এমপি প্রকৌশলী ফজলুল হক বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সত্যিকার অর্থেই মানবতার মা। তিনি প্রত্যন্ত গ্রামের একজন ভিখারির দানকে গ্রহণ করে তাকে সম্মানিত করেছেন। দেশকে সম্মানিত করেছেন। এজন্যই শেখ হাসিনাকে জননেত্রী বলা হয়।
ঝিনাইগাতীর ইউএনও রুবেল মাহমুদ বলেন, ভিক্ষুক নাজিম উদ্দিন তিল তিল করে ঘর তৈরি করার জন্য অনেক কষ্টে ১০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছিলেন। সেই টাকা তিনি করোনা রোগীদের সেবায় সরকারি তহবিলে দান করেন।
এ ঘটনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে। ওই ভিক্ষুকের জন্য তিনি পাকা ঘর তৈরি করে দিচ্ছেন। আগামী জুলাই মাসে আমরা ওই ঘর তার কাছে হস্তান্তর করবো। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে প্রতিমাসে আমরা নাজিম উদ্দিনের জন্য খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছি।